বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রথমবারের মত গত ২৯শে জুলাই হতে ১২ই আগস্ট-২০১৭ তারিখ পর্যন্ত কাজাকিস্তানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আর্মি গেমস্ প্রতিযোগিতায় ‘স্নœাইপার ফ্রন্টিয়ার’ বিভাগে অংশগ্রহণকরে সতেরটি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থান অর্জন করে।
বাংলাদেশ থেকে মোট ১৩জন প্রতিযোগী উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে ৩জন পর্যবেক্ষক, টীম ম্যানেজার, টীম কোচ এবং ৮জন প্রতিযোগী ছিলেন। ৪জন অফিসার এবং অন্যান্য পদবীর ৪জন সেনাসদস্য উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। প্রচন্ড শারীরিক প্রতিবন্ধকতা এবং বিরুপ পরিবেশ মোকাবেলা করে উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা ছিল একটি বড় ধরণের চ্যালেজ্ঞ।
উক্ত প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন শারীরিক কসরত এবং ফায়ারিং এ চুড়ান্ত দক্ষতার প্রয়োজন ছিল। প্রতিযোগিতায় কাজাকিস্তান প্রথম, রাশিয়া এবং চীন সম্মিলিতভাবে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। অন্যান্য দেশের মধ্যে ভারত ১১তম, থাইল্যান্ড ১৪তম এবং গ্রিস ১৬ স্থান অর্জন করে। ‘আন্তর্জাতিক আর্মি গেমস্’ আয়োজনের মূল লক্ষ্য বিভিন্ন দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক সামরিক সহযোগিতা এবং স্নাইপার প্রশিক্ষণ সুবিধা বৃদ্ধি করা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী উক্ত প্রতিযোগিতায় প্রথমবার অংশগ্রহণ করেই কৃতিত্ব প্রদর্শনে সক্ষম হয়েছে এবং দেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছে। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সামরিক সম্পর্ক আরো জোরদার হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার ট্যাংক ভিয়েতলনে ২০১৩ সালে প্রথমবারের মত আর্মি গেমস্ ধারণাটি প্রচলন শুরু হয়। অলিম্পিক গেমস্ এর আদলে অন্যান্য দেশকে প্রতিযোগিতায় আমন্ত্রণ জানানোর লক্ষ্যে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক আর্মি গেমস এর প্রচলন করে। ২০১৭ সালে বৃহৎ এই আন্তর্জাতিক সামরিক প্রতিযোগিতা তৃতীয়বারের মত ‘আন্তর্জাতিক আর্মি গেমস্’ নামে ২৯শে জুলাই হতে ১২ই আগস্ট-২০১৭ তারিখে বিশে¡র ৫টি দেশে অনুষ্ঠিত হয়। দেশ ৫টি হলো ঃ রাশিয়া, আজারবাইযান, বেলারুশ, কাজাকিন্তান এবং চীন। ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকা হতে ২৮টি ক্যাটাগরিতে ২৮টি দেশের মোট ১৫০টি টিম উক্ত গেমস্ এ অংশগ্রহণ করে। গণপ্রজাতন্ত্রী কাজাকিস্তান ‘স্নাইপার ফ্রন্টিয়ার’, ‘মাস্টার্স অব আর্টিলারি ফায়ার’ এবং ‘ড্রোন প্রতিযোগিতা’ নামে ৩টি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বিভিন্ন দেশের সাথে সামরিক কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে সৃজনশীল একটি চিন্তার প্রকাশ হলো ‘আন্তর্জাতিক আর্মি গেমস্’। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে সামরিক প্রশিক্ষণ, নতুন যুদ্ধাস্ত্র প্রদর্শন এবং সামরিক সদস্যগণকে প্রশিক্ষণ প্রদানই এই গেমস্ এর প্রধান উদ্দেশ্য। ‘¯œাইপার ফ্রন্টিয়ার’ প্রতিযোগিতাটি হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে টার্গেটকে নিশানা করা এবং বিভিন্ন বাঁধা অতিক্রম করা। এই প্রতিযোগিতাটি কাজাকিস্তানে অতার, ভারদেইস্কি প্রশিক্ষণ এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়, যা রাজধানী আলমাতি হতে ২শ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মোট ১৭টি দেশ উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। দেশগুলো হলো ঃ রাশিয়া, কাজাকিস্তান, চীন, ভেনিজুয়েলা, বেলারুশ, বাংলাদেশ, ইরান, আজারবাইযান, জিম্বাবুয়ে, আর্মেনিয়া, উজবেকিস্তান, মঙ্গোলিয়া, ভারত, কিরগিজস্তান, গ্রীস, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং থাইল্যান্ড। প্রতিযোগিগণ ৭.৬২ মিঃ মিঃ ড্রাগনভ স্নাইপার এবং মাকারভ পিএম পিস্তল এবং আরজিডি-৫ পিস্তল এর দিন ও রাতের সাইট ব্যবহার করে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। আয়োজক দেশ এ সমস্ত সরঞ্জামাদি প্রতিযোগীদের জন্য সরবরাহ করে -আইএসপিআর।