বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৪ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

মীর মশাররফ হোসেনের সমাধিস্থলে দিন দিন দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে

  • আপডেট সময় শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৯

॥সোহেল মিয়া॥ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে ২০০১ সালে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে ‘বিষাদ-সিন্ধু’র রচয়িতা কালজয়ী সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের সমাধিস্থলে নির্মাণ করা হয় ‘মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতিকেন্দ্র’। কিন্তু শুরু থেকেই দর্শনার্থী শূন্যতায় ভুগছিল কেন্দ্রটি।
অবশেষে ২০১৮ সাল থেকে সেখানে দর্শনার্থীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। স্মৃতিকেন্দ্রটি দেখাশোনার জন্য বাংলা একাডেমী একজন প্রোগ্রাম অফিসারকে নিয়োগ দেয়। কমপ্লেক্সটির শোভাবর্ধনের কাজসহ ব্যতিক্রমী কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করার ফলে এখন প্রতিদিনই বাড়ছে দর্শনার্থীর সংখ্যা।
স্মৃতিকেন্দ্রটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ২০০-৩০০ দর্শনার্থী সেখানে আসেন।
সরেজমিনে স্মৃতিকেন্দ্রটিতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির সমৃদ্ধিকল্পে বাংলা একাডেমী বহুমাত্রিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মূল গেটে প্রবেশ করার পরই কেন্দ্রটির মধ্যে যাওয়ার জন্য যে রাস্তাটি রয়েছে তার দু’পাশে শোভাবর্ধনের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। দর্শনার্থীদের সাথে মীর মশাররফ হোসেনের রচনাবলীকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য ল্যাম্প পোস্টগুলোর গায়ে তার বিভিন্ন উপন্যাস ও নাটক সম্পর্কে ছোট ছোট সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। যেগুলো দর্শনার্থী ও পাঠকদের মনের চাহিদা পূরণ করছে।
মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতিকেন্দ্রে ঘুরতে যাওয়া বালিয়াকান্দি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী জিম ও রিতম দে বলেন, আমরা যারা শিক্ষার্থী আছি তারা মীর মশাররফ হোসেন সম্পর্কে ততটা জানি না। এখানে প্রবেশ করার পরই ল্যাম্প পোস্টগুলো গায়ের সাথে তার রচিত সাহিত্যের পরিচিতির যে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে তা আমাদের জন্য অনেক কাজে লাগবে। কর্তৃপক্ষের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।
মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুন্সী আমীর ও দপ্তর গবেষণা সম্পাদক চৌধুরী রফিকুন্নবী টিটো বলেন, মীর মশাররফ হোসেনের সাহিত্যকর্মের সাথে পাঠক ও দর্শনার্থীদের পরিচয় ঘটানোর জন্য কর্তৃপক্ষ যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। তার সৃষ্টিকর্ম নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে বাংলা একাডেমী আরো উদ্যোগী হবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছি আমরা।
বাংলা একাডেমীর প্রোগ্রাম অফিসার ও স্মৃতিকেন্দ্রটির দায়িত্বরত কর্মকর্তা শেখ ফয়সল আমিন বলেন, বাংলা একাডেমী মীর মশাররফ হোসেনের স্মৃতি ও তার সৃষ্টিকর্মকে পাঠকদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য এই কেন্দ্রটি স্থাপন করেছে। যার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে এখানে প্রতিদিন গড়ে ২০০-৩০০ দর্শনার্থী আসছেন। দর্শনার্থীদের জন্য এখানে একটি সমৃদ্ধশালী লাইব্রেরী রয়েছে, যাতে ১হাজার ২৫১টি বই রয়েছে। লাইব্রেরীটি পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত। এখানে বসেই তারা বই পড়তে পারেন।
উল্লেখ্য, মীর মশাররফ হোসেন ১৮৪৭ সালের ১৩ই নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার গৌরি নদীর তীরবর্তী লাহিনীপাড়ার মামা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ও মা দৌলতন নেছা। ১৯১১ সালের ১৯শে ডিসেম্বর তিনি পদমদী গ্রামে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর সেখানেই মহান এই মনীষীকে সমাহিত করা হয়। তার সমাধিস্থলেই রয়েছে তার ভাই মীর মোকাররম হোসেন এবং দুই স্ত্রী বিবি খোদেজা বেগম ও বিবি কুলসুমের কবর।
বিষাদ সিন্ধু ছাড়াও মীর মশাররফ হোসেনের লেখা ‘উদাসী পথিকের মনের কথা’ (১৮৯০), ‘গাজী মিয়ার বস্তানী’, ‘জমিদার দর্পণ’ (১৮৭৩), আত্মকাহিনীমূলক রচনাবলী ‘আমার জীবনী’, ‘বিবি কুলসুম’ (১৯১০)সহ গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, প্রবন্ধ ও ধর্ম বিষয়ক ৩৭টি বই বাংলা সাহিত্যের অমর সৃষ্টি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!