মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫২ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

জাল সনদ দিয়ে চাকুরী॥ডাঃ আবুল হোসেন কলেজ ও দুই মাদ্রাসার তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুদকের পৃথক মামলা

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৯ জুলাই, ২০১৮

॥শিহাবুর রহমান॥ জাল কম্পিউটার সনদ দিয়ে চাকুরী নিয়ে প্রায় অর্ধ কোটি সরকারী টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দের ৩জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
গত ১৭ই জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক আহামদ ফরহাদ হোসেন ও সহকারী পরিচালক মোঃ আবু সাঈদ বাদী হয়ে রাজবাড়ী ও গোয়ালন্দ থানায় ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন ঃ রাজবাড়ী শহরের ডাঃ আবুল হোসেন কলেজের প্রভাষক কাজী সদরুল আলম(৫৪), শহীদ আব্দুল হাকিম ক্যাডেট মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ দাউদ আলী(৪৪) ও গোয়ালন্দ উপজেলার জামতলা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন(৩৬)।
মামলা সুত্রে জানাযায়, বিগত ১৯৯৭ সালের ১০ই অক্টোবর দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় ডাঃ আবুল হোসেন কলেজের জন্য প্রভাষক পদে অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষকসহ একজন প্রভাষক(কম্পিউটার) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর একই সালের ১৭ই অক্টোবর রাজবাড়ী শহরের সজ্জনকান্দা এলাকার কাজী গোলাম এহিয়ার ছেলে কাজী সদরুল আলম প্রভাষক(কম্পিউটার) পদে আবেদন করেন। আবেদনের সময় তিনি বায়োডাটাসহ অন্যান্য শিক্ষাগত সনদের সাথে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সনদের সত্যায়িত কপি দাখিল করেন। পরবর্তীতে একই বছরের ১০ই নভেম্বর নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ১৬ই নভেম্বর তিনি ওই কলেজে যোগদান করেন। যোগদানের পর ২০০০ সালে কলেজটি এমপিওভূক্ত হলে তিনিও এমপিওভূক্ত হোন। এরপর থেকে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত তিনি সরকারী নিয়মানুযায়ী ওই কলেজ থেকে বেতনভাতা বাবদ ২৩লক্ষ ৪৩হাজার ২৭৭টাকা উত্তোলন করেন। পরবর্তীতে তার কম্পিউটার সনদ জাল বলে অভিযোগ উত্থাপিত হলে অনুসন্ধানে নামেন দুদক।
দুদকের অনুসন্ধানে চাকুরীর আবেদনের সময় কাজী সদরুল আলম বাংলাদেশ সরকারের নট্রামস কর্তৃক অনুমোদিত ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার ইব্রাহিমপুর স্টুডেন্ট কম্পিউটার সেন্টারের যে সনদটি দাখিল করেছিলেন সেটা জাল বলে প্রমানিত হয়। দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে গাজী সদরুল আলম জাল সনদ দিয়ে চাকুরী নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ওই কলেজ থেকে বেতন-ভাতা বাবদ ২৩লক্ষ ৪৩হাজার ২৭৭টাকা উত্তোলন করে সরকারী অর্থ আত্মসাত করেছেন।
এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক আহামদ ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে কাজী সদরুল আলমকে আসামী করে রাজবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন।
এছাড়াও বিগত ২০০৫ সালের ২৬শে জানুয়ারী দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার আহলাদীপুর শহীদ আঃ হাকিম ক্যাডেট মাদ্রাসার জন্য একজন সহকারী শিক্ষক বিপিএড কম্পিউটারসহ অন্যান্য শিক্ষক নিয়োগের নিমিত্তে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। বিজ্ঞপ্তির প্রকাশের পর সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মনদিয়া গ্রামের মৃত ইউছুফ মোল্লার ছেলে মোঃ আবু সাঈদ একই বছরের ৭ই ফেব্রুয়ারী সহকারী শিক্ষক বিপিএড কম্পিউটার পদে আবেদন করেন। আবেদনের সময় অন্যান্য সনদের সাথে তিনি ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি সনদের সত্যায়িত কপি দাখিল করেন। সনদটি ২০০০ সালে জাতীয় বহুমুখী সাঁটলিপি প্রশিক্ষণ ও গবেষনা একাডেমী (নট্রামস) বগুড়া থেকে ইস্যুকৃত ছিল। একই বছরের ১৫ই মার্চ তিনি ওই মাদ্রাসায় চাকুরীতে যোগদান করেন এবং ওই বছরের ১লা ডিসেম্বর তিনি এমপিওভূক্ত হোন।
পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে জাল সনদের অভিযোগ উঠলে অনুসন্ধানে নামে দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে তার কম্পিউটার সনদটিও জাল বলে প্রমানিত হয়। এভাবে তিনি জাল সনদ দিয়ে চাকুরী নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ২০০৫ সাল থেকে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত বেতনভাতা বাবদ ওই মাদ্রাসা থেকে উত্তোলনকৃত ১৩লক্ষ ২৫হাজার ৪৭২টাকা সরকারী অর্থ আত্মসাত করেন।
এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আবু সাঈদ বাদী হয়ে সহকারী শিক্ষক মোঃ দাউদ আলীকে আসামী করে রাজবাড়ী থানায় ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।
অপরদিকে, ২০০৪ সালের ১৭ই মে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় গোয়ালন্দ উপজেলার জামতলা দাখিল মাদ্রাসার জন্য একজন সহকারী শিক্ষক(কম্পিউটার) পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর রাজবাড়ী সদর উপজেলার ভগিরাথপুর গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন একই বছরের ২২ মে ওই পদের জন্য আবেদন করেন। আবেদনের সময় তিনি অন্যান্য শিক্ষাগত সনদের সাথে কম্পিউটার সনদের সত্যায়িত কপি দাখিল করেন। তিনি একই বছরের ১লা জুলাই ওই মাদ্রাসায় নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে যোগদান করেন এবং ২০০৫ সালের ১লা সেপ্টেম্বর তিনি এমপিওভূক্ত হোন। এরপর ২০১৭ সালের ১লা ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত তিনি ওই মাদ্রাসা থেকে বেতন-ভাতা বাবদ ১৩লক্ষ ৭৫হাজার ৪৮৭টাকা ৭৫ পয়সা উত্তোলন করেন। পরবর্তীতে এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের অনুসন্ধানে তার কম্পিউটার সনদটিও জাল বলে প্রমানিত হয়।
এ ঘটনায় দূর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক আহামদ ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আসামী করে গোয়ালন্দ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!