শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৫৯ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

বিএমএ’র পক্ষ থেকে রাজবাড়ীর দুই সংসদ সদস্যকে সংবর্ধনা প্রদান

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৯

॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন/রফিকুল ইসলাম॥ বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন(বিএমএ) রাজবাড়ী জেলা শাখার পক্ষ থেকে গতকাল ২৬শে জানুয়ারী রাত সাড়ে ৭টায় শহরের পালকি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী এবং রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জিল্লুল হাকিমকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
জেলা বিএমএ’র সহ-সভাপতি ও সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ পারিজাত কুমার পালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ এএফএম শফিউদ্দিন পাতা’র সঞ্চালনায় সংবর্ধনা ও আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খান, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ দীপক কুমার বিশ্বাস, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল মোর্শেদ আরুজ, জেলা বিএমএ’র সহ-সভাপতি ও সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নূরুল আমিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বিএমএ’র সদস্যসহ বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসকগণ উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্যের শেষে সংবর্ধিত সংসদ সদস্যদ্বয়কে জেলা বিএমএ’র পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক সুদৃশ্য ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে সম্মাননা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, আজকের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জেলার ডাক্তারদের সাথে কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ডাক্তারের যেমন নৈতিক দায়িত্ব রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, তেমনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব এলাকার জনগণ তাদের স্বাস্থ্য সেবা ঠিকমত পাচ্ছে কিনা বা তাদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে যা প্রয়োজন তা নিশ্চিত করা। আমার দেখা ও জানা মতে মরহুম এডঃ আব্দুল ওয়াজেদ চৌধুরী যখন সংসদ সদস্য ছিলেন তথন থেকেই রাজবাড়ী সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে ডাক্তার অপ্রতুল ছিল। মূলতঃ রাজবাড়ীতে যে সব ডাক্তার কর্মরত থাকেন তাদের অনেকেই রাজবাড়ীতে থাকেন না। এই সমস্যা ১৯৯১ সাল থেকে আমি দেখে আসছি। আবার ডাক্তার নিয়োগ, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পোস্টিংসহ চাকুরীরত ডাক্তারদের বদলীর তিনটি বিষয় তিন জায়গা থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই তিন জায়গার সমন্বয়হীনতার কারণে এবং নিয়োগপ্রাপ্ত ডাক্তারদের তদ্বিরসহ বিভিন্ন কারণে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার সংকট সবসময় লেগেই আছে। এ বিষয়গুলো আমি পূর্বের স্বাস্থ্য মন্ত্রীকে বলেছি এবং এখন যিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রী আছেন তাকেও বলব, যাতে বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করা হয়। এসব বহুবিধ কারণে জেলা শহরের হাসপাতাল গুলোতে অনেক সময় একজন ডাক্তারকে ৮শত’র অধিক রোগী কোন কোন সময় দেখতে হয়। এতে একজন ডাক্তার মেধা সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও তার পক্ষে অনেক সময় এই অতিরিক্ত চাপ বহন করা কষ্টসাধ্য হয়। তারপরও একজন ডাক্তার যেহেতু একটি মহৎ মানবিক পেশায় নিয়োজিত সেহেতু শত চাপ সত্ত্বেও সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার যেহেতু স্বাস্থ্য খাতে সেবার মান বাড়ানোর জন্য প্রচুর অর্থের সংস্থানের মাধ্যমে বিনামূল্যে ওষুধ ও প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রদান করছে সুতরাং আমাদের ডাক্তার সমাজকে দেশের কল্যাণে নিজেদের সবটুকু দিয়ে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করতে হবে। এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার সংকটসহ যে সমস্ত সমস্যা রয়েছে সেগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রীকে অবগত করবেন বলে উল্লেখ করেন। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য মন্ত্রীকে রাজবাড়ীতে এনে বিষয়গুলো সমাধানের আশ্বাস দেন।
রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম বলেন, আমি আমার আসন থেকে ৪বার এবং কাজী কেরামত আলী তার আসন থেকে ৫বার সংসদ সদস্য হলেও এই প্রথম ডাক্তার এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমাদের এই প্রথম সংবর্ধনা প্রদান করা হচ্ছে। সেই জন্য আমি রাজবাড়ীর সকল বিএমএ সদস্যকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিএমএ’র সহ-সভাপতি ডাঃ মোঃ নুরুল আমিনের টেলিভিশনের টক শো’র উল্লেখিত বক্তব্যের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বলতে চাই বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে যেসব বিদ্যান বুদ্ধিজীবীগণ অংশগ্রহণ করেন নির্বাচন নিয়ে যেসব বক্তব্য দেন তাদের মূলতঃ বুদ্ধি বিক্রি করেন। প্রকৃত অর্থের্ তাদের বাস্তবতা সম্পর্কে জ্ঞান অনেক কম। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার এলাকা রাজবাড়ী-২ আসনে বিএনপি যে নির্বাচন করেছে তাকে নির্বাচন বলে না। নির্বাচনকালীন সময়ে আমরা তাদের কোন নির্বাচনী কর্মকান্ডে বাধা প্রদান করি নাই। তারা ফ্রি ভাবে যে কোন এলাকায় তাদের প্রচারকার্য চালাতে পেরেছে। তাদের নির্বাচনী প্রচারকালে আমরা দেখেছি রাজবাড়ী-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী অধিকাংশ সময় একা একা নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন। অনেক সময় তার প্রচারকালীন সময়ে আমাদের লোকজন তাকে চা-নাস্তা পর্যন্ত খাইয়েছে। তার সাথে এলাকার লোকজন না থাকার প্রধান কারণ অতীতে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তার এলাকায় রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ কোন উন্নয়ন করে নাই। আবার তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ভবিষ্যতের কি উন্নয়ন হবে সেটির কোন কিছু উল্লেখ নাই। কি নিয়ে তারা জনগণের কাছে ভোট চাইবে। তারা যখনই এলাকার মানুষের কাছে ভোট চাইতে গেছে বা এলাকার মানুষকে সঙ্গে ডেকেছে তখন এলাকার মানুষ তাদের বলেছে আপনারা কোন উন্নয়ন করেন নাই, যা হয়েছে বর্তমান সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিমের আমলে হয়েছে। সুতরাং তাকে আবার ভোট দিলে এলাকার আরো উন্নয়ন হবে। এছাড়াও বিগত সময়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সীমাহীন দুর্নীতি ও জ্বালাও-পোড়াও এর রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি জামাত-শিবিরকে সঙ্গে নিয়ে সাধারণ জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এসব বিভিন্ন কারণে তারা এবারের নির্বাচনে জনগণের সমর্থন হারিয়েছে। তাদেরকে জনগণ এমনভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে যে তারা যে কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টে দেবে সেই লোকটিও খুঁজে পায় নাই। এটাই মূলতঃ তাদের পরাজয়ের প্রধান কারণ। কিন্তু আমাদের বিভিন্ন টিভি টকশোতে বুদ্ধি বিক্রেতাগণ তাদের দ্বারা মোটিভেটেড হয়ে একাদশ নির্বাচন সম্পর্কে এই সকল কথা বলছেন। বর্তমানে জামাত শিবির গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমাদের সকলকে তাদের সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। বিভিন্ন বক্তার বক্তব্য মতে আমাদের যে ডাক্তার সংকট আছে সে সংকট সমাধানে জনবল বাড়ানো উচিত। সেই জন্য কোন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পূর্বেই আমাদের এর জন্য কি ধরনের কত জন জনবল লাগবে সে বিষয়ে পরিকল্পনা করে স্বাস্থ্য বিভাগকে এগোতে হবে। যারা ডাক্তারী পেশার মত মহৎ পেশায় নিয়োজিত আছেন অবশ্যই তাদেরকে হাসপাতালে গরীব মানুষের সেবা প্রদানের সময় ক্লিনিকে যাওয়া যাবে না। বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগে নার্সসহ কোথাও কোন নিয়ন্ত্রণ নাই। যার কারণে সরকারের প্রচুর অর্থায়ন সত্ত্বেও স্বাস্থ্য খাতে যেমন উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল সেটি হয় নাই। বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। সুতরাং সরকারের এই মহৎ উদ্যোগকে বাস্তবায়ন করতে আমাদের সকলকে সৎভাবে একসাথে কাজ করতে হবে। যাতে আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সেবাসহ সকল ভিশনকে আরো বেশী কাজের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে পারি। সেক্ষেত্রে দেশের ডাক্তার সমাজ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এছাড়াও তিনি তার বক্তব্যে নির্বাচনী এলাকার স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!