॥স্টাফ রিপোর্টার॥ দশম জাতীয় সংসদের সরকারী প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৩৫তম বৈঠক গতকাল ২৬শে অক্টোবর জাতীয় সংসদের কেবিনেট কক্ষে কমিটির সভাপতি ও রাজবাড়ী-১ আসনের এমপি আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
কমিটির সদস্য গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এডঃ রহমত আলী, নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল কুদ্দুস, হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আব্দুল মজিদ খান এবং সভাপতির বিশেষ আমন্ত্রণে বেসরকারী সদস্যদের বিল ও সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাজবাড়ী-২ আসনের এমপি মোঃ জিল্লুল হাকিম বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে ৯ম জাতীয় সংসদের প্রথম থেকে শেষ অধিবেশন পর্যন্ত এবং ১০ম জাতীয় সংসদে সম্প্রতি সমাপ্ত অধিবেশন পর্যন্ত সময়ে সংসদের ফ্লোরে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী কর্তৃক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ওপর প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির ওপর আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে জানানো হয় যে, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মেগাপ্রকল্প পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন কাজ চলমান রয়েছে এবং ইতোমধ্যে মূল সেতুর ৪৯ শতাংশ ভৌত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ১১৬টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। সেপ্টেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত এগুলোর অগ্রগতি ১৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
দেশের অর্থনৈতিক বিল্পব সাধনে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট বরাবর দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজের ফিজিবিলিটি স্টাডি সরকারী অর্থায়নে সম্পন্ন করার সুপারিশ করা হয়।
অতিবৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কের যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে মেরামতের ব্যবস্থা করে যান চলাচলের উপযোগী করার সুপারিশ করা হয়। মহাসড়কে ক্ষমতার অতিরিক্ত মালবোঝাই ট্রাক চলাচল করে যাতে রাস্তার ক্ষতিসাধন করতে না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারির সুপারিশ করা হয়।
বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ(আইএমইডি) কর্তৃক ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন মোট ০৩ টি প্রকল্প পরিদর্শন করা হয়। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন প্রকল্পের অগ্রগতিতে কমিটিতে সন্তোষ প্রকাশ করা হয় এবং আইএমইডি কর্তৃক যে সকল সুপারিশ করা হয়েছে তা বাস্তবায়নে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
সভায় ৩৪তম সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন প্রদান, মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার উদ্বোধন করায় প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন, পদ্মা সেতুর স্প্যান দৃশ্যমান হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং ৫০০টি বাস ও ৬০০টি ট্রাক বিআরটিসিতে সংযোজন করার বিষয়ে আলোচনা, বিআরটিএ’কে আধুনিকায়ন করায় ও দালাল চক্র প্রতিরোধ করায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
এ ছাড়াও বৈঠকে রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন রাস্তার বেহাল অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা, টেন্ডার সম্পন্ন হওয়া কাজের কার্যাদেশ দ্রুত দেয়ার ব্যবস্থাকরণ ও সারাদেশে জরুরী মেরামত কাজ শুরুর তাগিদ প্রদান, ফোরলেন রাস্তার চলমান কাজসমূহ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার তাগিদ, ঢাকার যানজট নিরসনে গৃহীত উদ্যোগসমূহ সম্পর্কে অবহিতকরণ, নাটোরসহ সমগ্র উত্তরবঙ্গ এবং সিলেট বিভাগে চলমান কাজ সম্পর্কে সভাকে অবহিতকরণ এবং চন্দ্র-এলেঙ্গা সড়কের যানজটের বেহাল অবস্থা এবং বগুড়ার শেরপুর-ধুনট রাস্তার অবস্থা উন্নীতকরণের জন্য তাগিদ প্রদান করা হয়।
বৈঠকে কর্মকর্তাদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম, সেতু কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আলীম উদ্দিন আহমেদ, বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান(অতিরিক্ত সচিব) মোঃ ফরিদ আহমদ ভুঁইয়া, অতিরিক্ত সচিব ও ডিএমআরটিডিপি’র পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মোঃ মশিয়ার রহমান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মনিরুল ইসলাম, আইএমইডি’র মহাপরিচালক ড. মোঃ মশিউর রহমান, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান উপস্থিত ছিলেন।