॥স্টাফ রিপোর্টার॥ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য আইভরিকোস্ট, ফ্রান্স, কুয়েত, নেদারল্যান্ড, পেরু, পোল্যান্ড, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে পরিষদের চলতি অক্টোবর মাসের সভাপতি বলিভিয়া গত ২৪শে অক্টোবর এই বিশেষ সভা আহ্বান করে।
সভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের মিয়ানমার সংক্রান্ত স্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের চেয়ারপারসন মারজুকি দারুসমান ২০১১ সাল থেকে মিয়ানমারের রাখাইন, কাচিন ও সান প্রদেশে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনাবলীর বিবিধ প্রমাণ ও তথ্য-উপাত্ত নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্টের সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরেন। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি সদস্য রাষ্ট্র ছাড়াও বাংলাদেশ ও মিয়ানমার এ সভায় বক্তব্য প্রদান করে।
গতকাল ২৫শে অক্টোবর ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বক্তব্য রাখেন।
তিনি সম্প্রতি ৭৩তম সাধারণ পরিষদের হাই-লেভেল সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার সঙ্কটের সমাধানে যে তিন দফা প্রস্তবনা তুলে ধরেছিলেন তা পুনরুল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রথমতঃ মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গৃহীত বৈষম্যমূলক আইন, নীতি এবং অনুশীলন বাতিল করতে হবে। সঠিক ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির মূল কারণ উদঘাটন করতে হবে। দ্বিতীয়তঃ আস্থা বিনির্মাণ, সুরক্ষা ও অধিকারের নিশ্চয়তা এবং সকল রোহিঙ্গাদের জন্য নাগরিকত্বের পথ সুগম করার মাধ্যমে মিয়ানমারকে অবশ্যই একটি সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। প্রয়োজনে সকল বেসামরিক নাগরিককে সুরক্ষা প্রদানের জন্য মিয়ানমারের অভ্যন্তরে একটি ‘সেফ জোন’ তৈরী করতে হবে। তৃতীয়তঃ জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সুপারিশমালার আলোকে রোহিঙ্গাদের উপর সহিংস অপরাধ প্রতিরোধে দায়বদ্ধতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
একইসাথে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন দৃঢ়ভাবে বলেন, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমে প্রত্যাবাসন। এই লক্ষ্য পূরণে তিনি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন বর্ণিত অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার সাপেক্ষে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থা পুনঃস্থাপনের বিষয়ে গুরুত্ব দেন।
সভায় অন্যান্য বক্তাগণ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের উদার মানবিক সহয়তার ভূয়সী প্রশংসা করেন।