॥আশিকুর রহমান॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের জালদিয়া বালুচর গ্রামে রাস্তার কাজের বিটুমিন গলানোর চুলার আগুনে পুড়ে নয়দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে খাদিজা খাতুন(৩) নামে একটি শিশু মারা গেছে। শিশুটির পরিবার ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির ফলে সে অগ্নিদগ্ধ হয়।
গতকাল ২রা জুন দুপুরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় শিশুটি। সে জালদিয়া বালুচর গ্রামের শহর আলী শেখের মেয়ে।
শিশুটির মা আছমা বেগম বলেন, সুলতানপুর ইউনিয়নের কৈজুরির মোড় এলাকা থেকে সদরদী এলাকা পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছিলো। কাজটি করছিলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ঠিকাদার লুৎফর রহমান চুন্নু। আমাদের বাড়ির পাশেই চুলা কেটে শ্রমিকরা বিটুমিন গলাচ্ছিলন। গত ২৪শে মে সেই চুলার আগুন ফেলা হয় রাস্তার পাশেই একটি মাঠে। ওইদিন বিকেলে আমার মেয়ে মাঠে খেলতে গিয়ে সেই আগুনে পুড়ে গুরুতর দগ্ধ হয়। তাৎক্ষনিক তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নয়দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল ২রা জুন দুপুর ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মানিকগঞ্জ এলাকায় পৌঁছালে সে মারা যায়।
আছমা বেগম আরও বলেন, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তার পাশেই দু’টি পুকুর রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন যদি আগুন পুকুরে ফেলতো বা পানি দিয়ে আগুন নিভিয়ে রাখতো তাহলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটতো না।
খাদিজার বাবা শহর আলী বলেন, দুর্ঘটনার পর ঠিকাদার চুন্নু আমাদের মাত্র ৫০০ টাকা দেন। এরপর তিনি আমাদের আর কোনো খোঁজ-খবর নেননি। ফরিদপুরের ডাক্তাররা আরও আগেই আমার মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু টাকার অভাবে আমি নিতে পারিনি। আজ বিনা চিকিৎসায় আমার মেয়েটি মারা গেল।
স্থানীয় বেশ কয়েকজন নারী অভিযোগ করে বলেন, এটি একটি জনবসতি এলাকা। এখান দিয়ে সবসময় শিশুরা যাতায়াত ও খেলাধুলা করে। রাস্তার কাজ করে জলন্ত আগুন ফেলে রাখায় এখানে এর আগেও একটি শিশু দগ্ধ হয়। খাজিদা দগ্ধ হবার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন তরিঘরি কাজ শেষ করে এই এলাকা থেকে চলে যায়। তাদের গাফিলতির কারণেই আজ খাদিজাকে জীবন দিতে হলো।
এদিকে এ বিষয়ে কথা বলতে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঠিকাদার লুৎফর রহমান চুন্নুর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কয়েকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।