॥স্টাফ রিপোর্টার॥ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো নিজস্ব ভবন পেতে যাচ্ছে। দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর নতুন দশতলা ভবনটি হবে আওয়ামী লীগের স্থায়ী ঠিকানা। ৮কাঠা জায়গার উপর ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে বিশ্বমানের দলীয় কার্যালয়টি। পুরো কার্যালয়টি থাকবে ওয়াইফাই জোনের আওতায়।
আজ ২৩শে জুন সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে কেক কাটার মাধ্য দিয়ে নতুন ভবনে দলীয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় সুত্রে জানাগেছে, উদ্বোধনের সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে নতুন কার্যালয়ের চাবি তুলে দেবেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন শেষে সভাপতিমন্ডলী, যুগ্ম-সম্পাদকসহ অন্য নেতা ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জায়গা নির্ধারণ করে দেবেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য রাখা হয়েছে সুপরিসর কক্ষ। দলের সভাপতির কক্ষের সঙ্গে রয়েছে বিশ্রামাগার ও নামাজের জায়গা। এছাড়া ডিজিটাল লাইব্রেরী, ভিআইপি লাউঞ্জ, সাংবাদিক লাউঞ্জ, ডরমেটরী ও ক্যান্টিন থাকছে। দুই পাশ কাঁচ দিয়ে ঘেরা। এছাড়াও দু’টি স্বতন্ত্র কার পার্কিং, একাধিক লিফট, সিঁড়ি, অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে। ভবনটির ছয় বা সাততলা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অফিস থাকবে।
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ বলেন, ২৩শে জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। তাই এদিনই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের পুরনো অফিস ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের চারতলা ভবনটির লিজ গ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয় ২০১১ সালে। এরপর দলটি নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ৬ই এপ্রিল নতুন কার্যালয়ের ভবনের নকশা অনুমোদন দেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। একই বছরের ১৭ই জুলাই পুরনো স্থাপনা ভাঙা শুরু হয়। রাজধানীর গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের ১০তলা আধুনিক কার্যালয়টির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয় গত বছরের ২৩শে জুন। কার্যালয়ের সামনে স্টিলের বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’। পাশেই দলীয় প্রতীক নৌকা। সবার উপরে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। এরপর রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের ম্যুরাল। দুই পাশ কাঁচ দিয়ে ঘেরা।
আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, নতুন ভবন উদ্বোধনের পর আওয়ামী লীগের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম চলবে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউর এ কার্যালয় থেকে। আর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয় থেকে দলের নির্বাচনী কার্যক্রম ও সিআরআইসহ দলের অন্যান্য সংস্থার গবেষণামূলক কর্মকান্ড পরিচালিত হবে।
ভবনটির সামনের দেয়ালজুড়ে দলের সাইনবোর্ডসহ দলীয় শ্লোগান ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’, চার মূলনীতি খোদাই করে লেখা। ভবনের সামনে-পেছনে ছেড়ে দেওয়া জায়গায় হবে বাগান। এ ভবনের সামনে ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে স্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ভবনটির প্রথম থেকে তৃতীয়তলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোর ৪হাজার ১০০ বর্গফুটের। চতুর্থতলা থেকে উপরের সব ক’টি ৩হাজার ১০০ বর্গফুটের।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে আওয়ামী লীগের নতুন ভবন উদ্বোধন দলের নেতাকর্মীদের বাড়তি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। আওয়ামী লীগের নিজস্ব ফান্ড থেকে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হলেও নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্মাণ খরচ বেশ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।