শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১০ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

করোনাকালে এ দেশের মতো সাংবাদিকদের সহায়তা উপমহাদেশে বিরল : তথ্যমন্ত্রী

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০২০

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, করোনাকালে বাংলাদেশে যেভাবে সাংবাদিকদের সহায়তা করা হচ্ছে, ভারত-পাকিস্তানসহ উপমহাদেশের কোথাও এমন উদাহরণ নেই।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং যেভাবে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের করোনাকালীন সহায়তা দেয়া হচ্ছে তা আশেপাশের কোন দেশে দেয়া হচ্ছেনা। ভারতে দেয়া হচ্ছে না, নেপালে দেয়া হচ্ছে না, পাকিস্তানেও দেয়া হচ্ছে না।”
মন্ত্রী গতকাল ৩০শে জুলাই যশোর সার্কিট হাউজ সভাকক্ষে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে খুলনা বিভাগের ৯ জেলার সাংবাদিকদের মধ্যে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তেব্যে একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “৩০শে জুন বাজেট পাশের দিন আমার পিএস ফোনে জানালো সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাষ্টের যে টাকা দিতে বলেছিলেন সে টাকা অর্থ মন্ত্রনালয় ছাড় করছেনা। আপনাকে অর্থ মন্ত্রীর সাথে কথা বলতে হবে। আমি পার্লামেন্টেই অর্থ মন্ত্রীর কাছে ছুটে যাই এবং টাকাটা ছাড় করে দেয়ার ব্যবস্থা করি।”
প্রাথমিক ভাবে এই সহায়তা দেয়া হচ্ছে এবং পর্যায়ক্রমে আবারও দেয়া হবে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকার সকলের। যারা সব সময় সরকারের সমালোচনা করে সেই সাংবাদিকদেরও সহায়তা দেয়া হবে। ’
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অনেক নেতা-কর্মী, এমপি, মন্ত্রী মারা গেছেন। আর ঘরে বসে বিএনপির নেতারা টেলিভিশনে উঁকি দিয়ে মুখ দেখাচ্ছে। তারা মানুষের পাশে নেই।
তিনি বলেন, অনেক ধনী দেশে করোনাকে অবজ্ঞা করা হয়েছিল এবং সেই দেশগুলোতে এখনো মৃত্যুর মিছিল চলছে। পৃথিবীর কোন জায়গা এই ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকেনি। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে করোনা থেকে মুক্ত রাখতে যতটুকু সম্ভব সেটি করার চেষ্টা করে আসছেন।
মন্ত্রী বলেন, চীনের উহানে যখন প্রথম করোনাভাইরাস দেখা দিল, তখন উহান থেকে সরকারী খরচে বিমানে করে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হলো সরকারী খরচে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে যখন প্রবাসী বাংলাদেশীরা আসছিল, তখন তাদেরকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় বিমান বন্দরে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে জাহাজ আসে, সে জাহাজের নাবিকদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তারপরেও আমরা করোনা মুক্ত থাকিনি। ৮ই মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর শততম জন্ম বার্ষিকী পালনের প্রস্তুতি গ্রহন করেছিলাম। ১৭ই মার্চ জাতির পিতার শুভ জন্মদিন এবং ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচি বাতিল করা হয়। দেশের মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেয়ার জন্যে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, “করোনাকালে একদিনও ঘরে বসে থাকিনি। মন্ত্রী, এমপি, জাতীয় নেতা অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। যেকোন সময় করোনায় আক্রান্ত হতে পারি এবং তাতে মৃত্যুও হতে পারে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ২ জন সদস্য, মন্ত্রী, সংসদ সদস্যেরও মৃত্যু হয়েছে। তাই বলে আমরা কেউ ঘরে বসে থাকিনি। হাত গুটিয়ে ঘরে বসে থাকার শিক্ষা আমাদের নেত্রী আমাদের দেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭৪ বছর বয়সে একদিনের জন্যেও বসে থাকেননি। তিনি মানুষের জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন। আর বিএনপির নেতারা টেলিভিশনে উঁকি দিয়ে কথা বলেন। জনগণের পাশে তারা নেই।”
‘করোনায় আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যুর হার পৃথিবীর সর্বনিম্ন যে কটি দেশ তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম এবং এটা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সফল নেতৃত্বের কারণে’ উল্লেখ করে ড.হাছান বলেন, বালাদেশে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলংকার চেয়েও মৃত্যুর হার কম। বাংলাদেশ একটি খেটে খাওয়া মানুষের দেশ। কোটি কোটি মানুষ প্রাত্যহিক উপার্জনের উপর নির্ভর করে। এই দেশে গত প্রায় পাঁচ মাস সময় ধরে লোকজন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। এই সময়ে বাংলাদেশে অনেকের কাজকর্ম বন্ধ। কিন্তু একটি মানুষও না খেয়ে মৃত্যুবরণ করেনি। এটি জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের কারনে সম্ভব হচ্ছে।’
তিনি বলেন, কোথাও খাদ্যের জন্যে হাহাকার নেই। সরকার যেমন হাত বাড়িয়েছে, আমাদের দলের নেতারাও হাত বাড়িয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, আমাদের শ্রদ্ধাভাজন নেতা জাতীয় ৪ নেতার অন্যতম ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর সুযোগ্য পুত্র মোহাম্মদ নাসিম করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন মানুষকে। ১৪ দলকে সক্রিয় রেখেছিলেন সে কারণে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হাজী মকবুল মৃত্যুবরণ করার ১০ দিন আগেও ত্রাণ বিতরণ করেছেন। এভাবে আরো অনেক নেতা, ধর্মমন্ত্রী শেখ মোহম্মদ আব্দুল্লাহ, সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমসহ অনেকেই মানুষের জন্যে কাজ করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরাও সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছেন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, সাংবাদিকরা জীবনটাকে হাতের মুঠোয় নিয়ে কাজ করছেন। এই জন্যে তাদেরকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান তিনি।
মন্ত্রী গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যম কর্মিদের সরকারের সাথে সমন্মিতভাবে কাজ করার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের জীবন যাত্রার যে পরিবর্তন হয়েছে তা কোন জাদুর কারণে নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বের কারনে। শেখ হানিসা শুধু বাংলাদেশের নেতা নন তিনি বিশে^র কাছেও অনুকরনীয় নেতৃত্বের উদাহরণ। তিনি সংবাদপত্র মালিকদের অসুবিধা সাংবাদিকদের সাথে ভাগ করে নেয়ার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন(বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহামুদ, জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মিলন রহমান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ খুলনা বিভাগের ৯ জেলার সাংবাদিক নেতাদের হাতে ৩৩৮ জন সাংবাদিকের সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন। এর মধ্যে যশোর ৪৮ জন, খুলনা ১১৪ জন, মাগুরা ২৭ জন, মেহেরপুর ২৫ জন, সাতক্ষীরা ৩৪ জন, চুয়াডাঙ্গা ২৮ জন, ঝিনাইদহ ২৯ জন, নড়াইল ২৭ জন ও বাগেরহাটে ৬ জন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!