শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

ডিজিটাল প্রযুক্তির আওতায় নাগরিক সেবা॥দেশের সেরা এসিল্যান্ড রাজবাড়ী সদর উপজেলার আবুজর গিফারী

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৭

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ আইসিটি’র মাধ্যমে নাগরিক সেবায় বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭’ পুরস্কারের জন্য দেশের সেরা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মনোনীত হয়েছেন রাজবাড়ী সদরের আ.ন.ম আবুজর গিফারী।
গতকাল ৫ই ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ই-গভর্নেন্স-শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মোছাঃ শিরিন শবনম কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক পত্রে(স্মারক নং-০৪.০০.০০০০.৮৩৩.৫০.০০১.১৭.১৮) তাকে এই মনোনয়ন প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে উক্ত পুরস্কারের জন্য একজনকে সেরা জেলা প্রশাসক এবং একজনকে সেরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবেও মনোনীত করা হয়েছেন। তারা হলেন ঃ ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক বেগম উম্মে সালমা তানজিয়া এবং পাবনা সদরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কায়ছারুল ইসলাম।
দেশের সেরা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মনোনীত হওয়া আ.ন.ম আবুজর গিফারী ৩১তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। ২০১৩ সালের ১৫ই জানুয়ারী তিনি দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগদানের মাধ্যমে চাকরী জীবনে প্রবেশ করেন। ২০১৫ সালের ৩১শে ডিসেম্বর সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগ দেন। পরের বছর ২০১৬ সালের ২৩শে অক্টোবর তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র দায়িত্ব পান।
দায়িত্ব গ্রহণের পরই তিনি সদর উপজেলা ভূমি অফিসসহ এর অধীনস্ত ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর ভূমি অফিসকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বর্তমানে উপজেলা ভূমি অফিসে শতভাগ ই-নামজারী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, অফিসের যাবতীয় কার্যক্রম সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়, অফিসের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ধরনের আসবাবপত্র সংগ্রহ করাসহ পুরাতন আসবাবপত্রগুলো মেরামত ও সংস্কার করা হয়েছে, সকল ইউনিয়ন ও পৌর ভূমি অফিসে ল্যাপটপ, প্রিন্টার ও স্ক্যানার প্রদান করাসহ বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে, আগত সেবা প্রার্থীদেরকে তাৎক্ষণিক সেবা দেয়ার জন্য ‘ভূমি সেবা ও পরামর্শ কেন্দ্র’ নির্মাণ ও তাদের বসার সুব্যবস্থার জন্য অফিস চত্বরে গোলঘর করা হয়েছে, রেকর্ডরুম সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে রেকর্ড সংরক্ষণ করা হচ্ছে, ২শতাধিক ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে খাস জমি বিতরণ করা হয়েছে, ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে আশ্রয়ণ ও গুচ্ছগ্রামের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে এবং সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য অফিস চত্বরে বাগান করাসহ ডিজিটাল সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মিউটেশনের ১হাজার ৮শত ৯৭টি আবেদনের মধ্যে ১ হাজার ৩শত ৩৫টির নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডের মধ্যে আরও রয়েছে ঃ ই-মিউটেশন চালু করার মাধ্যমে সরকারের ই-সেবা কার্যক্রম গতিশীল করা, কমপক্ষে ৫০০টি সৃজিত খতিয়ানসমূহ রেজিস্টার আকারে বাঁধাইকরণ, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কর্তৃক খাস জমি পরিদর্শন নিশ্চিত করার মাধ্যমে নদী ভাঙন কবলিত কমপক্ষে ৫০টি পরিবারের জন্য খাসজমির ব্যবস্থা করা, নিয়মিত মাসিক রাজস্ব সভা করার মাধ্যমে ভূমি প্রশাসনের গতিশীলতা আনয়ণ, কমপক্ষে ১টি গুচ্ছগ্রাম সৃজন করার মাধ্যমে ভূমিহীনদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা, ভূমি সেবা ও পরামর্শ কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণের ভূমি সেবা নিশ্চিত করা, অর্পিত সম্পত্তির লীজ মানি আদায়ের বর্তমান ৬৩% হারকে ৮৫%-এ উন্নীত করার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা, সরকারের ভূমি সংস্কার নীতি বাস্তবায়ন, ভূমি রাজস্ব/ভূমি উন্নয়ন করের সঠিক দাবী নির্ধারণ, আদায়, কর বহির্ভুত রাজস্ব আদায় ও ভূমি উন্নয়ন কর আদায় বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, ভূমি রাজস্ব প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কার্যক্রম তত্বাবধান, ভূমি রাজস্ব প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের দপ্তরগুলোর বাজেট ব্যবস্থাপনা ও তদারকি, উপজেলা ভূমি অফিস, ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিদর্শন, তত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ, খাসজমি ব্যবস্থাপনা, অর্পিত ও পরিত্যক্ত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, সায়রাত মহল ব্যবস্থাপনা ও গুচ্ছগ্রাম সৃজন প্রভৃতি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, সম্পূর্ণ অফিসে ইনস্ট্যান্ট পাওয়ার সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা করা, নতুনভাবে গুচ্ছগ্রাম সৃজন করার মাধ্যমে নদী ভাঙন কবলিত মানুষের থাকার জায়গার ব্যবস্থা করা, ডিজিটাল হাজিরার ব্যবস্থা করা, ই-রেকর্ডরুমের মাধ্যমে সমস্ত নথিকে স্ক্যান করে সংরক্ষণ করা যেন জনগণ অতি দ্রুত মাত্র একটি ক্লিকেই তাদের কাঙ্খিত তথ্য পায়, ই-ম্যাপ কার্যক্রমের মাধ্যমে ডিজিটালী মৌজা ম্যাপ সংরক্ষণ, সকল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সিসি টিভি স্থাপন, শতভাগ ই-নথি কার্যক্রম বাস্তবায়ন, মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে সহজে ও দ্রুত খাস জমি চিহ্নিতকরণ এবং ভূমি মালিকদের সুবিধার্থে ডিজিটাল হোল্ডিং চালুকরণ।
দেশের সেরা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মনোনীত হওয়ার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আ.ন.ম আবুজর গিফারী বলেন, ‘রাজবাড়ী সদর উপজেলাবাসী যেন সহজে, ঝামেলা মুক্তভাবে এবং স্বচ্ছতার সাথে ভূমি সেবা পেতে পারে সে লক্ষ্যেই আমার যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালিত হয়েছে। যতদিন দায়িত্বে আছি ততদিন একইভাবে সেবা দিয়ে যাব।’
উল্লেখ্য, আ.ন.ম আবুজর গিফারীর গ্রামের বাড়ী নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলায়। তার পিতা সরকারী কলেজের শিক্ষক ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। স্ত্রী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের চুড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থী।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!