বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৯ পূর্বাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

গোয়ালন্দ বাজারে থাকা লাইসেন্সধারী মদের দোকান অন্যত্র সরিয়ে নিতে মানববন্ধন॥৩মাসের আল্টিমেটাম

  • আপডেট সময় বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

॥এম.এইচ আক্কাছ॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র আড়তপট্টি এলাকা থেকে সরকারী লাইসেন্সধারী দেশী মদের দোকানটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে ৩মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছে এলাকাবাসী। অন্যথায় ওই দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। গতকাল ৫ই সেপ্টেম্বর দোকানটি সরিয়ে নেয়ার দাবীতে আয়োজিত মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। বৈধ দোকান হলেও সেখান থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মদ অবৈধভাবে বিভিন্ন জায়গায় পাচার ও পারমিট বিহীন মাদক বিক্রি হওয়ার অভিযোগ করা হয় মানববন্ধন থেকে।
এলাকাবাসীর ব্যানারে স্থানীয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ফকীর মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবের সামনের সড়কে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়।
মানববন্ধনে দাবী করা হয়, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে মদ বিক্রি করায় বর্তমানে উপজেলার আনাচে-কানাচে মদে সয়লাব হয়ে গেছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মদের দোকান থাকায় প্রতিনিয়ত ওই এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। পারমিটধারীদের কাছে মদ বিক্রির কথা থাকলেও অবৈধভাবে পারমিট বিহীন উঠতি বয়সের যুবকদের কাছে মদ বিক্রি করা হচ্ছে। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন মুদী দোকান, সেলুন, এমনকি বাড়ী-ঘরে রেখেও খুচরা ব্যবসায়ীরা এ মদ বিক্রি করছে। বাজারের প্রধান সড়কে দোকানটির অবস্থান হওয়ায় স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা যাতায়াতকালে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ছে।
মানববন্ধনে গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র শেখ মোঃ নিজাম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান ফকীর, মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার মিয়া, ডাঃ আবুল হোসেন কলেজের সহকারী অধ্যাপিকা শামীমা আক্তার মুনমুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনায়েত হোসেন জাকির, গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আজু শিকদার, গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক রমেশ আগরওয়ালা, পৌরসভার কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রনি, বিডি জবস’র সহকারী মহাব্যবস্থাপক শোয়েব হাসান, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বিজয়-৭১ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফকীর রাসেল আহমেদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবিএম বাতেন এবং এডঃ শফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বক্তাগণ বলেন, গোয়ালন্দ বাজারের আড়তপট্টি এলাকায় অবস্থিত রণজিত সরকারের মদের দোকান থেকে লাইসেন্সধারী ৩৯৭জন সেবনকারীর কাছে মদ বিক্রির কথা থাকলেও বিপুল পরিমাণ মদ অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছে দৌলতদিয়া যৌনপল্ল¬ীসহ উপজেলার অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে। এ কারণে শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চল এখন বাংলা মদে সয়লাব হয়ে গেছে। এই মদের দোকানের উপর নির্ভর করে দৌলতদিয়া যৌনপল্ল¬ীর ভেতরেই গড়ে উঠেছে অন্তত ২শতাধিক অবৈধ মদের দোকান। ওই সব মাদক ব্যবসায়ীরা সংশ্লি¬ষ্ট সকলকে ম্যানেজ করে গোয়ালন্দ বাজারের লাইসেন্সধারী ওই মদের দোকান থেকে অবৈধ উপায়ে মদ এনে তা নিয়মিত বিক্রি করে আসছে। নির্দিষ্ট সময়ে মদ বিক্রির নিয়ম থাকলেও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ওই দোকানে মদ বিক্রি করা হয়।
একাধিক সুত্র জানায়, দোকানের মধ্যে পানিসহ অন্যান্য কেমিক্যাল মিশিয়ে মদের পরিমাণ কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে তা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। এই দেশী মদের দোকান থেকে প্রতিদিন অটোরিক্সা, নছিমন ও মোটরসাইকেল যোগে বড় বড় বোতল ও প্লাস্টিকের জার-বস্তায় ভরে অনেকটা প্রকাশ্যেই পাচার করা হয় দৌলতদিয়া যৌনপল্ল¬ীতে। পারমিটধারীরা ছাড়াও অন্যরা দিব্যি মদের দোকান থেকে তাদের চাহিদামতো মদ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এসময় স্থানীয়রা অভিযোগ করেন মদের দোকানের আশপাশে অনেকটা প্রকাশ্যেই চলে মদপান। মদপান করে মাতলামি করে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে তারা।
মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দা প্রকৌশলী ফকীর আব্দুল মান্নান বলেন, মদের দোকানের সামনে দিয়ে প্রতিদিন স্কুল কলেজের শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ যাতায়াত করে। সম্প্রতি ওই মদের দোকানের সামনে দিয়ে কলেজে যাওয়ার সময় এক ছাত্রী মাতালের হাতে লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এ ছাড়াও ব্যবসায়ী ও সাধারণ কৃষকরা এখানে মাতালদের হাতে প্রায়ই নিগৃহীত হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ বাজারের দেশী মদ বিক্রেতা মেসার্স রণজিৎ সরকারের ম্যানেজার প্রফুল্ল কুমারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রসঙ্গে কোন কথা বলতে রাজী হননি।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মীর্জা আবুল কালাম আজাদ জানান, লাইসেন্সকৃত মদের দোকান দেখভাল করার দায়িত্ব মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের। থানা পুলিশের অভিযানে কোথাও অবৈধ মদ পেলে তা আটক করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। তবে শহরের গুরুত্বপূর্ণ ওই স্থান থেকে মদের দোকান স্থানান্তর করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!