শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

ড্রেজিং চলছে॥দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে নাব্যতা সংকট॥লঞ্চ-ফেরী চলছে ঝুঁকি নিয়ে

  • আপডেট সময় শনিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৭

॥কাজী তানভীর মাহমুদ॥ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-রুটের পদ্মা নদীতে নাব্যতা সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই নৌ-চ্যানেলের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে দুই ঘাটে ড্রেজিং কার্যক্রম ৩সপ্তাহের বেশী সময় ধরে অব্যাহত রয়েছে।
তবে লঞ্চ ও ফেরীর মাস্টারদের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং না করা ও নদীতে কোন মার্কিং চিহ্ন(ভূত বাতি) না থাকায় লঞ্চ-ফেরীসহ সকল প্রকার নৌযান ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
রাজধানী ঢাকার সাথে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের প্রধান নৌ-পথ রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুট। এ নৌরুটে প্রতিদিন ছোট-বড় ১৪/১৫টি ফেরী ও ২৫টি লঞ্চ চলাচল করে। বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ায় পদ্মা নদীতে নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে ফেরী-লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় নাব্যতা সংকট নিরসনে গত ৫ই সেপ্টেম্বর পাটুরিয়া ঘাটে ও গত ১৯শে অক্টোবর দৌলতদিয়া ঘাটে থেকে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করেছে বিআইডব্লিউটিএ।
তবে লঞ্চ ও ফেরীর মাস্টারদের অভিযোগ, নিরাপদে চলাচলের জন্য নদীতে কোন মার্কিং চিহ্ন (ভূত বাতি) না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চালাতে হচ্ছে নৌযান। আবার ফুল লোড ফেরীর জন্য কমপক্ষে ৮ফুট পানির গভীরতা লাগলেও দৌলতদিয়া চ্যানেলে রয়েছে মাত্র ৬ফুট। এ কারণে প্রায়ই ডুবোচরে আটকা পড়ছে ফেরী। এ পরিস্থিতির জন্য তারা ড্রেজিং ইউনিটের গাফিলতিকেই দায়ী করছেন।
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের সুপারভাইজার মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচলে খুব বিঘœ ঘটছে কারণ লঞ্চ নিয়ে ফেরীর চ্যানেলে প্রবেশ করতে হয়। লঞ্চ চালানোর জন্য আলাদা কোন চ্যানেল নাই। নদীতে মার্কার বা সিগনাল বাতি নেই। এ জন্য রাতে লঞ্চ চালাতে খুব সমস্যা হয়। নদীতে ড্রেজিং করে সেই বালু আবার নদীতেই ফেলা হচ্ছে। এই ড্রেজিং করে যদি বালু অন্য স্থানে ফেলতো তাহলে লঞ্চ চালাতে কোন সমস্যা হতো না। নাব্যতা সংকট নিরসনে আমরা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছি।
এমভি নাজির এক্সপ্রেসের লঞ্চ মাস্টার মোঃ ওবায়দুর রহমান বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাওয়ার পথে বা সাইডে খাড়ি কাটছে। নদীতে যে মার্কার দরকার তা নেই। রাতে পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া আসার পথে দৌলতদিয়া টেকে যে ভূত বাতি থাকার কথা তাও নেই। এ অবস্থায় লঞ্চ চালাতে অসুবিধা হয়। চলাচলে ঝুঁকিও থাকে।
ইউটিলিটি ফেরী হাসনা হেনার ফেরী মাস্টার মাইনুদ্দিন হাওলাদার বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে নাব্যতা সংকটের কারণে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পদ্মায় পানি কম থাকায় ফেরী চালাতে সমস্যা হচ্ছে। পদ্মায় এখন নব্যতা সংকট। দুই পাড়েই ড্রেজিংয়ের কাজ দ্রুত করা দরকার।
রো-রো ফেরী শাহজালালের ফেরী মাস্টার মোঃ হাসমত আলী বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া প্রান্তে ৫নম্বর ঘাটে কিছুটা পানি থাকলেও পাটুরিয়া প্রান্তে ৩,৪ ও ৫ এই তিন ঘাটেই পানি অনেক কম। নাব্যতা কমে গেছে। ড্রেজিং চলছে তবে লোড নিলে চ্যানেলের মধ্যে ডুবোচরে ফেরী ধাক্কা খায়। আরো ড্রেজিং করা দরকার। ফেরী চলার চ্যানেলটাও আরো প্রশস্ত করতে হবে।
নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরী চলাচল বিঘিœত হওয়া ও পন্টুনে ফেরী ভেড়াতে অধিক সময় লাগার কারণে ফেরীর ট্রিপ সংখ্যা কমে গেছে বলে জানালেন বিআইডব্লিটিসির দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোঃ শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, দৌলতদিয়া টু পাটুরিয়া ও পাটুরিয়া টু দৌলতদিয়া নৌরুটে বর্তমানে বিআইডব্লিউটিসির ১৬টি ফেরী আছে। পাটুরিয়ার বেসিংয়ে ৩টি ড্রেজার কাজ করছে। সেখানে বেসিংয়ের পাশেই চ্যানেলটা সরু। যার কারণে একসাথে ২টি ফেরী আপ-ডাউন করতে পারে না। নাব্যতা সংকটের কারণে এ রুটের ট্রিপ সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।
ফেরী-লঞ্চসহ সব ধরনের যানবাহন নির্বিঘেœ চলাচল করতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া দুই ঘাটই আগামী বছরের ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত ড্রেজিং করা হবে বলে জানালেন বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা ঘাট কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ তৌফিকুল আলম।
তিনি বলেন, দৌলতদিয়া পাটুরিয়া দুই ঘাটই পর্যায়ক্রমে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত ড্রেজিং করা হবে। পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া প্রান্তে ৩টি করে ড্রেজার কাজ করছে। এর মধ্যে পাটুরিয়া প্রান্তে ১টি বিআইডব্লিউটিএ’র ও ২টি বেসরকারী ড্রেজার কোম্পানীর এবং দৌলতদিয়া প্রান্তে ৩টিই বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার। দুই প্রান্তে সম্ভাব্য ইস্টিমেট ৬লাখ ঘনমিটার বালু ড্রেজিং-এর মাধ্যমে সরিয়ে ফেলা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!