বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

গোয়ালন্দে জনগনের মুখোমুখি সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তারা

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৮ মে, ২০১৮

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ গতকাল সোমবার বেলা এগারটা। ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ ছুটে আসছে। ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় বসানো টেবিল ও পাশে চেয়ার রয়েছে। বারান্দার সামনে ও দুই পাশে বেশ কিছু চেয়ার বসানো। যুবক, তরুন, শিক্ষার্থী, কৃষক, অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ নানা পেশার মানুষ জড়ো হচ্ছে। সবার উদ্দেশ্য একটি তারা আজ শুনাবে এলাকার সমস্যার কথা। উত্তর খুঁেজ নিবে উপস্থিত ৩২টি সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।
গতকাল ৭ই মে “চলো যাই গাঁয়ের পথে” শিরোনামে এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ৪নং উজানচর ইউনিয়ন পরিষদে। জনসেবাকে জনগনের দোরগোড়ায় পৌছে দিতে গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতা করেছে উজানচর ইউনিয়ন পরিষদ।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু নাসার উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নুরুল ইসলাম।
অন্যান্যের মধ্যে সহকারী কমিশনার(ভূমি) শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস পারভীন, জেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য নুরজাহান চৌধুরী, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফকির, দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আতর আলী সরদারসহ উপজেলার ৩২টি সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ।
শুরুতে ইউএনও উপজেলার ৩২টি দপ্তরের কর্মকর্তাদের পরিচয় জনগনের সামনে তুলে ধরেন। এ সময় তিনি বলেন, নিজ দপ্তরে বসে না থেকে জনগনের দোরগোড়ায় জনসেবা পৌছে দিতে প্রত্যেক কর্মকর্তার উচিত ইউনিয়ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া। তারা জানুক এলাকার সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারী কোন দপ্তরের যেতে হবে। সাধারণ নাগরিকরা যখন বুঝতে পারবে তার সমস্যার জন্য অমুক দপ্তরে যেতে হবে, তাহলে সহজে সমাধানের পথ খুঁজে পাবে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উজানচর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফকির।
পরিচয় পর্ব শেষে সহকারী কমিশনার(ভূমি) শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ তার দপ্তরের কাজ কি জনগনের সামনে তুলে ধরেন। উপস্থিত মানুষজন সমস্যা ও সমাধান নিয়ে তার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়তে থাকে। মঙ্গলপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আদালতে দৌড় পারছেন। সমাধানে ইউনিয়ন পরিষদে অনেকবার ঘুরেও কাজ হচ্ছে না। সমাধান কি? জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার বলেন, আদালতে জমি সংক্রান্ত মামলা থাকলে আপাত দৃষ্টিতে ইউনিয়ন পরিষদ সহজে সমাধান করতে পারেনা। আদালত থেকে সমাধান হয়ে আসবে।
মমতাজ বেগম নামের এক নারী নেত্রী প্রশ্ন ছুড়েন, আমার এক নিকট জনের মাত্র ২০শতাংশ জমি নামজারি করতে প্রায় ১০হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু কেন? নাম জারি বা মিটিশন করতে কত টাকা লাগে?
জবাবে সহকারী কমিশনার বলেন, নাম জারি করতে জমির দলিল প্রতি সরকারি ফি লাগবে ১,১৭৫টাকা। এর বেশি কেউ দাবী করলে বা নিলে আমাদের জানাবেন এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেউ হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা নিতে গেলে একটি সিরিঞ্জ পর্যন্ত কিনতে হয়। তেমন ঔষুধপত্র দেয়া হয় না। কারণ কি? মাত্র ২০০ফুট রাস্তা খারাপ থাকায় মঙ্গলপুর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। রাস্তা কবে হবে? সরকারী বিধি মোতাবেক ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেওয়া যায়না, কিন্তু ১২/১৩ বছরের অনেক শিশুর বয়স ১৮ বছর তৈরী করে বা সনদ বের করে বাল্যবিবাহ দিচ্ছে। এর প্রতিকার কি? সরকার টিউশিন ফি নামক ভর্তুকি দিয়ে থাকেন সব প্রতিষ্ঠানে। এই টাকাটা মূলত কার। প্রতিষ্ঠানের না শিক্ষকদের? এমন নানা ধরনের প্রশ্ন ছুড়তে থাকে।
উপস্থিত কর্মকর্তারা যথাযথ উত্তর প্রদান করেন। আমার অনেকে লিখিত আকারে প্রশ্ন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠান। সে ব্যাপারে তারা পরে লিখিতভাবে জানানোর কথা ঘোষণা দেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম নুরুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠান রাজবাড়ী জেলায় প্রথম তথা দেশের অনেক স্থানে হয়নি বললেই চলে। এ ধরনের অনুষ্ঠান চলমান থাকলে সরকারী দপ্তরের কাজের জবাবদিহিতা আরো স্বচ্ছ হবে। জনগন উপকৃত হবে। এজন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাসার উদ্দিন বলেন, সারা দেশের মধ্যে তিনি প্রথম টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলায় থাকা অবস্থায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে করেছিলেন। দ্বিতীয়বার করছেন গোয়ালন্দে এসে। তার মতে, জনগনের প্রাপ্য অধিকার শতভাগ পূরন হোক। কাজের জবাবদিহিতার সাথে স্বচ্ছতা বাড়বে। কাজের সমাধানও দ্রুত খুঁজে পাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!