॥কাজী তানভীর মাহমুদ॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারী সার্জনসহ গুরুত্বপূর্ণ ৫টি পদ শূন্য রয়েছে প্রায় এক বছর ধরে। ফলে উপজেলার গবাদী পশু ও হাঁস-মুরগীর চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন খামারীরা।
বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সুত্রে জানাগেছে, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ২২৬টি গবাদী পশুর খামার, ১৪৬টি হাঁস-মুরগীর খামার, ২৫টি টার্কির খামার, ১০৯টি ঘাস চাষ প্রকল্প এবং ২১টি এনএটিপি সমিতি রয়েছে। প্রতিদিন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে গড়ে ৫০টি গবাদী পশু ও দেড়শ থেকে দুইশ হাঁস-মুরগীর চিকিৎসা দিতে হয়। এছাড়া পরিদর্শনও করতে হয় বিভিন্ন খামার ও ফার্ম। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য থাকায় সেবা প্রদান কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মনিরুল ইসলাম ও সেপ্টেম্বর মাসে ভেটেরিনারী সার্জন ডাঃ খায়েরুজ্জামান বদলী হয়ে অন্যত্র চলে যান। এরপর থেকেই গুরুত্বপূর্ণ পদ দুটি শূন্য রয়েছে। এছাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ সহকারী, ড্রেসারও নেই বহুদিন। অফিস সহকারী আনছার আলী প্রেষণে অন্যত্র দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে পাংশা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ সপ্তাহে দুই দিন বালিয়াকান্দি কার্যালয়ে এসে দায়িত্ব পালন করছেন, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
বালিয়াকান্দি উপজেলার আনন্দ নগর গ্রামের খামারী সুভাষ মজুমদার বলেন, আমার দুগ্ধ খামারে প্রতিদিন একশ লিটারের মত দুধ উৎপাদন হয়। উপজেলা প্রাণি সম্পদ হাসপাতালে ডাক্তার না থাকায় গবাদী পশুর চিকিৎসা করানোয় খুব সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। জরুরী ভিত্তিতে অফিসের জনবল সংকট দূর করলে উপজেলার খামারীরা উপকৃত হবে।
বহরপুরের মিরাকেল এগ্রো মাল্টি ফার্মের মালিক মোঃ মনিরুজ্জামান খান মালেক বলেন, আমার খামারে মাছ চাষ, হাঁসের খামার, গরুর খামার, মুরগী, টার্কি, কবুতর রয়েছে। কিন্তু প্রাণী সম্পদ অফিসের কোন লোক কখনোই খামার পরিদর্শনে আসেনি।
বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের উপ-সহকারী মোঃ আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন ৫০/৬০টি গবাদি পশু ও দেড়শ থেকে দুইশ হাঁস মুরগীর চিকিৎসা দিতে হয়। এছাড়া পরিদর্শনেও যেতে হচ্ছে। যারা আছি মিলেমিশে কাজ করার চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে রাজবাড়ী জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য থাকায় সমস্যাতো হচ্ছেই। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা বা ভেটেরিনারী সার্জন থাকলে এ সমস্যা হতো না। তবে বালিয়াকান্দিতে ভেটেরিনারী সার্জনের বাসভবনটি বসবাসের অযোগ্য বলে অনেকে সেখানে গিয়ে থাকতে চায় না। আমরা শূন্য পদ পূরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়িই পদগুলো পূরণ হবে।