॥স্টাফ রিপোর্টার॥ স্বল্পোন্নত দেশের গ্রুপ(এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনে বর্তমান সরকারের ঐতিহাসিক সাফল্য আজ ২২শে মার্চ সর্বস্তরে উদযাপন করা হবে।
জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) গত ১৫ই মার্চ এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় এবং পরের দিন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেনের কাছে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি হস্তান্তর করে।
গত বছরের অক্টোবরে ইউনাইটেড ন্যাশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের(ইউএনসিটিএডি) এক রিপোর্টে বলা হয়, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই তিনটি শর্ত পূর্ণ করায় চলতি মার্চ মাসে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করবে।
এই তিনটি মানদন্ড হচ্ছে মাথাপিছু জাতীয় আর(জিএনআই), হিউম্যান অ্যাসেটস ইউডেস্ক (এইচএআই) এবং ইকোনমিক ভালনারেবিলিটি ইনডেস্ক(ইভিআই)। জাতিসংঘের এই মানদন্ড অনুযায়ী একটি দেশের মাথাপিছু জাতীয় আয়(জিএনআই) হবে ১,২৩০ ডলার অথবা আরো বেশী। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের শেষে বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় দাঁড়িয়েছে ১,৬১০ ডলার। এই উত্তরণে একটি দেশের এইচএআই সূচক অবশ্যই ৬৬ অথবা বেশী এবং ইভিআই ৩২ অথবা নিচে থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সূচক যথাক্রমে ৭২.৯ এবং ২৪.৮। এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে বাংলাদেশের চূড়ান্তভাবে উত্তরণের জন্য ২০২৪ সালে জাতিসংঘের ঘোষণা পর্যন্ত তিনটি সূচকের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
এলডিসি থেকে বাংলাদেশের মর্যাদাপূর্ণ উত্তরণ প্রক্রিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকার আজ বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী উদযাপনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
উৎসব উদযাপনের প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য এই বিরাট সম্মান অর্জনে অবদান রাখার জন্য দেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে নগরীতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটির উদযাপন শুরু হবে।
দেশ ও জাতির জন্য এই সম্মানজনক অবস্থান অর্জনে বর্তমান সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের জন্য সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে(বিআইসিসি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানানো হবে। পাশাপাশি দুপুরে রাজধানীর ৯টি স্থান থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শেষ হবে।
সন্ধ্যায় সেখানে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। একইভাবে দেশব্যাপী ২২ থেকে ২৮শে মার্চ র্যালীর আয়োজন করা হবে। সেখানে বিভিন্ন খাতে সরকারের সাফল্য তুলে ধরা হবে।
স্থানীয় প্রশাসন ছবি প্রদর্শনী, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলার আয়োজন এবং উন্নয়ন কার্যক্রমের ওপর ভিডিও প্রদর্শন করবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশের সকল জেলায় উৎসব উদযাপনে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ইতোমধ্যেই একটি কমিটি গঠন করেছে। এলডিসি থেকে উত্তরণে দেশের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ে কাল শুক্রবার বিআইসিসিতে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন অর্থমন্ত্রী এএমএ মুহিত।