॥শিহাবুর রহমান/কবির হোসেন॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানীবহ ইউনিয়নে বৃচাত্রা দারুসসুন্নাহ্ ফাজিল মাদ্রাসায় গত ২দিনে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১৫জন ছাত্রী। এর মধ্যে গতকাল ৮ই ফেব্র“য়ারী বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ৫জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর শুধু ছাত্রীদের জন্য ২দিন ক্লাস বন্ধ ঘোষনা করেছে মাদ্রাসাটি। হাসপাতালে ভর্তিকৃত ছাত্রীরা হলো ঃ ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী হাবিবা খাতুন, আছমা, আফরোজা, কেয়া ও শাহানা।
বৃচাত্রা দারুসসুন্নাহ্ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ মুসা নোমানী জানান, গত সোমবার দুপুরে ক্লাস নেয়ার সময় ৮ম শ্রেণীর ২ছাত্রীর মাথা ব্যাথা শুরু হয়। খবর পেয়ে তিনি ওই ক্লাসে গেলে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ১০ ও ৮ম শ্রেণীর আরো ৭ছাত্রী অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এ সময় তাদেরকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আঃ রহমানকে দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে বাড়ীতে পাঠানো হয়। পরদিন গত মঙ্গলবার আরো কয়েক ছাত্রী অসুস্থ্য হলে তিনি বিষয়টি মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুল লতিফ মিয়াকে জানান। পরে বিষয়টি সিভিল সার্জনকেও জানানো হয়। যার প্রেক্ষিতে সিভিল সার্জন গতকাল ৮ই ফেব্র“য়ারী সকালে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এসএমএ হান্নানের নেতৃত্বে ৩সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিকেল টিম মাদ্রাসায় পাঠান। সকাল পৌনে ১০টার দিকে এ্যাসেম্বলী চলাকালে ডাক্তাদের উপস্থিতিতে ৬ছাত্রী অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এ সময় তাদের মধ্যে ৫জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পর শুধু ছাত্রীদের জন্য ২দিন ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
মাদ্রাসার শিক্ষক জাকারিয়া নোমানী জানান, আমাদের এ মাদ্রাসা বরাবরই ভাল রেজাল্ট করে আসছিল। মাদ্রাসার এ সাফল্যের দিকে কারও কু-নজর লেগেছে। কোন দল বা সংগঠন আমাদের মাদ্রাসার ক্ষতি করার লক্ষ্যে বা সুনাম নষ্ট করার জন্য কোন তান্ত্রিকের সাহায্যে এ কাজগুলো করছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানা জানান, খবর পেয়ে তিনি সকালে মাদ্রাসাটিতে গিয়েছিলেন। এটি তেমন কিছু না। তিনি পূর্বে যেখানে ছিলেন সেখানে এক সময়ে ৫০জন ছাত্রী অসুস্থ্য হয়েছিলো। এটা হয় একজন অসুস্থ্য হয়েছে সেটা শুনে আতংকে অন্যরাও অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ নাহিদা সুলতানা জানান, এটা ম্যাট সাইক্লোজি রোগ। একজনের মাথা ব্যাথা বা বমি হচ্ছে শুনে আতংকে অন্যজন অসুস্থ্য হড়ে পড়ে। এটা মেয়েদের মধ্যে বেশী হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বকস জানান, ‘এটা কোন রোগ নয়, মানসিক সমস্যার কারণে এটা হয়ে থাকতে পারে’।
এদিকে এ ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবকের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়। তাদের ধারণা ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মহম্মদ আলী নোমানী অনেক জ্বীন ধরে রাখতেন। অনেক জ্বীনও নাকি মানুষের বেশ ধরে তার কাছে পড়াশুনা করতো। তিনি মারা যাওয়ার পর ওই সমস্ত জ্বিন উন্মুক্ত হয়। জ্বীনের দৃষ্টি দিতেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে।