॥স্টাফ রিপোর্টার॥ সরকারী আইনী সহায়তায় জাতীয় হেল্পলাইন টোল ফ্রি নম্বর ১৬৪৩০ এর মাধ্যমে গত বছর ২০ হাজার ৮’শ জন আইনগত তথ্য সেবা গ্রহণ করেছেন।
জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার সহকারী পরিচালক ও সিনিয়র সহকারী জজ কাজী ইয়াসিন হাবিব এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ডিসেম্বর পর্যন্ত হেল্পলাইনে আইনি সেবা নেয়া ২০ হাজার ৮’শ জনের মধ্যে রয়েছেন সাড়ে ৫’হাজার নারী।
তিনি বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসার ও বিকাশের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে সরকার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ ঃ ভিশন-২০২১’ ঘোষণা করেছেন। সরকারী সেবাসমূহ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুত জণগণের কাছে নিয়ে আশাই এর মূল উদ্দেশ্য। উন্নয়নের জন্য তথ্য প্রযুক্তি বা ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে শুধু কম্পিউটার নয়, এদেশের জনসংখ্যার এক বড় অংশের হাতে মোবাইল ফোন আছে, কাজেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরকারী সেবার বার্তা দ্রুততম সময়ে জনগণের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা সম্ভব।
সরকারী আইনি সহায়তা সংস্থার সকল তথ্য সংস্থাটির ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয় উল্লেখ করে কাজী ইয়াসিন হাবিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ এপ্রিল-২০১৬-এ “সরকারী আইনি সহায়তায় জাতীয় হেল্পলাইন-১৬৪৩০”এর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর থেকেই উক্ত টোল ফ্রি ১৬৪৩০ হেল্পলাইন নম্বরে সারা দেশ হতে অসহায় ও সাধারণ মানুষ আইনী পরামর্শ ও তথ্যের জন্য ফোন কল করে যাচ্ছে। এ কলসেন্টার হতে বর্তমানে অফিস চলাকালীন সময়ে আইনগত পরামর্শ, তথ্য সেবা ও লিগ্যাল কাউন্সিলিং সেবাসমূহ দেয়া হচ্ছে যা অসহায় মানুষের আইনী অধিকার সুরক্ষায় কার্যকর অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, হেল্পলাইনের সেবাসমূহ হচ্ছে- আইনী পরামর্শ প্রদান, আইনগত তথ্য প্রদান, কাউন্সিলিং, মামলা/মোকদ্দমা করার প্রাথমিক তথ্য প্রদান, সরকারী আইনি সেবা সম্পর্কিত যে কোন পরামর্শ, অভিযোগ গ্রহণ (কর্তৃপক্ষকে অবগতকরণ)।
তিনি আরো বলেন, এ হেল্পলাইনে যোগাযোগ তথা সেবা গ্রহণের মাধ্যম হলো- মোবইল, টেলিফোন, ম্যাসেজ, মোবইল এব্যাস্ এবং ফেইস বুক ম্যাসেঞ্জার। তিনি বলেন, দিনে দিনে জাতীয় এ হেল্পলাইনে আইনগত তথ্য সেবা গ্রহণের হার বাড়ছে।
কাজী ইয়াসিন হাবিব বলেন, বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী আইনগত সহায়তা ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা ও সরকারী আইনগত কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণের মাধ্যমে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার লক্ষ্যে সাংস্থার ২০১২-২০১৭ সালের ১ম কৌশলগত কর্মপরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন হয়েছে। এখন পরবর্তী কৌশলগত পরিকল্পনা ২০১৮-২০২২ প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান আছে। দেশের দরিদ্র ও অসর্থ জনগোষ্ঠী, শ্রমিক, সহিংসতার শিকার নারী-শিশু এবং পাচারের শিকার মানুষের জন্য আইনী সেবা নিশ্চিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০০ সালে আইন প্রণয়নের মধ্যদিয়ে এর যাত্রা শুরু করে। পরে এই আইনের অধীনে বিভিন্ন বিধি প্রণীত হয়। বিধিতে কারা আইনি সহায়তা পাবেন তা নির্ধারণ করা হয়। দেশের সবক’টি জেলা আদালত, চৌকি আদালত এবং সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইড সার্ভিস চালু রয়েছে।
কাজী ইয়াসিন হাবিব জানান, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে এখন শুধু আইনী সহায়তা প্রদানের কেন্দ্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি, মামলা জট কমানোর লক্ষ্যে এ অফিসগুলোকে ‘এডিআর কর্ণার’ বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় লিগ্যাল এইড অফিসার নিয়োগ হচ্ছে। এ আইনি সেবায় বিভিন্ন কার্যক্রমে জনগণের সম্পৃক্ততা এবং সুবিধাগ্রহণের হার দিনে দিনে বেড়ে চলেছে।