॥আবুল হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের নিলু শেখের পাড়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে অর্ধশত বছরের পুরাতন ২টি কবর স্থানান্তরের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল ৪ঠা ফেব্রুয়ারী দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পাশাপাশি অবস্থিত স্বামী-স্ত্রীর কবর ২টি খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। সেখানে এলাকার কয়েকশ মানুষ ভীড় জমিয়েছে।
কবর স্থানান্তর করা জমশের আলী মৃধার ভাতিজা খোরশেদ আলী মৃধা(৬৫) জানান, ১৯৭২ সালে জমশের আলী মৃধা মারা যান। এর বছরখানেক পর মারা যান তার স্ত্রী শরীফুন বেগম। নিজ বাড়ীর আঙ্গিনায় স্বামী-স্ত্রীকে দাফন করা হয়। পরে পৈত্রিক বাড়ীটি বংশানুক্রমে কয়েক দফা ভাগাভাগি হয়। ভাগাভাগির একপর্যায়ে কবর ২টি মৃত জমশের মৃধার ভাতিজা খালেক মৃধার অংশে পড়ে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে বাড়ীটি হওয়ায় জমির মূল্য কয়েকগুণ বেড়েছে। এতেই বিপত্তি বেধেছে। কবরের জায়গা বাবদ জমশের মৃধার ছেলেরা আধা শতাংশ জমি ছেড়ে দিলেও খালেক মৃধার দাবী আরও বেশী জমি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত জমশের মৃধার ছেলে কমেদ আলী মৃধা বাবা-মায়ের কবর সরিয়ে নিজের জায়গায় নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ বিষয়ে কমেদ আলী মৃধা বলেন, পৈত্রিক বাড়ী ভাগাভাগি হয়ে জমির আকৃতি এমন হয়েছে যে বসবাস করাই দুষ্কর। তারপরও বাবা-মায়ের কবরের কথা বিবেচনা করে আধা শতাংশ জায়গা ওদেরকে ছেড়ে দিয়েছিলাম। ছেড়ে দেয়া জমির খানিকটা অংশে আমার পাকা বাথরুম ও টয়লেটের আংশিক পড়ায় তা ভেঙে দেয়ার জন্য ওরা চাপাচাপি করতে থাকে। আমরা টয়লেট ও বাথরুম না ভাঙার শর্তে বাড়ীর পিছনের দিক থেকে আরো আধা শতাংশ জমি ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওরা তাতেও রাজী না হয়ে বিভিন্ন সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালজ করে। এ পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে বাবা-মায়ের কবর স্থানান্তর করছি।
এ বিষয়ে আব্দুল খালেক মৃধার ছেলে জুবায়ের মৃধা বলেন, কবর সরিয়ে নিতে আমরা কখনো বলিনি। তাদের ছেড়ে দেয়া জায়গায় পাকা টয়লেট ভেঙ্গে দেয়ার কথা বলায় তারা কবর সরিয়ে নিচ্ছে।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আব্দুল রশিদ ফকীর বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে অনেকবার বসে আপোষ-মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছি। অবশেষে গোয়ালন্দ ঘাট থানা জামে মসজিদের খতিব আবু বক্করের পরামর্শক্রমে শরিয়া মোতাবেক কবর ২টি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।