রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩২ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

রোগ প্রতিরোধে গবেষণা বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর॥সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের ভিত্তি স্থাপন

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ মানুষ যাতে সুস্থ থাকতে পারে, সেজন্য সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে গবেষণা বাড়াতে চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সুপার স্পেশালাইজড’ হাসপাতালের নির্মাণ কাজের ভিত্তি স্থাপন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অব এক্সিলেন্সের আওতায় আরও কয়েকটি নতুন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। ডাক্তার, নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণকে চিকিৎসাসেবা দিতে নিজেদেরকে উৎসর্গ করতে হবে। তাহলে এ বিশ্ববিদ্যালয় তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে।’ তিনি বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করবেন সে আহ্বান আমি জানাই। আপনাদের আরও গবেষণার প্রতি জোর দিতে হবে এবং মানুষের যাতে রোগ না হয় সে ব্যাপারেও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে, স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আর সেজন্য সরকারের তরফ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের অধীনে বাংলাদেশে প্রথম এই ‘সুপার স্পেশালাইজড’ হাসপাতালটি নির্মাণ করা হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতায়। ১৩ তলা ভবনে অত্যাধুনিক এই হাসপাতালে এক ছাদের নিচেই মিলবে সবধরনের স্বাস্থ্যসেবা উদ্বোধনের আগে প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক জুলফিকার রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মা ও শিশুর সব ধরনের সেবা এ হাসপাতালে এক জায়গায় পাওয়া যাবে। এখন আমাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়, এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছোটাছুটি করতে হয়। কিন্তু এখানে সব ধরনের রোগের জন্য আলাদা আলাদা কেন্দ্র থাকবে, ফলে একটি জায়গাতেই সব সেবা দেয়া সম্ভব হবে।’ তিনি জানান, নতুন এই হাসপাতালে সেন্টার ফর স্পেশালাইজড অটিজম এ্যান্ড মেটারনাল এ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, ইমারজেন্সি মেডিক্যাল কেয়ার সেন্টার, হেপাটোবিলিয়ারি এ্যান্ড গ্যাস্ট্রোএনটারোলজি সেন্টার, কার্ডিও এ্যান্ড সেরিব্রো-ভাসক্যুলার সেন্টার, কিডনি সেন্টার এবং রেসপিরেটরি মেডিসিন সেন্টারসহ আরও কয়েকটি সেন্টার থাকবে। ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাবেক ইনস্টিটিউট অব পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল রিসার্চকে (আইপিজিএমআর, পিজি হাসপাতাল নামে পরিচিত) বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করা হয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই অধ্যাধুনিক এ হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে যেখানে ২৪ ঘণ্টা জরুরী সেবাও পাওয়া যাবে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই, এ বিশ্ববিদ্যালয় আরও উন্নত হোক। আমি আশা করি, আমাদের চিকিৎসক সমাজ গবেষণা করে চিকিৎসাক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারবেন। এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মেডিক্যাল শিক্ষার নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে আমি আশা করি।’ বিএসএমএমইউর উত্তর পাশে ৩ দশমিক ৪ একর জমিতে এক হাজার ৩৬৬ কোটি টাকায় নির্মাণ করা হবে এই হাসপাতাল। এই ব্যয়ের মধ্যে এক হাজার ৪৭ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার। অর্থায়নে সহয়োগিতার জন্য কোরিয়া সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি একটি গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত হবে। শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা, গবেষণার গুণগত মানোন্নয়নে নিরলস কাজ করার জন্য বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চিকিৎসা সেবাটা গ্রাম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছি। প্রত্যেকটা হাসপাতালে ওয়েব ক্যামেরা ব্যবহার হচ্ছে। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। মানুষকে যেন অহেতুক ঢাকা শহরে আসতে না হয়, জায়গায় বসে যেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাসেবা পায় সে সুযোগ সৃষ্টির পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। ‘আমরা চাই দেশটা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাক। বাংলাদেশ বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলুক, আমরা সেটাই চাই।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেকে ধনী হয়েছেন। তাদের হাঁচি-কাশি হলে বিদেশে যেতে চায়। আমি মনে করি, যারা অনেক অর্থশালী বা সম্পদশালী, তারা যদি বিদেশে যান, আমার আপত্তি নেই। আমার এখানকার যারা সাধারণ মানুষ, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তরা একটু জায়গা পাবে, চিকিৎসা করার সুযোগ পাবে।’ প্রতিটি বিভাগে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রতিশ্রুতি আবারও তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি। সিলেটের আইনও পাস হবে।’ মেডিক্যাল কলেজগুলোতে পড়ালেখার মান ঠিক রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, প্রাইভেট অনেক মেডিক্যাল কলেজ হয়ে যাচ্ছে, সেখানে আদৌ কোন পড়াশোনা হচ্ছে কি না? সত্যিকারের ডাক্তার তেরি হচ্ছে, না রোগী মারা ডাক্তার হচ্ছে সেটাও আমাদের দেখা দরকার। একমাত্র মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় পারবে সেটা নজরদারিতে রাখতে। যাতে মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থাটা আমরা করতে চাই। চিকিৎসা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন করতে চাই। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে বর্তমানে ১৯০০ শয্যার হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার সুযোগ রয়েছে, যার ৪৫ শতাংশ দরিদ্র রোগীদের জন্য সংরক্ষিত থাকার কথা। এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন সাত থেকে আট হাজার রোগী এবং আরও হাজার খানেক রোগী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সেবা নিয়ে থাকেন। এ হাসপাতালে ৩০ টাকার টিকেট কেটে যেসব রোগীর সেবা নেয়ারও সক্ষমতা নেই, তাদের জন্য একটি তহবিল তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রী দুই দফায় ১৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে আরও ১০ কোটি টাকা অনুদান দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বিএসএমএমইউ-এর উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!