॥মোক্তার হোসেন॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কলিমহর জহুরুন্নেছা স্কুল এন্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আসাদুজ্জামান খান চুন্নুর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গতকাল ২৯শে জানুয়ারী সকালে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
দুই দফায় মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পাংশা পৌরসভার কেন্দ্রীয় গোরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন করা হয়।
জানাযায়, গত শনিবার দুপুরে পাংশা শহরের নারায়নপুর এলাকার বাসাবাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান চুন্নুর পৈত্রিক বাড়ী উপজেলার যশাই ইউপির উদয়পুর গ্রামে। তার স্ত্রী সফুরা খাতুন পাংশার মাছপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
গতকাল রবিবার সকালে মরহুমের মৃতদেহ উদয়পুর গ্রামের বাড়ীতে নেওয়া হয়। সকাল ৮টায় যশাই ইউপির উদয়পুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে জানাজার নামাজের আগে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন রাজবাড়ী-২ আসনের প্রাক্তন জাতীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন মোমেন, রাজবাড়ী-২ আসনের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও পাংশা উপজেলা পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খান রবি, মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মোঃ ওমর আলী ও মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
পরে সকাল ১০টায় পাংশা জর্জ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের কফিনকে সামনে রেখে চৌকস পুলিশের একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এ সময়ে বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।
পাংশা জর্জ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয়বার জানাযা নামাজের আগে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে রাজবাড়ী-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম, রাজবাড়ী-২ আসনের প্রাক্তন জাতীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন মোমেন, রাজবাড়ী-২ আসনের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন মিয়া, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাংশা সরকারী কলেজের উপাধ্যক্ষ একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ, পাংশা উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরিদ হাসান ওদুদ ও পাংশা জর্জ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে.এম নজীব উল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মরহুমের কফিনে জাতীয় পতাকা দিয়ে আচ্ছাদিত করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ মরহুমের কফিনে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
নামাজে সরকারী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন। দ্বিতীয়বার জানাজার নামাজ শেষে পাংশা পৌরসভার কেন্দ্রীয় গোরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন করা হয়।
উল্লেখ্য, মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান চুন্নু দীর্ঘদিন যাবত ডায়াবেটিস ও কিডনী জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র সন্তান, তিন বোনসহ বহু আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাতের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের কাছে দোয়া কামনা করা হয়েছে।