॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার পশ্চিম উজানচর মৃধাডাঙ্গা গ্রামে জমি দখলে বাঁধা দেয়ায় মারপিট করে দাঁত ফেলে দেয়া পিতা-পুত্র ও তাদের স্বজনদের বিরুদ্ধে আসামী পক্ষ কর্তৃক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে।
গত ৮ই জানুয়ারী পশ্চিম উজানচর মৃধাডাঙ্গা গ্রামের আলিম সরদার(৩৫), মন্সুফ মৃধা(৩৫), রুবেল মৃধা(৩৫), সাগর মৃধা(৩৫) ও সাইদুল মৃধা(২৯) একই গ্রামের অটোরিক্সা চালক বাবু আহম্মেদ (৩২)দের দেড় শতাংশ জমি দখল করে ঘর নির্মাণ করতে গেলে বাবু আহম্মেদ ও তার পিতা আব্দুর রশিদ তাদেরকে বাঁধা দেয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে তারা বাবু ও রশিদকে বেধড়ক মারপিট করে তাদের দাঁত ফেলে দেয়। পরে আহত পিতা-পুত্রকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ওই ঘটনায় বাবু আহম্মেদ বাদী হয়ে উল্লেখিতদের বিরুদ্ধে গত ১৬ই জানুয়ারী গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা নং-১৪, ধারা ঃ ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৩৫৪/৫০৬ দঃ বিঃ দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়ালন্দ ঘাট থানার এস.আই মোঃ ওলিয়ার রহমান তদন্ত শেষে গত ২২শে ফেব্রুয়ারী ৫জন আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। বর্তমানে আসামীদের মধ্যে মন্সুফ মৃধা, সাগর মৃধা ও সাইদুল মৃধা জামিনে এবং আলিম সরদার ও রুবেল মৃধা জেল হাজতে রয়েছে।
অপরদিকে এ মামলা থেকে বাঁচতে এবং বাবু আহম্মেদ ও তার পিতা আব্দুর রশিদসহ অন্যান্য স্বজনদের হয়রানী করার জন্য প্রধান আসামী আলিম সরদারের মা এসনাহার বেগম বাদী হয়ে গত ১৪ই জানুয়ারী রাজবাড়ীর ২নং আমলী আদালতে একটি পাল্টা মামলা (মিস.পি-২৪/২০১৮, ধারা ঃ ৪৪৮/৩২৩/৩৮০/৩৭৯/৪২৭/৩৫৪/৫০৬(২) দায়ের করেন। মামলায় বাবু আহম্মেদ ও তার পিতা আব্দুর রশিদসহ চাচা জসিম উদ্দিন ডাক্তার, এলাহী ডাক্তার ও মানিক ডাক্তারসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫জনকে আসামী করা হয়।
মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মারধর, ভাংচুর ও লুটপাটের মিথ্যা অভিযোগ করা হয়। বিজ্ঞ আদালত মামলার বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য গোয়ালন্দ উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তাকে আদেশ দেন। কিন্তু আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা তদন্তের নামে বাদী পক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করেন। আগামী ৬ই মে মামলাটির ধার্য্য তারিখ রয়েছে। এ বিষয়ে বাবু আহম্মেদের চাচা জসিম উদ্দিন এ মামলার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী করেন।
এছাড়াও এসনাহার বেগম বাদী হয়ে গত ৬ই ফেব্রুয়ারী রাজবাড়ীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাবু আহম্মেদ এবং তার চাচা জসিম উদ্দিন ডাক্তার, আনিসুর রহমান, এলাহী ডাক্তার ও চাচাতো ভাই ইবাদত ডাক্তারের বিরুদ্ধে ফৌজদারী কার্যবিধির ১০৭ ধারায়(মিসপি-১০১/২০১৮) আরেকটি হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করেন।
এই ২টি হয়রানীমূলক মামলার পাশাপাশি আলিম সরদার গং ষড়যন্ত্রমূলকভাবে নিজেদের বাগানের কলাগাছ কেটে বাবু আহম্মেদদের বিরুদ্ধে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশ অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে মামলা নেয়নি। এসব মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দিয়ে হয়রানীর পাশাপাশি আলিম সরদার গং নিরীহ বাবু আহম্মেদ এবং তার বাপ-চাচাসহ স্বজনদের অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে চলেছে।
এ বিষয়ে বাবু আহম্মেদের চাচা জসিম উদ্দিন ডাক্তার বলেন, আলিম সরদারের মা এসনাহার বেগমের স্বামী বাড়ী পাবনা জেলায়। পরে স্বামীর বাড়ী থেকে অনেক দিন আগে চলে এসে সে সন্তানসহ মৃধাডাঙ্গায় পিতার বাড়ীতে ওঠে। পরবর্তীতে আমারই এক মরহুম বড় ভাইয়ের ওয়ারিশদের কাছ থেকে ৪ শতাংশ জমি কিনে বাড়ী তৈরী করে। সম্প্রতি আলিম সরদার ও তার মা আমার আরেক ভাই আব্দুর রশিদের দেড় শতাংশ জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ করতে গেলে রশিদ ও তার ছেলে বাবু বাঁধা দেয়ায় তারা তাদেরকে মারপিট করে দাঁত ফেলে দেয়। আলিমের মামাদের গোষ্ঠী আমাদের তুলনায় অনেক বড় ও দাঙ্গাবাজ প্রকৃতির হওয়ায় তারা আমাদের উপর এভাবে অত্যাচার চালাতে পারছে। এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।