॥স্টাফ রিপোর্টার॥ প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আবারো এই করোনাকালীন সময়ে সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এমন কি যারা টিকা নিয়েছেন তাদেরকেও তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন।
পাশাপাশি এই সংসদে এতজন সংসদ সদস্য হারানোকে দুঃখজনক আখ্যায়িত করে আর কোন শোক প্রস্তাব যেন নিতে না হয় সে জন্য তিনি মহান আল্লাহতা’য়ালার কাছে সকলের সুস্থ্যতাও কামনা করেন।
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা গতকাল ১৪ই সেপ্টেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে জাতীয় পার্টির(জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরীর মৃত্যুতে আনিত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় এসব কথা বলেন।
এর আগে গত সোমবার বিকেলে অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে মারা যান।
প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ‘বিদ্যুষী’ আখ্যায়িত করে বলেন, তিনি ছিলেন একাধারে রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, নারী উদ্যোক্তা এবং চিত্রশিল্পী। এ রকম বহু গুণ সম্পন্ন মানুষ আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেলেন। এটা আমাদের সমাজের জন্য একটা বিরাট ক্ষতি হলো।
তিনি বলেন, আর দুর্ভাগ্য হলো আমরা এই সংসদে একের পর এক জনকে হারাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, সংসদের এই অধিবেশন শুরুর পর পর দু’দিন দু’জন সংসদ সংসদ্যকে আমরা হারালাম। আবার কালকেই যখন খবর পেলাম আরেকটি মৃত্যু সংবাদ সত্যি হৃদয় দুঃখ ভারাক্রান্ত হলো।
৯ দিন বিরতির পর সংসদের মুলতবি হওয়া বৈঠক গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হয়।
গত ১লা সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া অধিবেশন চার কার্য দিবস চলার কথা ছিল। কিন্তু অধিবেশনের প্রথম দিন প্রয়াত সংসদ সদস্য আলী আশরাফের ওপর আনা শোক প্রস্তাবের আলোচনা শেষে রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়। পর দিন সিরাজগঞ্জের সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপনের মৃত্যুতে আবারও শোক প্রস্তাবের পর অধিবেশন মুলতবি করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অধ্যাপক মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী কে একজন মিষ্টভাষী এবং জ্ঞানী মানুষ বলে অভিহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বেঁচে থাকলে আমাদের সমাজকে এবং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরো অবদান রাখতে পারতেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর শিক্ষা-দীক্ষা এবং বহুমুখী প্রতিভা আমাদের নারী সমাজকে আরো প্রেরণা জোগাবে। সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি ও সাহস জোগাবে।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
তিনি বলেন, ‘তাঁর ছেলে-মেয়েদের আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই শোক সইবার শক্তি দিন সেটাই আমি চাই।’
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, মোঃ আব্দুস সোবহান মিয়া, জোহরা আলাউদ্দিন, সিমিন হোসেন রিমি এবং ওয়াসেকা আয়েশা খান শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এবং সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশিদ, নাজমা আখতার এবং শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং বিএনপি’র সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
শোক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলে মরহুমের সম্মানে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত শেষেই রেওয়াজ অনুযায়ী এ দিনের অধিবেশন ও মুলতবি হয়ে যায়।