॥দেবাশীষ বিশ্বাস॥ রাজবাড়ীতে গতকাল ২রা এপ্রিল শান্তিপূর্ণভাবে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে জেলার ৫টি উপজেলার ১২টি কেন্দ্রে এইচএসসি, ১টি কেন্দ্রে ভোকেশনাল ও ৫টি কেন্দ্রে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও ৩টি কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ বছর জেলার মোট ১০ হাজার ৩২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা কথা থাকলেও প্রথম দিনে অনুপস্থিত ১১৪শিক্ষার্থী। এ বছর ৯ হাজার ১৫১ জন এইচএসসি, ১০৫ জন এইচএসসি (ভোকেশনাল), ১হাজার ১৫৮ জন এইচএসসি (ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা), ৬১৮ জন আলিম পরীক্ষার্থী পরীক্ষার্থীর মধ্যে এইচএসসি বাংলার ৮৩জন, আলিম পরীক্ষার ২৮জন এবং এইচএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার ৩ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
এদিকে সকাল সাড়ে ১০টায় রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী রাজবাড়ী সরকারী কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে রাজবাড়ী সরকারী কলেজের তৃতীয় তলার ৩০২ নং কক্ষে কয়েকজন পরীক্ষার্থী ২০১৬ সালের বাংলা ১ম পত্র প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা হলে উচ্চস্বরে কথা বলা শুরু করলে বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আসে।
কেন্দ্র সচিব রাজবাড়ী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ খলিলুর রহমান জেলা প্রশানককে ঘটনাটি জানালে জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করে ২০১৮ সালের প্রশ্নের ব্যবস্থা করেন এবং পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত সময় দিতে বলেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধ ছিলো সরকারের জন্য একটি অগ্নিপরীক্ষা। যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন রাজবাড়ী সরকারী কলেজ কেন্দ্রের পরিবেশ অত্যন্ত শান্ত ছিল। তিনি বলেন প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী পরীক্ষার্থীসহ পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সাথে কথা বলেন। রাজবাড়ী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ খলিলুর রহমানকে তিনি বলেন কোন রুমে যেন আলোর স্বল্পতা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। রাজবাড়ী সরকারী কলেজ ছাড়াও জেলা প্রশাসক রাজবাড়ী আদর্শ মহিলা কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
এদিকে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার ৩টি পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে হোগলাডাঙ্গী কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে ২০জন পরীক্ষার্থী ও ২জন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে।
কালুখালী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ এজাজ কায়সার জানান, পরীক্ষা চলাকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষের পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশী করে মোবাইল ফোন ও নকল উদ্ধারসহ পরীক্ষার খাতায় নকল লেখা অবস্থায় ২০জন পরীক্ষার্থীকে এবং নকলের কাজে সহযোগিতা করায় কর্তব্যরত ২জন শিক্ষককে বহিষ্কার করেন।
পাংশা উপজেলায় এ বছর ৬টি কেন্দ্রে ২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এইচএসসি, এইচএসসি(বিএম) ও আলিম পরীক্ষা-২০১৮ তে সর্বমোট ২হাজার ২৭১জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২২জন অনুপস্থিত ছিল। গতকাল ২রা এপ্রিল প্রথম দিনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাযায়, পাংশা সরকারী কলেজ(এইচএসসি মূল কেন্দ্র) কেন্দ্রে ৫০১জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩জন অনুপস্থিত ছিল। পাংশা মহিলা কলেজ (এইচএসসি মূল কেন্দ্র) কেন্দ্রে ৩৯১জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। আইডিয়াল গার্লস কলেজ(এইচএসসি মূল কেন্দ্র) কেন্দ্রে ৮২৩জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৩জন অনুপস্থিত ছিল। আইডিয়াল গার্লস কলেজ (বিএম ভেন্যু কেন্দ্র পাংশা সরকারী কলেজ) কেন্দ্রে ১২৬জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১জন অনুপস্থিত ছিল। ডক্টর কাজী মোতাহার হোসেন কলেজ (বিএম ভেন্যু কেন্দ্র পাংশা সরকারী কলেজ) কেন্দ্রে ২১৭ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এছাড়া পাংশা সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদরাসা (আলিম মূল কেন্দ্র) কেন্দ্রে ২১৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪জন অনুপস্থিত ছিল। এডিসি শিক্ষা ও আইসিটি মোঃ সাদেকুর রহমান, পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, এসিল্যান্ড ফয়সাল হক, রাজবাড়ী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সিদ্দিকুর রহমান বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরিসংখ্যান অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আলী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস.এম নাসিম আখতার, উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার এম.এ নাহার, সহকারী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার হযরত আলী খান ও জাহানারা মন্ডল এবং সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফকির মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম স্ব-স্ব পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন।