॥বালিয়াকান্দি প্রতিনিধি॥ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলাতে এ বছর ‘সাথী ফসল’ হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। আশানুরূপ ফলন পেয়ে তারা অত্যন্ত খুশি।
মিষ্টি কুমড়া বাংলাদেশের অতি পরিচিত একটি ফসল, যা সবজি হিসেবে বহুল ব্যবহৃত হয়। দেশের অধিকাংশ অঞ্চলেই মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়ে থাকে। তবে বেলে ও দো-আঁশ মাটিতে মিষ্টি কুমড়ার ফলন ভালো হয়। মিষ্টি কুমড়া থেকে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও প্রোটিন পাওয়া যায়। খেতে সুস্বাদু, সহজলভ্য ও তূলনামূলকভাবে দাম কম হওয়ায় নি¤œ আয়ের মানুষের কাছে এর চাহিদা সবচেয়ে বেশী।
বালিয়াকান্দি উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের সর্বত্রই কম-বেশী মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়ে থাকে। চাষ করা মাটিতে এবং জানালা(মাঁচা) করে দু’ভাবেই মিষ্টি কুমার চাষ হয়। এ অঞ্চলে মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার চাষই বেশী হয়। এ বছরও বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চাষীরা তাদের মরিচ ক্ষেতের মধ্যে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে জামালপুর ইউনিয়নে মিষ্টি কুমড়ার চাষ বেশী হয়েছে। চাষীরা জানান, মরিচ ক্ষেতের মধ্যে সাথী ফসল হিসেবে ৪ মাস আগে মিষ্টি কুমড়ার বীজ রোপন করেছিলেন। বীজগুলো থেকে চারা গজিয়ে এখন বেশ বড় ও হৃষ্টপুষ্ট হয়ে মরিচ গাছের উপর দিয়ে বেয়ে ফুল ফুটে মিষ্টি কুমড়া ধরেছে। বর্তমানে গড়ে একেকটি মিষ্টি কুমড়ার ওজন ৫ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত হয়েছে।
জামালপুর ইউনিয়নের খামার মাগুরা গ্রামের চাষী রশিদ মিয়া বলেন, আমরা অনেক দিন ধরেই মরিচ ক্ষেতের মধ্যে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে আসছি। এ বছর ২৫০ শতাংশ মরিচ ক্ষেতের মধ্যে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছিলাম। এখন মিষ্টি কুমড়া তুলে জামালপুর বাজারে নিয়ে ৮শত/সাড়ে ৮শত টাকা মণ দরে বিক্রি করছি।
একই এলাকার চাষী রাজ্জাক মিয়া বলেন, আমি এ বছর মরিচ ক্ষেতের মধ্যে ১৪০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছিলাম। এখন কুমড়া তুলে বাজারে নিয়ে বিক্রি করছি। ইউনুছ আলী নামের আরেক চাষী বলেন, আমি মরিচ ক্ষেতের মধ্যে ৮০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি কুমড়ার বীজ রোপন করেছিলাম। পরিচর্যা করতে তেমন অসুবিধা হয়নি। ফলনও ভালো হয়েছে। তাদের মতো মিষ্টি কুমড়া চাষীদের সকলেই লাভবান হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থকে পাইকাররা এসে মিষ্টি কুমড়া কিনে ট্রাকযোগে নিয়ে যাচ্ছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাখায়াত হোসেন জানান, এ বছর উপজেলার অন্তত ৬শত হেক্টর জমির মরিচ ক্ষেতের মধ্যে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করে চাষীরা লাভবান হয়েছে। ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পাচ্ছে। এতে তাদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।