॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের উড়াকান্দা গ্রামের কুখ্যাত চরমপন্থী নেতা কুদ্দুস ওরফে সাগর(৪২) কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার কয়ারচরে র্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে। গতকাল ৫ই এপ্রিল ভোর রাতে এই ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটে।
র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘটনার রাতে ৮/১০জনের সশস্ত্র ডাকাত দল ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে-এমন সংবাদের ভিত্তিতে ভোর সোয়া ৪টার দিকে র্যাবের একটি দল কয়ারচর এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সশস্ত্র ডাকাত দলটি র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ শুরু করলে র্যাবও পাল্টা গুলিবর্ষণ করতে থাকে। প্রায় ২০/২৫ মিনিট পাল্টা-পাল্টি গুলিবর্ষণ চলার পর সশস্ত্র ডাকাতরা পিছু হটে পালিয়ে যায়। স্থানীয় জনগণ র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে বের হয়ে আসার পর তাদেরকে সঙ্গে করে পলাতক ডাকাতদের খোঁজা-খুজি করাকালে ১জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় জনগণ তাকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার উড়াকান্দা এলাকার চরমপন্থী নেতা কুদ্দুস ওরফে সাগর বলে শনাক্ত করে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে ১টি বিদেশী একনলা বন্দুক, ১টি বিদেশী (আমেরিকান) পিস্তল, ১টি বিদেশী রিভলবার, ৫টি তাজা কার্তুজ, ৮রাউন্ড তাজা গুলি ও ১টি রামদা উদ্ধার করে। উক্ত গোলাগুলির ঘটনায় র্যাবের এএসআই তোহরুল ইসলাম ও কনেস্টবল রশিদুজ্জামান আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হলে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
র্যাব আরো জানায়, নিহত কুদ্দুস ওরফে সাগর নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি(এম.এল লাল পতাকা) সক্রিয় নেতা ছিল এবং নিজ নামীয় বাহিনীর নেতৃত্ব দিত। সে খুন, অপহরণ, ডাকাতি, দস্যুতা, চাঁদাবাজী, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে জড়িত ছিল। তার বাহিনী পাবনা, রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়াসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে জনমনে ত্রাসের সৃষ্টি করেছিল।
রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন থানার রেকর্ড পর্যালোচনা করে জানা যায়, নিহত কুদ্দুস ওরফে সাগরের বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ, বিস্ফোরক, অবৈধ অস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের ৪টি মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তার বাহিনীর অপরাপর সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে কুষ্টিয়ায় ময়না তদন্ত শেষে কুদ্দুস ওরফে সাগরের লাশ উড়াকান্দায় তার বাড়ীতে নিয়ে আসা হয়। রাত সাড়ে ৭টার পর উড়াকান্দা ফুটবল মাঠে নামাজে জানাযা শেষে পাশ্ববর্তী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।