রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

উন্নয়ন মেলার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশেকে তুলে ধরা হয়েছে — ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার

  • আপডেট সময় রবিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৮

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন আয়োজিত শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ খুশী রেলওয়ে ময়দানে তিন দিনব্যাপী উন্নয়ন মেলা-২০১৮ এর সমাপনীতে গতকাল ১৩ই জানুয়ারী বিকাল সাড়ে ৩টায় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সভা শেষে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার। জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খান।
এ ছাড়াও অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম, দৈনিক আমার কাগজ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোঃ ফজলুল হক ভূইয়া ও রাজবাড়ী সরকারী আদর্শ মহিলা কলেজের আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আব্দুর রশিদ মন্ডল প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রেবেকা খান। এ সময় বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, এনজিও প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণসহ বিপুল সংখ্যক সাধারণ দর্শক উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার উন্নয়ন মেলার সমাপনী দিনে ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রা শীর্ষক আলোচনা সভার সার্বিক বিষয়বস্তু তুলে ধরে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনাসহ তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করার পরিকল্পনা শুরু হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার শুরুতে এদেশের অনেকে মনে করেছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন একটি অবাস্তব রূপকথার গল্প। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হসিনা সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অবাস্তব রূপকে তার দূরদর্শিতার মাধ্যমে আজ বাস্তবে রূপদান করেছেন। এখন অধিকাংশ মানুষই জানে ডিজিটাল বাংলাদেশ কি। আর যারা না জানে তাদের জানানোর জন্য আজকের এই উন্নয়ন মেলার মাধ্যমে সরকারের সেই ডিজিটাল বাংলাদেশেকে জনগণের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। আজকে সেই ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে বিভিন্ন সরকারী দপ্তর জনগণের সেবক হয়ে তাদের ঘরের দোরগোড়ায় সরকারের বিভিন্ন সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছে। শুধু সেটাই নয়, যারা এই ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পর্কে কম অবগত তাদের ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার শেখাতে সরকার তার আইসিটি বিভাগের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এই ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে জনসম্পদকে জনশক্তিতে রুপান্তরের লক্ষ্যে দেশের শিক্ষিত বেকার যুবকদের আইসিটি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যার ফলে দেশে বর্তমানে আইসিটি খাত থেকে বছরে এক বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে।
তিনি আরো বলেন, আইসিটি খাতের এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী পাঁচ বছরে দেশের বেকার সমস্যা সমাধানসহ এই খাত থেকে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ইউএস ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে আগামী দশ বছরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী বৈদেশিক মুদ্রা এই খাত থেকে অর্জন করা সম্ভব হবে।
তিনি সরকারের বিভিন্ন সরকারী বিভাগ, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে জনগণকে দুইশটি সেবা প্রদান, দেশে আটশটি আইসিটি হাইটেক পার্ক নির্মাণ, সাইবার নিরাপত্তা, সাবমেরিন কেবল সংযোগ, আগামী মার্চে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাই উৎক্ষেপণ, ডিজিটাল ল্যাব, ভ্রাম্যমান বাসের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের ডিজিটাল প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রাইমারী লেভেলে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার, স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ই- প্রেসকিপশনের মাধ্যমে ডাক্তারী সেবা প্রদান, ঘরে ঘরে ইন্টরনেট সুবিধা প্রদান, ই-গর্ভর্নেন্স, ভারতে দশ জিবি ব্র্যান্ড উইথ রপ্তানী, আইসিটিতে দেশে-বিদেশী বিনিয়োগ, ডাক বিভাগের বিভিন্ন ডিজিটাল কার্যক্রম, আইটি ব্যবসার সাথে জড়িতদের সরকারের দশ বছর করমুক্ত সুবিধা প্রদান, আউট সোর্স এর মাধ্যমে ইনকামসহ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন ডিজিটাল কর্মসূচী তুলে ধরেন।
এ ছাড়াও তিনি উন্নয়ন মেলার আয়োজন কেন করা হয়েছে, এর মাধ্যমে জনগণ কি জানতে পারছে সে সম্পর্কে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি ভবিষ্যতে উন্নয়ন মেলায় সরকারের বিভিন্ন বিভাগের ডিজিটাল সুবিধাগুলো যাতে মেলার মাঠে প্রদান করা হয় সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী সভাপতির বক্তব্যে বলেন, এই বার দিয়ে দেশে মোট তিনবার উন্নয়ন মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই উন্নয়ন মেলার মাধ্যমে সরকার তার উন্নয়নের সকল কর্মকান্ড জনগণের সামনে তুলে ধরতে পেরেছে। যাতে জনগণ সরকারের সকল বিভাগ কি কি সুবিধা প্রদান করে যা জানতে পারে। এই উন্নয়নের সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করে দেশের সার্বিক উন্নয়ন আরো ত্বরান্বিতসহ জনগণকে জানানো আরো সহজ হয়েছে। বর্তমান সরকার দেশের প্রতিটি সরকারী অফিসকে পেপারলেস অফিস করতে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে অনেকাংশে সফল হয়েছে। তিনি সকল সরকারী দপ্তরকে জেলাবাসীর ঘরে ঘরে সরকারী সেবা পৌঁছে দেওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি উন্নয়ন কর্মকান্ডের ধারাকে অব্যাহত রেখে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে ও ২০৪১ সালের মাধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
এছাড়াও তিনি উন্নয়ন মেলা উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করায় উন্নয়ন মেলার মিডিয়া পার্টনার দৈনিক মাতৃকণ্ঠকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।
আলোচনা সভার শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর শিল্পীদের পাশাপাশি ঢাকা থেকে আসা শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এরপর জেলা প্রশাসক গঠিত বিচারক মন্ডলীর বিবেচনায় বিজয়ী শ্রেষ্ঠ ৫টি স্টল ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও বর্ণিল আতশবাজীর মধ্য দিয়ে মেলা সমাপ্ত হয়।
উন্নয়ন মেলার স্টলগুলোর টিটিসি প্রথম, কৃষি অফিস দ্বিতীয়, গণপূর্ত বিভাগ তৃতীয়, সদর উপজেলা ভূমি অফিস চতুর্থ এবং মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিস পঞ্চম স্থান অধিকার করে। এ ছাড়াও অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটি স্টলকে এবং মেলার মিডিয়া পার্টনার দৈনিক মাতৃকণ্ঠকে শুভেচ্ছা স্মারক ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
পুরস্কার বিতরণের সময় জেলা প্রশাসক মোঃ শওকত আলী ও তার সহধর্মিনী মিসেস মর্জিনা ইয়াছমিন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!