॥যুক্তরাষ্ট্রে নিউজার্সি থেকে বিশ্বজিৎ দে বাবলু॥ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আমেরিকায় মৃত্যু কমলেও বেড়েছে নতুন শনাক্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় মার্কিন মুল্লুুকে ৪৪হাজার ৭৩৪জন নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন। ফলে দেশটিতে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮১১ জনে দাঁড়িয়েছে।
গত সোমবার(রাত ১১টা স্থানীয় সময়) পরিসংখ্যান বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এছাড়া গেল ২৪ ঘণ্টায় ৩৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৭৮৩ জনে। বিপরীতে সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ২০ হাজার ৪২৩ জন। বিপরীতে অসুস্থ হয়েছেন ১১ লাখ ১৭ হাজার ১১৭ জন।
আমেরিকার প্রায় সব অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। এর মধ্যে সব থেকে বাজে পরিস্থিতি নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউজার্সি, ফ্লোরিডা, টেক্সাস, ইলিনয়েস, মাসাচুটেসের মতো অঙ্গরাজ্যে। আক্রান্ত এবং মৃত্যুতে বর্তমানে শীর্ষে রয়েছে যথাক্রমে নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউজার্সি, টেক্সাস, ফ্লোরিডার মতো অঙ্গরাজ্য।
এদিকে নিউইয়র্কে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ১৭ হাজার ৩২৮ জন । গত ২৪ ঘন্টায় আরও ১২ জন নতুন নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩১ হাজার ৪৯৬ জন। সেখানে করোনার অ্যাক্টিভ কেস ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৯৪টি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ২২ হাজার ৯৬১ জন ।৪০ জন নতুন নিয়ে ওই অঙ্গরাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৫ হাজার ৯৭৫ জন। সেখানে করোনার অ্যাক্টিভ কেস ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৫টি।
অপরদিকে নিউজার্সিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় আরও ৫ জন নতুন নিয়ে এখানে মারা গেছে ১৫ হাজার ১২৩ জন এবং করোনার অ্যাক্টিভ কেস ১ লাখ ১৮ হাজার ৯২৬টি।
এ অবস্থার মধ্যেই নিউজার্সির বিপণী বিতান খুলে দেয়া হয়েছে। এদিকে মাস্ক না পরতে চাওয়ায় ট্রাম্পের বিপক্ষে তার দলেরই বেশ কয়েকজন নেতা। নিউজার্সির এই রে¯েঁÍারার সামনে অপেক্ষারত ক্রেতাদের ভিড় দেখে বোঝা মুশকিল যুক্তরাষ্ট্রের করোনা সংক্রমণের হার কত বেশি। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিপণী বিতান ও সেলুন চালু হলেও সাধারণ মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই আসতে বলা হয়েছে।
এদিকে জ্বর, কাশির পাশাপাশি এবার করোনা সংক্রমণের নতুন আরও কয়েকটি উপসর্গ চিহ্নিত করেছে মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থা সিডিসি। এ নিয়ে রীতিমতো আতঙ্ক বিরাজ করছে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মধ্যে। তারা মনে করছেন, এমন নতুন নতুন উপসর্গ প্রতিনিয়ত দেখা দিলে, করোনা প্রতিষেধক তৈরিতে আসবে ধীরগতি। আর এর কারণে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যাও হবে আকাশ ছোঁয়া। তবে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন মন্তব্য করেননি তারা।
আরও নতুন ৩টি উপসর্গ মিলিয়ে মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থা সিডিসি এর তালিকায় এখন করোনার মোট ১২টি উপসর্গ জায়গা করে নিয়েছে। জ্বর, কাশির পাশাপাশি নাক থেকে ক্রমাগত পানি গড়ানো, সারাক্ষণ বমি বমি ভাব এবং ডায়রিয়ার মতো অত্যন্ত সাধারণ লক্ষণও করোনা উপসর্গের তালিকায় রয়েছে।
মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থা সিডিসি জানায়, পেশীর যন্ত্রনা, মাথা ও বুকের ব্যাথা, মুখ ও ঠোট নীলচে হয়ে যাওয়া, সারাক্ষণ ঝিমুনি ভাব ইত্যাদি করোনার উপসর্গ হিসাবে আগেই ছিল। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হল নাক থেকে ক্রমাগত জল গড়ানো, সারাক্ষণ বমি বমি ভাব এবং ডায়রিয়ার মতো উপসর্গগুলিও। এর আগে, জ্বর, কাশি আর শ্বাসকষ্ট ছাড়াও করোনা আক্রান্ত রোগীদের ডায়রিয়া, চর্মরোগ, ঘা, ফুসকুড়ি ও ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট মশার কামড়ের মতো র্যাশ দেখা যেতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।