॥আন্তর্জাতিক ডেস্ক॥ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশের ভূমিকা যথাযথভাবে স্মরণ ও প্রশংসা করা হয়েছে। গতকাল ১৫ই জানুয়ারী হেগে অনুষ্ঠিত এক কনফারেন্সে জাতিসংঘের পিসকিপিং অপারেশনস সংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটারী জেনারেল জন পিয়েরে লাকোয়া এ প্রশংসা করেন।
নেদারল্যান্ড এবং রুয়ান্ডার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত “প্রিপারেটরী কনফারেন্স অন পিসকিপিং” শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এই কনফারেন্সে অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বাংলাদেশে তাঁর সফরের কথা উল্লেখ করে মিঃ লাকোয়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সৈন্য ও পুলিশ সরবরাহের মাধ্যমে বাংলাদেশ যে ভূমিকা পালন করছে তার প্রশংসা করেন। এছাড়াও, বিপসট-এর মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ প্রদানেরও তিনি প্রশংসা করেন। লাকোয়া স্বাগতিক দেশের সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা প্রদানের ওপর যেন আরও অধিক মনোযোগ দেয়া হয় সেই আশাবাদও ব্যক্ত করেন।
এর পূর্বে সকালে নেদারল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রী স্টেফ বাক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মিজ আঙ্ক বাইলেভেল্ট, নেদারল্যান্ডে নিযুক্ত রুয়ান্ডার রাষ্ট্রদূত জন পিয়েরে কারাবারাঙ্গা এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক আফ্রিকান ইউনিয়নের কমিশনার এস্মাইল ছেরুগী যৌথভাবে উক্ত কনফারেন্সের উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশসহ প্রায় ৭০টি দেশের প্রতিনিধি এই কনফারেন্সে যোগদান করছে। কনফারেন্সে নেদারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন আর্মড ফোরসেস ডিভিশনের মহাাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ নুরুল আনোয়ার এবং বাংলাদেশ পুলিশের উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক ড. কে এম মাহিদ উদ্দিন।
কনফেরেন্সে রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল তাঁর বক্তব্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশের সমর্থন পূনরব্যক্ত করেন এবং এ প্রসংগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি উল্লেখ করে বলেন বৈশ্বিক শান্তি ও সুস্থির পরিবেশ বজায় রাখতে বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সৈন্য ও পুলিশ সদস্য সরবরাহে সর্বদা প্রস্তুত। হাই লেভেল ইভেন্ট অন এ্যাকশন ফর পিসকিপিং এ প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বেলাল জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে আরও অধিক সংখ্যক মহিলা সৈনিক ও মহিলা পুলিশ সদস্য নিয়োগের আহ্বান জানান এবং অনুরোধ পেলে বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ে এ ধরনের সদস্য প্রদানে প্রস্তুত বলে আশ্বস্ত করেন।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে প্রাণ হারানো ১৪৫জন বাংলাদেশীসহ পৃথিবীর সব শান্তিরক্ষীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বেলাল শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যাবার পূর্বে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদানের বিষয়ে বাংলাদেশ গভীর মনোযোগ রয়েছে বলে আশ্বস্ত করেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে যেকোনো যৌন হয়রানি এবং অশ্লীল আচরণ বাংলাদেশ বরদাস্ত করে না এবং এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ “জিরো টলারেন্স” নীতিতে বিশ্বাসী এবং শান্তিরক্ষীদের কার্যক্রমে পরিবেশগত ক্ষতি যাতে কম হয় সে বিষয়েও বাংলাদেশ সজাগ রয়েছে।