সুবর্ণা। গাত্র বর্ণ সুবর্ণ বলে বাবা-মা আদর করে নাম রেখেছিল সুবর্ণা। রাজবাড়ীর ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি ভালো গান গায়, আবৃত্তি করে। কথা বলে সুন্দর করে, পরীক্ষার হলে মৃদু কণ্ঠে শ্রুতিলেখককে উত্তর বলে দেয়। সুবর্ণা রানী দাশ চোখে দেখে না, অন্ধ। জন্মের দু’মাস পর থেকে পিতৃহারা। সহায়-সম্বলহীন বিধবা মা একমাত্র অবলম্বন মেয়েটিকে অতি কষ্টে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন ব্রেইল পদ্ধতিতে। সংগীত, আবৃত্তি চর্চা করানোর সামর্থ্য তার নেই।
সানজিদা আইরিন বৃষ্টি। ছবি আঁকে ভালো, হাতের লেখা খুব সুন্দর। বিধাতা নিপুণ হাতে অনন্য অসাধারণ সৌন্দর্য দিয়ে ওকে গড়েছেন কিন্তু মুখে কথা ফুটতে দেননি, মেয়েটি বোবা। ওর মায়ের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন স্কুলে নানা রকম প্রতিকূলতা পার হয়ে অবশেষে ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।
সামিউল হাসান সিয়াম। অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী, সদালাপী ছেলেটি শিক্ষকদের অসীম শ্রদ্ধা করে। বিদ্যালয়ের জন্য তার অনেক মায়া। ভালো কাজে এগিয়ে যায়। খারাপ কাজ নিজে করে না, সহপাঠীদেরও করতে নিষেধ করে। অটিজম সিয়াম ওর পিতার সাহচর্যে রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। এরা আমাদের সন্তান। আমাদের একটু আন্তরিক সহযোগিতা এই নিষ্পাপ শিশুদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথকে মসৃণ করতে পারে।
এই ৩জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর জন্য অন্তহীন শুভ কামনা জানিয়ে গতকাল ৩রা ফেব্রুয়ারী রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা বেলা রানী সরকার। -ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।