॥নিউইয়র্ক প্রতিনিধি॥ “কোভিড-১৯ অতিমারি সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটিয়ে ওঠা, বিশেষ করে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন সমুন্নত রাখা এবং অন্তর্ভূক্তিমূলক ও সঙ্কট মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম এমন কোভিড-১৯ পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন সমগ্র-সমাজ দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন, শক্তিশালী ও দূরদর্শী নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে সত্যিই আমরা সৌভাগ্যবান, কারণ আমাদের রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যিনি অতিমারি মোকাবিলার এই যুদ্ধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন” গত ২৪শে মার্চ নিউইয়র্কে কমিশন অব দ্যা স্টাটাস অব উইমেন এর ৬৫তম অধিবেশন উপলক্ষে ভার্চুয়ালভাবে আয়োজিত ‘নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন : কোভিড-১৯ এ সাড়াদান ও সঙ্কট উত্তরণের উত্তম অনুশীলন’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টে প্রদত্ত বক্তৃতায় একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ, রুয়ান্ডা ও এলসালভেদর মিশন এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার যৌথভাবে ইভেন্টটির আয়োজন করে। তিনটি আঞ্চলিক গ্রুপ থেকে নারী উদ্যোক্তাগণ অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা কীভাবে কোভিড-১৯ অতিমারি মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সে অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছাড়াও এলসালভেদরের স্থায়ী প্রতিনিধি এগ্রিসেল্ডা লোপেজ এবং রুয়ান্ডার স্থায়ী প্রতিনিধি ভ্যালেন্টাইন রুগওয়াবিজা ইভেন্টটিতে বক্তব্য রাখেন।
তাঁরা নারীদের জন্য স্ব স্ব দেশের সরকার গৃহীত কোভিড পুনরুদ্ধার ও প্রণোদনা পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন। ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার এর নিউইয়র্ক প্রতিনিধি প্যানেল আলোচনা পর্বটি সঞ্চালনা করেন।
বিশ্বব্যাপী নারীদের উপর কোভিড অতিমারির তীব্র অর্থনৈতিক প্রভাবের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, কোভিড অতিমারির সাড়াদান ও পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা সমূহে অবশ্যই নাজুক পরিস্থিতিতে পতিত নারীদেরকে বিবেচনায় নিতে হবে। সমাজকে কোভিড পূর্ব অবস্থার থেকেও ভালো অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নারীরা যাতে সমান ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে তা এ সকল প্রচেষ্টায় থাকতে হবে মর্মেও জোর দেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, অনানুষ্ঠানিক খাত ও বিভিন্ন সেবাখাতে নিয়োজিত নারীকর্মী এবং তৈরি পোশাক শিল্প ও বিদেশ থেকে প্রত্যাবাসিত অভিবাসী নারী কর্মীসহ সকল নারীদের উপর কোভিড-১৯ এর ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ ও সুনির্দিষ্ট সহায়তা ব্যবস্থা ঘোষণা করেছে।
তিনি আরও বলেন, নারীদের আয় ও চাকুরী হারানোর ক্ষতি পুষিয়ে দিতেবাংলাদেশ সরকার সকল জেলায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সুদ ও জামানত বিহীন ঋণ, পুনঃ দক্ষতায়ন প্রশিক্ষণসহ দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি, বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং ডিজিটাল অর্থনীতিতে নারীদের প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এক্ষেত্রে দেশের বেসরকারী খাত, সিভিল সোসাইটি, গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা ও অবদানের কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
ইভেন্টটিতে বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করেন নারী উদ্যোক্তা এবং তরঙ্গ-এর প্রধান নির্বাহী কোহিনুর ইয়াসমিন। কীভাবে তাঁর সংস্থা কোভিড অতিমারি ও লকডাউন সত্ত্বেও বাড়িতে উৎপাদিত পণ্য এবং ডিজিটাল বিপনন ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পেরেছে তা তুলে ধরেন তিনি। লকডাউনের মধ্যে কর্মীদের বেতন দিতে সরকার প্রদত্ত আর্থিক প্যাকেজসমূহ কীভাবে তাঁকে সাহায্য করেছে তাও উল্লেখ করেন কোহিনুর ইয়াসমিন।
তিনটি আঞ্চলিক গ্রুপের বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নারী উদ্যোক্তা ও প্রতিনিধি অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন।