॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ২০শে অক্টোবর সকালে কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে সদ্য প্রয়াত গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নূরুল ইসলামের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
জেলা প্রশাসক প্রশাসক ও কমিটির সভাপতি দিলসাদ বেগমের সভাপতিত্বে সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মাহফুজার রহমান সরকার, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডঃ ইমদাদুল হক বিশ্বাস, পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদ হাসান ওদুদ, কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটো, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মোঃ বাকাহীদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ আশেক হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর) মোঃ ফজলুল করিম, বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান, পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী খান এ শামীম, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভুরাম পাল, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী(চঃ দাঃ) কে.বি.এম সাদ্দাম হোসেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদা ফেরদৌসী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ফজলুর রহমান, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোলাম মোঃ আজম ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাঃ মজিনুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনারগণ ও বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সদস্য গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নূরুল ইসলাম গত ১৭ই অক্টোবর অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করায় কমিটির পক্ষ থেকে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে দোয়া করছি।
তিনি বলেন, জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমানের পদোন্নতিজনিত বিদায় আজকে একদিকে যেমন আনন্দের তেমনি এই কমিটির সুযোগ্য একজন সদস্য হিসেবে তার চলে যাওয়া আমাদের জন্য বেদনারও। বাস্তবতা হলো সকল বিষয়কে মেনে নিয়েই আমাদেরকে সামনের দিনগুলোতে এগিয়ে যেতে হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, সরকার কর্তৃক ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে নদীতে ইলিশ মাছ ধরাা উপর নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকলেও সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনেকেই নদীতে মাছ ধরছে। সে কারণে জেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য মতে, অভিযান শুরুর পর থেকে আজ পর্যন্ত ২৩০ জন জেলেকে নদী থেকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ২১৭ জন জেলেকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে জেলে প্রেরণসহ অন্যদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ কারেন্ট জাল জব্দ করে জনসম্মুখে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস ও উদ্ধারকৃত ইলিশ মাছ বিভিন্ন এতিমখানা-মাদ্রাসা ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ৪টি নৌকা জব্দ করে নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। এরপরও নিষেধাজ্ঞা চলাকালে যারা নদী থেকে ইলিশ মাছ ধরবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাসহ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
জেলার উন্নয়ন কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। যাতে দেশের সকল উন্নয়ন কার্যক্রমের সাথে রাজবাড়ী জেলার উন্নয়ন কার্যক্রমে সমান অগ্রগতি সাধনের মাধ্যমে আমরা সরকার ষোষিত ২০২১ সালের ভিশন বাস্তবায়নে অগ্রগতি সাধন করতে পারি।
এছাড়াও সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের বাসভবন, দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির স্থাপনা, জেলার ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও ডাক্তার সংকটসহ স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন বিষয়, জেলা পরিষদের উন্নয়ন কার্যক্রম, গোয়ালন্দ মোড়ের ভাস্কর্যের অবশিষ্ট কাজ সমাপ্তকরণ, গণপূর্ত বিভাগের সার্কিট হাউজ, জেলা-উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজের অগ্রগতি, এলজিইডির মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ-হস্তান্তর, বিভিন্ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও স্থায়ীত্ব বৃদ্ধিকরণ, সড়ক বিভাগের রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজের অগ্রগতি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধের ২য় প্রকল্প, দৌলতদিয়া ঘাট ও অন্যান্য স্থানের নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের রাজবাড়ী পৌরসভার ২য় পানি শোধনাগার প্লান্টের কাজের অগ্রগতিসহ জেলার বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এছাড়াও সভায় পদোন্নতিজনিত কারণে বদলী হওয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমানকে ফুল ও উপহার সামগ্রী দিয়ে বিদায় জানানো হয়।