মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ হুমকীর মুখে ॥ নদীর পাড়ের ৬০মিটার সিসি ব্লকে ধ্বস

  • আপডেট সময় শনিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৭

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের বলিতা এলাকায় আকস্মিকভাবে পদ্মা নদীর প্রায় ৬০মিটার সিসি ব্লকের পাড় ধ্বসে পড়েছে। এতে হুমকীর মুখে পড়েছে বলিতা বাইতুন নুর জামে মসজিদ ও শহর রক্ষা বেঁড়ি বাঁধ।
গতকাল ৬ই জানুয়ারী ভোরে এ ঘটনা ঘটে। নদী থেকে বালু উত্তোলন ও পাড়ে বিশাল স্তুপ করে রাখার কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম সরদার জানান, পদ্মা নদী থেকে উত্তোলনকৃত বালু বলগেট দিয়ে বলিতা এলাকায় নদীর পাড়েই স্তুপ করে ব্যবসা করে আসছে উড়াকান্দার এলাকার কুদ্দুস ও তার সহযোগিরা। সেখান থেকে ট্রাকে লোড দিয়ে বিক্রি করা হতো এ বালুগুলো। একদিকে লোড ট্রাকের চাপ ও অন্য দিকে বালু থেকে পানি ঝরে নদীতে পড়ায় সিসি ব্লকের নিচের বালু গুলো সড়ে যায়। ফলে গতকাল ৬ই জানুয়ারী ভোরের দিকে বিশাল অংশ নিয়ে সিসি ব্লকের নদীর পাড় ধসে নদী গর্ভে চলে যায়। এতে হুমকীর মুখে পড়ে বলিতা বাইতুন নুর জামে মসজিদ ও শহর রক্ষা বেড়ি বাঁধ।
মিজানপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আতিয়ার রহমান জানান, নদীর পাড় ধ্বসের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে অবগত করেছেন।
বরাট ইউপির চেয়ারম্যান শেখ মনিরুজ্জামান সালাম জানান, পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার ফুট বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে ইতোমধ্যেই বরাট ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ না হওয়ায় গতকাল শুক্রবার ভোরে বলিতা এলাকায় সিসি ব্লক দ্বারা নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পের প্রায় ৬০মিটার পাড় ধ্বসে নদী গর্ভে চলে যায়।
এদিকে বিকেলে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরাম আলী, নবনির্বাচিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল জব্বার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোঃ মানোয়ার হোসেন মোল্লা, সহকারী কমিশনার(ভূমি) আ.ন.ম আবু জর গিফারী ও পানি উন্নয়নের বোর্ডের কর্মকর্তারা।
এ সময় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা ও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ প্রদান করেন।
স্থানীয় লক্ষীকোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সেলিম জানান, অনেক বছর ধরেই উড়াকান্দা থেকে গোদার বাজার ঘাট পর্যন্ত প্রায় ১০কিলোমিটার এলাকায় প্রভাবশালী মহল নদীর তীর থেকে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করে আসছে। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে একাধিকবার জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। বালি উত্তোলনের ফলে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ এখন হুমকির মুখে।
স্থানীয় বরু বেগম(৫৫) জানান, ছোট বেলা থেকেই নদী পাড়ের মানুষ তারা। নদীর ভাঙ্গা গড়া দেখেই বড় হয়েছেন। কিন্তু নদী আজ বড় অসহায় হয়ে পড়েছে বালি তোলা ব্যবসায়ীদের কাছে। তাদের নিষেধ করলে প্রাণ নাশের হুমকি  দেয়। বাঁধ ভেঙ্গে গেলে খোলা আকাশের নিচে দাড়াতে হবে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী গৌরপদ সূত্রধর জানান, নদীর তীর থেকে বালি উত্তোলন এবং নদী পাড়ে বালি স্তুপ করে রাখার ফলে এমন ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে চলছে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন। আর এ বালু উত্তোলনকে ঘিরে জৌকুড়া থেকে উড়াকান্দা পর্যন্ত নদীর পাড় দিয়ে বালুর পাহাড় বানিয়ে রেখেছে ব্যবসায়ীরা। পদ্মা নদী থেকে প্রতিবছর বালু উত্তোলনের ফলে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফসলী জমি ও বসতবাড়ী ঘর। আর বালু বাহী ১০চাকার লোড ট্রাক অতিমাত্রায় যাতায়াতের ফলে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা ও বাঁধ। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব ব্যবসা চললেও দেখছে না কেউ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!