॥আবুল হোসেন॥ আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে অতিরিক্ত গাড়ীর কারণে দৌলতদিয়া ঘাটে গত কয়েকদিন ধরে বাড়তি চাপের সৃষ্টি হচ্ছে। কোরবানীর পশুবাহী গাড়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করায় যাত্রীবাহী বাস ৯/১০ ঘন্টা এবং সাধারণ পণ্যবোঝাই গাড়ী ২/৩ দিন ধরে ঘাটে আটকে থাকছে। চাপ কমাতে গাড়ীর একটি লাইন করায় তা আরও দীর্ঘ হচ্ছে।
অন্যদিকে গতকাল ১৯শে আগস্ট থেকে রাজধানী ঢাকার যাত্রীরাও ছুটতে শুরু করেছে। এসব যাত্রী মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে নদী পাড়ি দিয়ে আসার পর দৌলতদিয়া ঘাটে নেমে দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে তবেই গাড়ীর নাগাল পাচ্ছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শত শত যাত্রী।
গতকাল রবিবার দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, ফেরী ঘাট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের প্রায় খানখানাপুর পর্যন্ত ৮কিলোমিটার ব্যাপী গাড়ীর দীর্ঘ লাইন। পশুবাহী গাড়ী, যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য গাড়ী রয়েছে। গাড়ীর দীর্ঘ লাইন থাকায় ঘাট থেকে প্রায় চার-পাঁচ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দের পদ্মার মোড় এলাকায় লোকাল বাসের যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। এসব যাত্রীরা বিকল্প যানবাহন না পেয়ে দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে ঘাটে পৌঁছাচ্ছে। বিপরীতে পাটুরিয়া থেকে নদী পাড়ি দিয়ে আসার পর দৌলতদিয়ায় নেমে যাত্রীরা গাড়ীর সন্ধানে টার্মিনালের দিকে হেঁটে আসছে। ঘাট থেকে মহাসড়ক জুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বাড়তি পুলিশ আনা হয়েছে।
খুলনা থেকে আসা একটি বাসের চালক আব্দুল আউয়াল জানান, তাদের বাসটি গত রাত ১১টার দিকে ঘাট থেকে প্রায় ৮কিলোমিটার দূরে খানখানাপুর রেলগেটে পৌঁছালে পুলিশ এক লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখে। প্রায় ১০ ঘন্টা পার হলেও তারা ফেরীর নাগাল পাননি। তার মতে অন্তত পাঁচ শতাধিক যাত্রীবাহী বাস এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকছে।
কুষ্টিয়া থেকে আসা গরুর বেপারী আব্দুল হেলাল বলেন, গত শনিবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে ১৭টি গরু নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। ৫ঘন্টা আটকে থাকার পরও ফেরীর নাগাল পাইনি। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় তার ৩টি গরু খুবই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। তার মতো অনেক গাড়ীতে থাকা গরুর বেপারীদেরও প্রায় একই অবস্থা।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক(বাণিজ্য) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, দৌলতদিয় ঘাট দিয়ে প্রচুর গাড়ী পারাপার হচ্ছে। শনিবার ভোর ৬টা থেকে রবিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ৭৯৩টি বাস, ১হাজার ২০৯টি ট্রাক ও ১হাজার ৪৭০টি ছোট গাড়ী পার হয়। নদীতে তীব্র স্রোত থাকার কারণে ফেরী পারাপারে দ্বিগুণ সময় লাগছে। এছাড়া শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ী নৌপথের অনেক গাড়ীও এই পথে আসায় এবং পশুবোঝাই গাড়ীর জন্য ঘাটে চাপের সৃষ্টি হচ্ছে।