বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ১২:৫২ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

রাজবাড়ী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আ’লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ইমদাদুল হক বিশ্বাস-নওয়াব আলী

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৯

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ আসন্ন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আরো ২জন আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় মনোনয়ন চাইবেন জানিয়েছেন। তারা হলেন ঃ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাবেক সাধাারণ সম্পাদক এডঃ ইমদাদুল হক বিশ্বাস এবং জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এস.এম নওয়াব আলী। তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত ঃ-
এডঃ ইমদাদুল হক বিশ্বাস ঃ এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চান রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদের ৩বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডঃ ইমদাদুল হক বিশ্বাস। ২০১৪ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।
এ বিষয়ে এডঃ ইমদাদুল হক বিশ্বাস বলেন, আমি সেবাব্রত মন নিয়ে রাজনীতি করি। সন্ত্রাস-দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত রাজবাড়ী গড়ে তোলার মানসে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক। দলীয় মনোনয়ন পেলে আমি বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। মনোনয়ন পেলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমার পক্ষে কাজ করবেন বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করাই আমার রাজনৈতিক লক্ষ্য।
উল্লেখ্য, রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মরহুম ওহাব আলী বিশ্বাসের উত্তরসুরী এডঃ ইমদাদুল হক বিশ্বাস উপজেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮৫, ১৯৯০ ও ২০০৯ সালের পর পর ৩টি নির্বাচনে রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ৪র্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।
রাজনীতির বাইরে তিনি রাজবাড়ী টাউন হল কমিটি, জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, রাজবাড়ী রাইফেল ক্লাব ও কুষ্টিয়া লালন একাডেমীর আজীবন সদস্য এবং দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এস.এম নওয়াব আলী ঃ তিনি জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। এর আগে তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের পর পর ৩বার সাধারণ সম্পাদক এবং ৩বার সভাপতি হিসেবে একটানা ৪২বছর নেতৃত্ব দেন। তার স্ত্রী মিসেস শাহানা বেগম সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী এবং জেলা পরিষদের নির্বাচিত সংরক্ষিত মহিলা সদস্য।
এস.এম নওয়াব আলী ১৯৫৪ সালের ২০শে মে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আলাদিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মরহুম সাদেক আলী শেখ। আলাদিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার পর ভর্তি হন রাজবাড়ী শহরের ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে ১৯৭০ সালে এসএসসি পাশ করেন। ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সময়ে জেনারেল ক্যাপ্টেন্সীর মাধ্যমে তার রাজনীতির হাতে খড়ি। ১৯৬৮ সাল থেকে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহবানে ও নির্দেশে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ শেষে আবারও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন এবং ১৯৭৩ সালে রাজবাড়ী সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং রাজবাড়ী সদর থানা আওয়ামী লীগের প্রথম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৬ সাল থেকে একটানা ২০১৫ সাল পর্যন্ত পরপর ৩ বার সাধারণ সম্পাদক ও ৩বার সভাপতি হিসেবে একটানা ৪২বছর সফলভাবে সদর থানা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেন। এরপর ২০১৫ সালে দলীয় কাউন্সিলে জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা ও আন্দোলন-সংগ্রামে প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর ও ১৯৮৮ সালে ২দফায় কারাবরণ করেন। ২০০৩ সালে অপারেশন ক্লিনহার্টের সময় তিনি সেনা ক্যাম্পে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত সরকার ক্ষমতায় আসার পর অস্ত্র ও হত্যা চেষ্টার ২টি মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে ব্যাপকভাবে হয়রানী করে। ওই সময় দীর্ঘদিন পলাতক থাকাকালে তিনি শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন।
১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারীর বিতর্কিত নির্বাচন প্রতিহত করার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখায় তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপিকা জাহানারা বেগমের নির্দেশে আলীপুর কেন্দ্রে তার উপর গুলিবর্ষণের চেষ্টা করা হয়। সেখানকার দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসারসহ এলাকাবাসীর হস্তক্ষেপে তিনি রক্ষা পান। তা স্বত্ত্বেও দীর্ঘদিন তাকে বাড়ী-ঘর ছেড়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়। ২০০৬ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে আন্দোলনকালে রাজবাড়ীর গুরুত্বপূর্ণ গোয়ালন্দ মোড়ের দায়িত্ব তার উপর ছিল। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে গোয়ালন্দ মোড়ে অবস্থান করে আন্দোলনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আন্দোলন-সংগ্রাম করাকালে তিনি বহুবার নির্যাতিত হন।
এস.এম নওয়াব আলী বর্তমানে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি, সদর থানা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি ও আলাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি ‘নওয়াব গ্রামার স্কুল’ নামে একটি সুনামধন্য কিন্ডার গার্টেনের প্রতিষ্ঠাতা।
ব্যক্তিগত জীবনে এস.এম নওয়াব আলী ২সন্তানের জনক। তার ছেলে এস.এম মেহেদী হাসান সুমন ময়মনসিংহ কর অঞ্চলের সহকারী কর কমিশনার এবং মেয়ে নাজমীন জাহান সীমার স্বামী ইকবাল হোসেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব।
আগামী পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে এস.এম নওয়াব আলী বলেন, ১৯৬৮ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কখনো কোন নির্বাচন বা অন্য কোন ক্ষেত্রে দলের বিপক্ষে কোন কাজ কিংবা বিরোধিতা করিনি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সবসময় হৃদয়ে ধারণ করে এসেছি। আশা করি আমার রাজনৈতিক জীবনের ত্যাগ ও শ্রমের কথা বিবেচনা করে দল আমার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!