আজ ১লা অক্টোবর ঢাকা সেনানিবাসস্থ ১৩ এমপি ইউনিটের ‘চপার্স ডেনে’ গত ২৪শে সেপ্টেম্বর মালিতে শহীদ ৩জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীর জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাযায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল মশিহুজ্জামান সেরনিয়াবাতসহ ঢাকা সেনানিবাসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও সকল পদবীর সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জানাজার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান এবং মালিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন(মিনুসমা) এর ফোর্স কমান্ডার মেজর জেনারেল জ্যাঁ-পল ডিকোনিন্ক শহীদদের কফিনে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর শান্তিরক্ষীদের মরদেহ নিজ নিজ গ্রামের বাড়ী প্রেরণ করা হয়। সেখানে সম্পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় তাদের দাফনকার্য সম্পন্ন হয়।
উল্লেখ্য, মালিতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সময় গত ২৩শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের সাথে সন্ত্রাসীদের সংঘর্ষ হয় এবং আমাদের শান্তিরক্ষীরা সফলভাবে তাদের প্রতিহত করে। এরই ধারাবাহিকতায় পরদিন ২৪শে সেপ্টেম্বর দায়িত্ব পালন শেষে ক্যাম্পে ফেরার পথে তারা আবার আরো শাক্তিশালী সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। সাহসীকতা ও সফলতার সাথে তারা পুনরায় সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করে। তবে, সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের পুতে রাখা ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইজ(আইইডি) বিস্ফোরণে তিনজন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী শাহাদৎ বরণ করেন। শহীদ সেনাসদস্যরা হলেন ঃ সার্জেন্ট মোঃ আলতাফ হোসেন, ইএমই (দিনাজপুর), ল্যান্স কর্পোরাল জাকিরুল আলম শিকদার, আর্টিলারি(নেত্রকোনা), সৈনিক মোঃ মনোয়ার হোসেন, ইস্ট বেংগল(বরিশাল)। গত ২৭শে সেপ্টেম্বর মালির রাজধানী বামাকোতে শহীদ বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘ কর্তৃক সম্মান প্রদর্শন করা হয়। পরবর্তীতে সেনাসদস্যদের মরদেহ গত ৩০শে সেপ্টেম্বর বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছায়। মালিতে নিয়োজিত জাতিসংঘের ফোর্স কমান্ডার মেজর জেনারেল জ্যাঁ-পল ডিকোনিন্ক উক্ত বীর শান্তিরক্ষীদের সম্মান প্রদানের জন্য নিজেই মরদেহের সাথে বাংলাদেশে আগমন করেন।
মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনটি বর্তমান বিশে¡র সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মিশন হিসেবে বিবেচিত। ২০১৩ সালে শুরু হওয়া এই মিশনে ইতোমধ্যে ৬জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীসহ বিভিন্ন দেশের সর্বমোট ১৩৩জন শান্তিরক্ষী প্রাণ হারিয়েছে। বাংলাদেশে দুঃসাহসী শান্তিরক্ষীরা সর্বদা দেশের সম্মানের বিষয়টি মাথায় রেখে ঝুঁকিপূর্ণ এই মিশনে জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছে -আইএসপিআর।