॥আসহাবুল ইয়ামিন রয়েন॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ৯ই ডিসেম্বর সকাল ১০টায় জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে সভায় কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকী মিলি বিপিএম-সেবা, রাজবাড়ী সরকারী আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর দিলীপ কুমার কর, পৌরসভার মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুম রেজা, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার কামরুল ইসলাম গোলদার, জেলা জাসদের(ইনু) সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ নিজাম মন্টু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সানোয়ার হোসেন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ এম.এ খালেক, পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ, কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম, গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র উপ-পরিচালক মোঃ জিল্লুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ, বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ ও কমিটির অন্যান্য সদস্যগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী সভার শুরুতে মহান বিজয়ের এই মাসে আমাদের স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণসহ মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদ, সম্ভ্রম হারানো ২লক্ষ মা-বোন, ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের শাহাদতবরণকারী সকল সদস্য এবং শহীদ জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এই ডিসেম্বর মাস আমাদের বিজয়ের মাস। আবার এই বিজয়ের মাসের ৩০ তারিখে আমাদের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সব মিলিয়ে এই বছরের ডিসেম্বর মাসটি আমাদের বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগামী ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস ও ৩০ তারিখের জাতীয় সংসদ নির্বাচন রাজবাড়ী জেলাবাসী ও জেলায় কর্মরত সকল সরকারী বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগিতার মাধ্যমে অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে সফলভাবে পালন করা সম্ভব হবে বলে আমি আশা করি।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা পুলিশ ও আনসারের পাশাপাশি র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি ও সেনাবাহিনী কাজ করবে। ১০ই ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ২৯শে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধি অনুযায়ী দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা ও সভা-সমাবেশ করতে পারবেন। প্রত্যেক প্রার্থী পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে, প্রতিটি উপজেলায় ও প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে নির্বাচনী অফিস করতে পারবেন। প্রতি প্রার্থী প্রতিদিন ৩টি করে মাইক দ্বারা তাদের প্রচারকার্য চালাতে পাবেন। একই স্থানে দুইজন প্রার্থী একই তারিখে একই সময়ে কোন সভা-সমাবেশ করতে পারবেন না। সেই জন্য কোন প্রার্থী কোন দিন কোন স্থানে নির্বাচনী সভা-সমাবেশ করবেন তার সময় ও স্থান প্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে জনসভার সিডিউল ঠিক করে রিটার্নিং অফিসারকে জানাবেন। যাতে একই স্থানে একই সময়ে দুই প্রার্থীর জনসভাকে কেন্দ্র করে কোন ধরণের গোলযোগের ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। আমরা আশা করি জেলাবাসী তথা সকল রাজনৈতিক দলসহ প্রার্থীদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে শান্তিপ্রিয় জেলা হিসেবে পরিচিত রাজবাড়ী জেলায় কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া একটি শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো বলেন, রাজবাড়ী জেলায় কিছুদিন ধরে বেশ কিছু লাশ বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া গেছে। পুলিশ সুপারের তথ্য মতে যার মধ্যে ২টি ছাড়া সকল লাশের মোটিভ উন্মোচন করা সম্ভব হয়েছে। রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পৌরসভার মধ্যকার ড্রেনসহ পাইপ লাইনের যে কাজ পৌরসভা ও সড়ক বিভাগের করার কথা তা পৌর মেয়র ও সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য মতে যথাসময়ে শেষ হবে।
এছাড়াও সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খুশি রেলওয়ে ময়দানের শহীদ মিনারসহ ময়দানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, পল্লী বিদ্যুৎ ও ওজপাডিকোর বিদ্যুৎ সাব-স্টেশনগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা, বালিয়াকান্দি থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার ও দালাল চক্রের সদস্য গ্রেফতার, মাদক, সন্ত্রাস ও বাল্য বিবাহসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।