সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৭ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

আগামীকাল পদ্মা সেতুর অগ্রগতি পরিদর্শন ও রেল সংযোগ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্পের অগ্রগতি এবং এর রেল সংযোগের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করতে আগামীকাল ১৪ই অক্টোবর পদ্মা সেতু এলাকায় যাবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহু প্রতীক্ষিত মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করতে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া, শরীয়তপুরের জাজিরা ও মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় যাবেন। পরিদর্শনকালে তিনি ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ প্রকল্পের’ আওতায় ঢাকার সাথে যশোরের রেল লিংক রোডের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বেলা ১১টার দিকে প্রথমে মাওয়ায় কাজের অগ্রগতি দেখবেন। এরপর ঢাকা-মাওয়া ও পাচর-ভাঙ্গা ৮ লেনের সড়কের কাজের অগ্রগতি দেখবেন এবং মাওয়ার দিকে রেল লাইন লিংকের কাজের উদ্বোধন করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী স্থায়ী নদী শাসন কার্যক্রমের প্রশিক্ষণ কর্মসূচী উদ্বোধন এবং মাওয়ার দিকের সেতুর সামগ্রিক কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করবেন। বেলা ১১টা ১৫মিনিটে তিনি মাওয়া গোল চত্বরে এক সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন।
দুপুরে প্রধানমন্ত্রী জাজিরা পয়েন্টে সেতুর কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করবেন। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিবচরে যাবেন এবং ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কাঠালবাড়ী ফেরী ঘাটে জনসমাবেশে ভাষণ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শনের আগে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল ১২ই অক্টোবর জাজিরার নওয়াডবা এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শনিবার পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে আসার কথা ছিলো। কিন্তু বিরূপ আবহাওয়ার কারণে তা পরিবর্তন করে রবিবার পরিদর্শনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর উভয় পাশে ৬০ ভাগ কাজের অগ্রগতির ফলক উন্মোচন করবেন। জাজিরা পয়েন্টে ৫টি এবং মাওয়া পয়েন্টে ১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। আরো ৫টি স্প্যান বসানোর কাজ চলছে।
রেল মন্ত্রণালয় সূত্রে জানাগেছে, ‘পদ্মা ব্রীজ রেল লিংক কনস্ট্রাকশন প্রজেক্ট’ এর মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ের কাজ জাজিরা ও শিবচর হয়ে মাওয়া ও ভাঙ্গার মধ্যে রেল সংযোগ স্থাপন করবে। আর পদ্মা বহুমুখী সেতুর মাধ্যমে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও যশোরের মধ্যে বৃহত্তর সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে।
চীন সরকার মনোনীত নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিঃ জিটুজি পদ্ধতির আওতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ ব্যাপারে চীনা এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ২৬৬৭ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলারের একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ২৩ কিলোমিটার এলিভেটেড সেতুপথ নির্মিত হবে। এই সেতুপথে একাধিক লিফটসহ দুটি প্লাটফর্ম, একটি মেইন লাইন ও দুটি লুপ লাইন নির্মাণ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সালের ১২ই ডিসেম্বর শরীয়তপুরের জাজিরা ও মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় মূল সেতু নির্মাণ ও রিভার ট্রেইনিং কাজের উদ্বোধন করেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নয়া দিগন্তের সূচনা হবে এবং দক্ষিণাঞ্চলের ১৯টি জেলার প্রায় ৬ কোটি মানুষের জীবনযাত্রায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। শুধু তাই নয়, রাজধানী ঢাকাসহ সমগ্র দেশের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাসমূহের লোকদের দীর্ঘ ভোগান্তি লাঘব হবে। দেশের অন্য প্রান্তে যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাদের যাত্রার সময় দুই থেকে তিন ঘণ্টা কমে যাবে।
কংক্রীট ও ইস্পাত কাঠামোয় তৈরী দুই স্তরের পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন আর নীচ দিয়ে চলবে রেল। সরকার ৩০ হাজার কোটি টাকার নিজস্ব তহবিলে দেশের সর্ববৃহৎ ‘পদ্মা সেতু’ নির্মাণ করছে। মূল সেতু, নদী শাসন, দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণসহ ৫ ভাগে সম্পন্ন হচ্ছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ। এই সেতুতে থাকবে মোট ৪২টি পিলার। এগুলোর প্রতিটি ৬টি পাইলের ওপর দন্ডায়মান থাকবে। পিলারগুলোর ওপরে বসানো হবে ইস্পাতের স্প্যান। সেতুতে মোট ৪১টি স্প্যান বসবে।
নদী শাসন কাজে নিয়োগ করা হয়েছে চীনের সিনোহাইড্রো কর্পোরেশনকে এবং দুই অ্যাপ্রোচ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিঃ। এই সেতুর নির্মাণ কাজ তদারক করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বুয়েট ও কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশন এন্ড এসোসিয়েটস। এই সেতু নির্মাণের ফলে দেশের বাণিজ্য, উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!