॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ফেরী ঘাট ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ(বিআইডব্লিউটিএ) বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার পর এখন রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো) ফেলছে।
সম্প্রতি কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টি ও নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দৌলতদিয়ার ৬টির মধ্যে ৩টি ঘাটের কিছু স্থান দেবে যায়। দেবে যাওয়া স্থান মেরামত ও ভাঙ্গন প্রতরোধে বালুভর্তি বস্তা ফেলা শুরু হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, দৌলতদিয়ার ৪নম্বর ঘাটের কাছে রাজবাড়ী পাউবো ২৫০ কেজি ওজনের বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে। তার আগে ৫নম্বর ঘাটের কাছে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়। শ্রমিকেরা বড় ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে বালু নিয়ে বস্তায় বালু ভর্তি করছে। কয়েকজন শ্রমিক যন্ত্র দ্বারা বস্তার মুখ সেলাই করছে।
শ্রমিকরা জানান, ঈদের আগে ঘাটের কাছে যেসব স্থানে মাটি দেবে যায় বা ভাঙ্গন দেখা দেয় সেখানে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়। ৪ ও ৫নম্বর ঘাটে দেখা যায়, মাঝামাঝি কিছু স্থান দেবে গেছে। বাতাসে পানির ঢেউ এসে পারে আঘাত করায় মাটি ধ্বসে পড়ছে। কয়েকদিন ধরে পানি বৃদ্ধি স্থিতিশীল হওয়ায় ভাঙ্গন কম দেখা যাচ্ছে।
বালু ভর্তি জিও ব্যাগ সেলাইকালে শ্রমিক মোতালেব প্রামানিক বলেন, আমি ৪দিন ধরে জিও ব্যাগ সেলাই করছি। আমার আগে আরো একজন শ্রমিক বস্তা সেলাই করেছে। প্রতিদিন হাজারের ওপর বস্তা সেলাই করা হয়।
ঘাট সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, বর্ষার আগে ফেরী ঘাটের বিভিন্ন স্থানে বিআইডব্লিউটিএ’র বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু ছিল তা নিয়ে স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন দেখা দেয়। তাদের জিও ব্যাগ ফেলা শেষ না হতে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয়তা দেখিয়ে প্রায় স্থানীয় ঠিকাদারের মাধ্যমে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ছয়টির মধ্যে ৪ ও ৫ নম্বর ঘাট বর্ষায় ভাঙ্গন ঝুকিতে থাকে। সম্প্রতি ভারি বৃষ্টিতে ও পদ্মায় পানি বৃদ্ধিকালে ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটের কাছে কিছু স্থান দেবে যায়। সেই সঙ্গে হালকা ভাঙ্গন দেখা দেয়। সেসব স্থানে ভাঙ্গন ঠেকাতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার জন্য বিআইডব্লিউটিএকে জানানো হয়। বর্ষার পানি বাড়তে থাকলে এবং ভাঙ্গন দেখা দিলে ৪ ও ৫নম্বর ঘাটটি অধিক ঝুকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ দৌলতদিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ শাহ আলম বলেন, দৌলতদিয়ার ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটের মাঝামাঝি, ৩ ও ৪ নম্বর ঘাটের মাঝামাঝি ও ১নম্বর ঘাটের ডাউনে বিভিন্ন স্থানে ভারি বৃষ্টিতে দেবে যায়। এছাড়া ঘাটের পন্টুনসহ এ্যাপ্রোচ সড়ক মেরামত করতে গত ২০শে এপ্রিল থেকে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়। যাতে আর দেবে না যায় এজন্য ১৩ই জুন পর্যন্ত প্রায় ২৩হাজার বস্তা ফেলা হয় বলে দাবী করেন। এখন আপাতাত খুব সমস্যা নেই। পাউবো’র বস্তা ফেলার কারণ জানতে চাইলে বলেন, এটা তাদের ব্যাপার।
দৌলতদিয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজবাড়ী পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ সরকার বলেন, গত ১৪ই মে আমরা উদ্বোধন করেছিলাম। ওই দিন শেষে দীর্ঘদিন বিরতির পর ১১ই জুন থেকে ফের শুরু করি। এর আগ পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে বালুর বস্তা ফেলে। মূলত বিআইডব্লিউটিএর কাজ ঘাট রক্ষা করা আর পাউবো’র কাজ নদী ভাঙ্গন ঠেকানো। জরুরী ভিত্তিতে দৌলতদিয়া ফেরী ঘাট রক্ষায় প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার সম্ভব্য ব্যয় নির্ধারণ করে পাউবো জিও ব্যাগ ফেলছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম মন্ডলের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ৩/৪টি গ্রুপ বালু ভর্তি বস্তা ফেলছে।