॥শিহাবুর রহমান/কবির হোসেন॥ বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা ও জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উদযাপিত করা হলো ডাঃ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ২১বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল ২১শে জানুয়ারী দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন কলেজটির অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটি। অনুষ্ঠানে ফুলে ফুলে সংবর্ধিত করা হয় কলেজের প্রতিষ্ঠাতা জেলার কৃতি সন্তান গুনী ব্যক্তিত্ব ডাঃ আবুল হোসেনকে। এছাড়াও আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এডভোকেট এম.এ খালেক, পৌর মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) আজাদ রহমান বক্তব্য রাখেন।
কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল আলম দুলালের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, কলেজের সহকারী অধ্যাপক চৌধুরী আহসানুল করিম হিটু, প্রাক্তন ছাত্র ফকীর জাহিদুল ইসলাম রুমন ও সুমন পাটোয়ারী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানের মানপত্র পাঠ করেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক সানজিদা আক্তার। সঞ্চালনা করেন সহকারী অধ্যাপক শামীমা আক্তার মুনমুন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদেরকে একটা উদ্দেশ্যে নিয়ে আগাতে হবে। বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরন করতে হবে। ভালভাবে লেখাপড়া করতে হবে। তা না হলে বর্তমান প্রতিযোগিতার বিশ্বে টিকে থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষা বান্ধব সরকার। আমাদের সরকার বছরের প্রথম দিনে কোটি কোটি বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছে। সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিতি পাবে। এখন বাংলাদেশকে সবাই চেনে।
সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, অনেকেরই টাকা আছে কিন্তু দান করে না। ডাঃ আবুল হোসেন শুধু কলেজ প্রতিষ্ঠা করেই থেমে থাকেননি। তার বাড়ীটিও কলেজের নামে লিখে দিয়েছেন। আমিও ২কোটি ৬০হাজার টাকা ব্যয়ে এই কলেজের একটি ভবন করে দিয়েছি। আমাদের সরকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের উদ্যোগ নিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে এই কলেজটিও সরকারীকরণ হবে।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সংবর্ধিত অতিথি প্রবাসী চিকিৎসক ডাঃ আবুল হোসেন ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা ভালভাবে পড়া লেখা করবে। মানুষের মতো মানুষ হবে। কলেজটা যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে। কলেজটি সবার কাছে রেখে গেলাম। আপনারা দেখে শুনে রাখবেন।
ফকীর আব্দুল জব্বার বলেন, আমি গরীব ঘরের সন্তান ছিলাম। আমি ধরেই নিয়েছিলাম কিছু করতে হলে আমাকে হয়তো ভাল করে লেখাপড়া করতে হবে। নয়তো কাজ করতে হবে। আমি দুটোই করেছি। আমি শিক্ষিতও হয়েছি। আবার কাজও করি। আমি ৩৬হাজার মানুষকে নিয়ে কাজ করি। ডাঃ আবুল হোসেন একজন গুনী মানুষ। দানবীর মানুষ। উনাকে অনুসরন করতে হবে।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এডভোকেট এম.এ খালেক বলেন, তোমরা মাদককে না বলবে। তা না হলে ডাক্তার হওয়া যাবে না। ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যাবে না। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। শুধু পুলিশ দিয়ে মাদক নির্মূল করা যাবে না। তোমরা ইভটিজিং করবে। ভালভাবে লেখাপড়া করবে। খেলাধুলা করবে। তাহলে ভাল মানুষ হতে পারবে।
মহম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, ডাঃ আবুল হোসেন আমাদের পথ প্রর্দশক। উনার পথ আমাদের অনুপ্রেরণা। শিক্ষার্থী তোমরা শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করবে। ভাল করে লেখা পড়া করবে। এই কলেজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মোঃ আজাদ রহমান বলেন, শিক্ষার আলো প্রজ্বলিত করার জন্য যে মশাল আপনারা শিক্ষার্থীদের হাতে দিয়েছেন সেই মশাল আরো প্রজ্বলন করতে হবে। তোমরা ভাল মানুষ হবে। তোমরা আমাদের সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দেশকে এগিয়ে যাবে।