॥চঞ্চল সরদার॥ রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা বর্তমানে বোরো ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে রাজবাড়ী চলতি মৌসুমে রাজবাড়ী জেলায় ১৪ হাজার ১২৯ হেষ্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ৭ হাজার, পাংশা উপজেলায় ১হাজার ৬৫০, কালুখালী উপজেলায় ১হাজার ৮৫০, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৯শত ও গোয়ালন্দ উপজেলায় ২হাজার ৭২৯ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৫হাজার ৮৭৭ মেট্রিক টন। যার মধ্যে রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ২৭ হাজার ৯০৯, পাংশা উপজেলায় ৬ হাজার ৫০৯, কালুখালী উপজেলায় ৭ হাজার ২৯৪, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৩ হাজার ৬১১ ও গোয়ালন্দ উপজেলায় ১০ হাজার ৫৫৪ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অপরদিকে বোরো ধানের বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭০৭ হেক্টর জমিতে। তবে লক্ষ্যাত্রা ছাড়িয়ে ৮০৩ হেক্টর জমিতে বীজতলা করা হয়েছে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের ডাউকি গ্রামের কৃষক রাজ্জাক মন্ডল বলেন, পুরোদমে বোরো ধান রোপনের কাজ শুরু হয়ে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের চারা রোপনে তেমন কোন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। আশা করছি এবার বাম্পার ফলন হবে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ বেশী হচ্ছে। শ্রমিকের মজুরী ও সারের দাম বেড়েছে।
একই গ্রামের কৃষক রহিম সরদার বলেন, এবার বীজতলা অনেক ভালো হয়েছে। কোন সমস্যায় পড়তে হয় নাই। এখন কৃষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ধানের চারা রোপন করতে। সবচেয়ে বেশী ২৯ ধানের আবাদ হচ্ছে। আমরা ভালো ফলনের আশা করছি। তিনিও খরচ বেশী হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান বলেন, পুরোদমে বোরো রোপনের কার্যক্রম চলছে। ইতিমধ্যে আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো রোপন সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, আগামী ২৫দিনের মধ্যে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাবে। কৃষকরা যাতে ভালো চারা উৎপাদন করতে পারে সে জন্য আমরা কৃষকদের আদর্শ বীজতলা করার পরামর্শ দিয়েছি। তারা আদর্শ বীজতলা করার মাধ্যমে ভালো সুস্থ-সবল চারা উৎপাদন করেছে। পাশাপাশি আমরা কৃষকদের শুকনো বীজতলা করার পরামর্শ দিয়েছি। সদর উপজেলার বেশ কিছু কৃষক শুকনো বীজতলা করার মাধ্যমে ভালো চারা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। শুকনো বীজতলা করার সুবিধা হলো সেখানে ভালো চারা পাওয়া যায়। শীতের প্রকোপে বীজের যে ক্ষতি হয় সেটাও হয় না। সেই কারণে কৃষকরা এ ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করছে। এ বছর আবহাওয়া বোরো ধানের অনুকূলেই রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন প্রকার সমস্যা দেখা দেয় নাই। আমন ধানের মতো বোরো ধানেরও বাম্পার ফলন হয়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা করছি।