॥শিহাবুর রহমান॥ বিয়ের কথা বলে ডেকে নিয়ে বন্ধুদের দিয়ে প্রেমিকা এসএসসি পরীক্ষার্থী (১৬)কে গণধর্ষণ করিয়েছে সুজন(২২) নামে এক লম্পট। গত ২৮শে জানুয়ারী বিকেলে রাজবাড়ী শহরের ভবানীপুর ড্রাইআইচ ফ্যাক্টরী এলাকায় আমিরুল মাস্টারের মালিকাধীন পরিত্যক্ত মেসে এ গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই সুজনসহ ঘটনার সাথে জড়িত ৫জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো ঃ ড্রাই আইচ ফ্যাক্টারী এলাকার আক্তার ফকিরের ছেলে আল আমিন(২৪), নাড়– কুমার সরকারের ছেলে আকাশ সরকার(২৪), বড়লক্ষীপুর গ্রামের খালেক প্রামানিকের ছেলে ফজলুর রহমান(৩২) ও ড্রাই আইচ ফ্যাক্টারীর মৃত আব্দুল ব্যাপারীর ছেলে বাবু ব্যাপারী ওরফে কমান্ডার(২৮)।
এ ঘটনায় উল্লেখিতরাসহ ৬জনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা করেছে ওই কিশোরী। মামলার অপর আসামী হলো ড্রাই আইচ ফ্যাক্টারীর মৃত নুর আলী ফকিরের ছেলে মোস্তফা ফকির ওরফে মোস্ত(২৫)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, তিন মাস আগে ড্রাই আইচ ফ্যাক্টরী এলাকার মৃত ইউনুচ খার ছেলে সুজনের সাথে মহাদেবপুর গ্রামের ওই কিশোরীর সাথে পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের জের ধরে মাঝে মধ্যে মোবাইলে তাদের মধ্যে কথাবার্তা আদান প্রদান হয় এবং সুজন তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সুজন ছিল বিবাহিত। পরবর্তীতে সুজন বিবাহিত জানার পর সে তাকে এড়িতে চলতো। গত ২৮শে জানুয়ারী বিকেল ৩টার দিকে রাজবাড়ী বাজার থেকে ওই কিশোরী রেল লাইন ধরে বাড়ী ফিরছিল। পথিমধ্যে সুজনের সাথে তার দেখা হয়। এরপর সুজন তাকে কথা আছে বলে ড্রাই আইচ ফ্যাক্টারীর মোড়ে নিয়ে যায়। সেখানে সুজন তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে সে রাজী না হলে সুজন তার সাথে রাগারাগি করলে পুনরায় সে রেল লাইন দিয়ে বাড়ীর দিকে রওনা হয়। কিছু দুর আসার পর সুজন তার মোবাইলে ফোন দেয় এবং বলে রিক্সাযোগে সে সেখানে আসছে। এরপর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সুজন তার বন্ধু আল আমিন, আকাশ ও মোস্তফাকে সাথে নিয়ে রিক্সাযোগে গঙ্গাপ্রসাদপুর কৈলার বাজারের ব্রিজের ওপারে তাকে পেয়ে যায়। এ সময় সুজন তার মা বিয়ের ব্যাপারে কথা বলবে নিজেই রিক্সা চালিয়ে তাকে ড্রাই আইচ ফ্যাক্টারীর মোড়ে আমিরুল মাষ্টারের মেসের সামনে নিয়ে আসে। সেখানে সুজন তাকে নামিয়ে দিয়ে মাকে ডেকে নিয়ে আসার কথা বলে কৌশলে রিক্সা নিয়ে চলে আসে। এরপর বিকেল সোয়া ৪টার দিকে আল আমিন, আকাশ সরকার, ফজলুর রহমান ও মোস্তফা তাকে আমিরুল মাষ্টারের পরিত্যক্ত মেসে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর পূর্বক পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে এবং কান্না কাটি করলে তারা তাকে সেখানে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, এ ঘটনায় ওই কিশোরী ৬জনকে আসামী করে মামলা করেছে। রাতভর অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৫জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।