॥শিহাবুর রহমান/মোখলেছুর রহমান॥ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আগামী নির্বাচনে রাজবাড়ীতে কাজী কেরামত আলী থাকবে, জিল্লুল হাকিম থাকবে। আমাদের কোন ভয় নাই। ভয় শুধু খালেদা জিয়ার। খালেদা জিয়ার ভয় আদালত দেখে। নির্বাচন দেখে ভয় পায়। ভোট দেখে ভয় পায়। আরো বেশী ভয় পায় আওয়ামী লীগ দেখে।
গতকাল ৩০শে জানুয়ারী বিকেলে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া রজনীকান্ত মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে। শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন ডিসেম্বর মাসেই নির্বাচন হবে, বিজয়ের মাসেই নির্বাচন হবে। বিজয়ের মাসেই মুক্তিযোদ্ধারা জয়লাভ করেছিল। আওয়ামীলীগও জয়লাভ করবে। শুধু কালুখালী, পাংশা, বালিয়াকান্দি ও রাজবাড়ীতেই নয়। সারা বাংলাদেশে আমাদের জয়লাভ করতে হবে।
মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমরা নির্বাচন করে ৯বছর ক্ষমতায় আছি। এই ৯বছরে শেখ হাসিনা সারাদেশে রাস্তা-ঘাটসহ ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। জঙ্গী দমন করেছেন। ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌছে দিয়েছেন। ওই খালেজা জিয়াকে আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবে না। এই ৯মাস গুরুত্বপূর্ণ মাস। আমাদের বাঁচা মরার লড়াই। এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে। আগামী নির্বাচনে বিএনপি না আসলে বাটি চালান দিয়েও তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সারাদেশে হেলথ ক্লিনিক করেছিলেন। সারাদেশে ১৪হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিল। আবার যদি তারা ক্ষমতায় আসে তাহলে সকল হেলথ ক্লিনিক বন্ধ করে দিবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ওপর ১৯ বার হামলা হয়েছে। ২১শে আগস্ট আইভী রহমানসহ ২৪জনকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া সেই হত্যাকান্ডের তদন্ত পর্যন্ত করেনি। ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। জিয়াউর রহমান সেইসব খুনীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছিল। সেই খালেদা জিয়া কথা কথায় আবার ন্যায় বিচারের কথা বলেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার দল বলেছ নির্বাচন ভুলন্ঠন করে দিবে। সাহস থাকে মাঠে নামেন। খেলা হবে মাঠে। খেলা হবে কালুখালীতে। আর যাই হোক হাওয়া ভবন কেউ চায়না। আমরা ক্ষমতায় আছি ৯বছর। আমাদের ভুল ত্রুটি থাকতে পারে। ভুল তো মানুষই করে। শেখ হাসিনা নৌকা যাকে দিবে তার পক্ষেই কাজ করতে হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নাই। রাজবাড়ীতে দুটি আসনই আমরা চাই। শেখ হাসিনা রাজবাড়ীবাসীকে সম্মানিত করতে কাজী কেরামত আলীকে প্রতিমন্ত্রী করেছেন। আরো সম্মান চাইলে নৌকার বিজয় আনতে হবে। তাহলে আরো সম্মান পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, আমেরিকা, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে যেমনভাবে নির্বাচন হয়। তেমনি বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। যদি কেউ বিশৃঙ্খলা করতে চায় তাহলে দাঁত ভাঙা জবাব দিতে হবে। বিএনপি চাইছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে। এদের কালো হাত ভেঙে দেয়া হবে।
কর্মী সমাবেশে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, কারিগরি শিক্ষা অত্যন্ত জরুরী। রাজবাড়ীসহ সারাদেশে যে সমস্যা আছে আমি তা দেখবো। আপনারা আমাকে সেগুলো জানাবেন।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার ক্ষমতায় আছে। কিন্তু সংগঠন শক্তিশালী করা ছাড়া কোন বিকল্প নাই। বিএনপির হুমকী আমরা প্রতিহত করবো। আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
রাজবাড়ী-২ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম বলেন, মাঠে কিছু লোক আছেন নমিনেশন নিয়ে বিভ্রান্তি করছেন। নাসিম ভাই বলেছেন, রাজবাড়ী-১ ও ২ আসনে কোন পরিবর্তন হবে না। কাজেই আমাদের চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা যথেষ্ট উন্নয়ন করেছি। এতো উন্নয়ন অতীতে কোন এমপি করতে পারে নাই।
তিনি বলেন, বিএনপি বলে নির্বাচন আসুক তারপর দেখবো। ওরা কি দেখবে। ওরা দেশের জন্য কি করেছে। ওদের তো ভোট চাওয়াই অধিকার নাই।
কর্মী সমাবেশে অন্যানের মধ্যে কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী সাইফুল ইসলাম ও কালিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আতিউর রহমান নবাব বক্তব্য রাখেন।
এ সময় সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি কামরুন নাহার চৌধুরী লাভলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার, প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলীর সহধর্মিনী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রেবেকা সুলতানা সাজু এবং পাংশা ও বালিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মী সমাবেশ সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সামছুল আলম, জেলা পরিষদ সদস্য খাইরুল ইসলাম খায়ের ও রতনদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আজিজ। এ কর্মী সমাবেশে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে প্রায় পনের হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিএনপির দেড় শতাধিক নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করে।