॥স্টাফ রিপোর্টার॥ সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে ইস্তাম্বুলস্থ সৌদি দূতাবাসে নির্যাতনের পর শিরচ্ছেদ করা হয়। ঘটনার অডিও রেকর্ডিং শোনার পর তুরস্কেও সরকার সমর্থক দৈনিক ইয়েনি সাফাক গতকাল ১৭ই অক্টোবর এই খবর প্রকাশ করেছে। খবর এএফপি’র।
অডিও টেপের একাধিক রেকর্ডিংকে উদ্ধৃত করে দৈনিক ইয়েনি সাফাক বলেছে, হত্যাকারীরা জিজ্ঞাসাবাদের সময় খাসোগির হাতের আঙ্গুল কেটে নেয়। তারপর ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক খাসোগিকে হত্যা করা হয়।
তুর্কি বান্ধবীর সাথে বিয়ের প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র আনতে গত ২রা অক্টোবর ইস্তাম্বুলস্থ তুরুস্কের দূতাবাসে প্রবেশ করার পর খাসোগি নিখোঁজ হন। তুরস্ক পুলিশ ধারণা করছে যে, সৌদি আরবের ১৫জনের একটি বিশেষ দল কর্তৃক খাসোগি নিহত হন। তবে সৌদি আরব বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করছে।
খাসোগির নিহতের ঘটনা তদন্তের ১৫সদস্য বিশিষ্ট টিমের একজন হলো সৌদি ফরেনসিক বিভাগের লেফট্যানেন্ট কর্ণেল সালাহ মুহাম্মেদ বলে পত্রিকাটি জানায়।
ইতিপূর্বে ওয়াশিংটন পোষ্ট নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র ও তুর্কি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতিতে বলেছিলো, অডিও ও ভিডিও রেকডিং প্রমাণ করে যে দূতাবাসের ভিতর খাসোগিকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয় এবং পরে তার দেহ খন্ড-খন্ড করে কেটে ফেলা হয়।
পত্রিকাটি বলেছে, খাসোগির নির্যাতন, জিজ্ঞাসাবাদ ও হত্যার ঘটনা তার হাতের এ্যাপেল ঘড়িতে রেকডিং হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঘড়িতে তাকে (খাসোগির) হত্যার পদ্ধতি রের্কড হয়ে থাকতে পারে।
পত্রিকাটি জানায়, অডিও রেকর্ডে প্রকাশ পায় যে, ইস্তাম্বুলস্থ দূতাবাসে নিয়োজিত সৌদি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মেদ আল-আইবি নির্যাতনের সময়ে নির্যাতনকারীদের বলেন, “দূতাবাসের বাইরে নিয়ে যেয়ে ঘটনাটি ঘটাও। তা না হলে তোমরা আমাকে বিপদে ফেলবে।”
তখন একজন নির্যাতনকারী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, “তুমি সৌদিতে যাবার পর জীবিত থাকতে চাইলে চুপ থাকো।”
তবে পত্রিকাটি কিভাবে অডিও টেপটি হাতে পেলো কিনা তা জানায় নি।
তবে মিডিল ইষ্ট আই নামক একটি ওয়েব-সাইট তুর্কি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, “রিয়াদ থেকে বিশেষ টিম খাসোগিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসেনি, তাকে হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিলো।”
সূত্রটি ইংলিশ ভাষার ওয়েব-সাইটকে জানায়, “বিশেষ টিমের একজন সদস্য টোবাইগ খাসোগিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার দেহ কাটতে থাকে। সাত মিনিটের মধ্যে খাসোগির মৃত্যু ঘটে।” হত্যাকারী টোবাইগ হত্যার সময় গান শুনছিলো।
তুর্কি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তার বাসভবন তল্লাশীর আগে রাষ্ট্রদূত ওতাইবি গত মঙ্গলবার তুরুস্ক ত্যাগ করে রিয়াদ চলে যায়।
গত সোমবার সিএনএন খবরে দুটি সূত্রের উদ্ধৃতিতে জানায় যে, সৌদি আরব সরকার একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে তাতে বলা হয়েছে, খারাপভাবে জিজ্ঞাসাবাদের সময় খাসোগির মৃত্যু ঘটে।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও নিখোঁজ সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগির বিষয়ে তুরস্কের নেতার সাথে কথা বলতে গতকাল বুধবার আঙ্কারায় গিয়েছেন।
এএফপি জানায়, এর আগে পম্পেও একই বিষয়ে কথা বলতে সৌদি আরব সফর করেন। সেখান থেকে তিনি আঙ্করায় আসেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িফ এরদোগানের সাথে তার বৈঠকের কথা রয়েছে।