॥স্টাফ রিপোর্টার॥ চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পসহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭ হাজার ৭৪৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত মোট ১৩টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
গতকাল ৯ই জুন ঢাকার শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
একনেক বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, একনেক সভায় মোট ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৭ হাজার ৭৪৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ৪১৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে প্রকল্প সাহায্য পাওয়া যাবে ১ হাজার ১৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ১৮৯ কোটি টাকা।
অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে ১০টি নতুন প্রকল্প এবং ৩টি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে বলে তিনি জানান।
এম এ মান্নান বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় আনোয়ারা, পটিয়া, হাটহাজারী এবং চট্টগ্রাম শহরের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার অবকঠামো উন্নয়ন করা হবে। বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের সড়ক-মহাসড়কগুলো প্রশস্ত ও পুরু করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া তিনি ধীরগতির যান চলাচলের জন্য আলাদা লেন এবং মহাসড়কে বাস-বে তৈরির পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তারা যাতে টয়লেটসহ আনুসঙ্গিক প্রয়োজনীয় সুবিধাদি দিতে পাওে সেজন্য জমি নির্ধারণের নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী ডাক বিভাগকে আধুনিকায়নের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ডিজিটাল ডাকঘর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অনলাইনে আর্থিক সেবাসহ অন্যান্য সেবা কর্মকান্ড পরিচালনা করতে হবে। যাতে তারা নিজেরাই আয় করতে পারে। তা না হলে ডাক বিভাগ আগামীতে আর থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগারগাঁও এ নতুন জিপিও ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সেটি যেন সবুজ পার্ক হয়। সেখানে যেন মানুষ অবসরে ঘুরতে যেতে পারেন, সে ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন থেকে যে জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় হবে, সেই জেলার কলেজসমূহকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত করতে হবে।
একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জানান, কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় ন্যাচারাল পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে।
একনেক অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হলো-বগুড়া-নাটোর জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্তকরণে উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭০৭ কোটি টাকা। ঢাকা-উথুলি-পাটুরিয়া জাতীয় মহাসড়ক আমিনবাজার হতে পাটুরিয়ার ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকা ডেডিকেটেড লেনসহ সার্ভিস লেন ও বাস- বে নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬৯৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা। লাকসাম-বাইয়ারা বাজার-ওমরগঞ্জ-নাঙ্গলকোট জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬১ কোটি টাকা। মর্ডানাইজেশন অব সিটি স্ট্রিট লাইট সিস্টেম এ্যাট ডিফারেন্ট এরিয়া আন্ডার চিটাগাং সিটি করপোরেশন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অধীনস্ত জরাজীর্ণ ডাকঘরগুলোর সংস্কার পুনর্বাসন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২২৫ কোটি টাকা। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ৯৮৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর আধুনিকায়ন ও শক্তিশালীকরণ এবং ১৩টি জেলা কার্যালয় স্থাপন প্রকল্পের খরচ হবে ২২৬ কোটি টাকা। বিএডিসির বিদ্যমান সার গুদামসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ, পুনর্বাসন এবং নতুন গুদাম নির্মাণের মাধ্যমে সার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩১১ কোটি টাকা।
এছাড়া নদীর তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে মেঘনা নদীর ভাঙ্গন হতে ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলা সদর সংরক্ষণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬০৯ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক, কক্সবাজারের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১২৬ কোটি টাকা। ব্রাক্ষণবাড়ীয়া জেলার ৯টি ব্রীজ নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১২০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।