॥তনু সিকদার সবুজ॥ সংক্রামণ রোগ(প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ ও সরকারী স্বাস্থ্য বিধি অমান্য করে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও জাঁকজমকপূর্ণভাবে ছেলে আয়াতুল্লাহ্র বৌ-ভাতের বিশাল অনুষ্ঠান করলেন বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সুপার(ও.এস) এস.এম আসলাম।
করোনা মহামারীর মধ্যে গতকাল ১১ই জুলাই দুপুরে বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ইলিশকোল গ্রামের নিজ বাড়ীতে নজিরবিহীন এই বৌভাত অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এস.এম আসলাম। সরকারী কর্মচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ৫শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথি এই বৌভাত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানস্থলে সামাজিক দূরত্বসহ কোন ধরণের স্বাস্থ্যবিধি না মানা হচ্ছে না। স্বাভাবিক সময়ের মতোই বিপুল সংখ্যক অতিথি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে। বাড়ীর ভিতরে-বাইরে অনুষ্ঠানের প্যান্ডেলসহ সর্বত্র মানুষে গিজগিজ করছে। বাড়ীর বাইরে অতিথিদের নিয়ে আসা অর্ধ-শতাধিক মোটর সাইকেল, মাইক্রোবাস ও অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহন অপেক্ষমাণ রয়েছে।
যখন সারা দেশের মানুষ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, ঠিক এমন সময়ে খোদ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সুপার এস.এম আসলাম কর্তৃক এ ধরণের সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় সবার মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে এস.এম আসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে আসলাম তার ছেলের বিয়ের বিষয়টি বলেছিলেন। আমি তাকে পারিবারিকভাবে বিয়ের কাজটি সম্পন্ন করতে বলেছিলাম। স্বাস্থ্য বিধি না মেনে বড় পরিসরে বৌ-ভাতের আয়োজন করে থাকলে বিধি মোতাবেক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাফিন জব্বার বলেন, এটা নিঃসন্দেহে একটি জঘন্যতম কাজ এবং রাস্ট্রীয় আইনের পরিপন্থী। এই ঘটনার জন্য তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এ ঘটনায় বালিয়াকান্দিবাসী করোনার চরম ঝুঁকিতে পড়ল। বিষয়টি আমাকে কেউ আগে অবগত করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতাম। তারপরেও এটি নিয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলবো।
উল্লেখ্য, রাজবাড়ী জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ১০ই জুলাই পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮৭ জন। আক্রান্ত এলাকার মধ্যে বালিয়াকান্দি উপজেলা অন্যতম হটস্পট।