॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসারের আয়োজনে গতকাল ১লা জুন সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কালুখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর হুছাইনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলুল করিম, কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন্নাহার, কালুখালী থানার ওসি ফরহাদ হোসেন, আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী সাইফুল ইসলাম, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নূরে আলম সিদ্দিকী হক, অপর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটো প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আওয়ামী লীগের মনোনীত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে। নির্বাচনের কোনো সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। গতকালও আমার নির্বাচনী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। ৩জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচন করা কঠিন হবে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী নূরে আলম সিদ্দিকী হক বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীই যদি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন তাহলে অন্য প্রার্থীদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়।
তিনি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশন রাজবাড়ীর ৪টি উপজেলার নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছে। সব জায়গায় তা প্রশংসিত হয়েছে। কালুখালীর নির্বাচনেও সে ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই একটি মহল পরিবেশ বিনষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে। কয়েকদিন আগে ১৫/২০ জনের একটি মুখোশধারী দল তার গ্রামে গিয়ে নির্বাচন না করার জন্য মানুষকে হুমকি দিয়েছে। গত শুক্রবার বাংলাদেশ হাট মোড়ে তার সমর্থকদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। আমার চালককে মারধর করেছে। যদি নির্বাচনী আচরণ বিধি আমিও লঙ্ঘন করে থাকি তাহলে আমিও সাজা নিতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু কোনভাবেই যেন কেউ নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে। অস্থিতিশীল পরিবেশ যেন না হয়। আমরা সহাবস্থানে বিশ্বাসী। তা যেন অক্ষুন্ন থাকে।
অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটো বলেন, আমিও চাই নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে হোক। যেসব ঘটনা ঘটেছে তার তদন্ত হোক।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ফজলুল করিম বলেন, নির্বাচন ফ্রি এন্ড ফেয়ার হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। কোনোভাবে কাউকে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতে দেয়া হবে না। কোন ব্যত্যয় ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তাহীনতার কোন অবকাশ নেই। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করণীয় তার সবই করা হবে। কালুখালী রেকর্ড সংখ্যক পুলিশ ফোর্স নিয়োজিত থাকবে।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আলমগীর হুছাইন বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমাণিত হলে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পেশী শক্তি ব্যবহার করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া যাবে-এ কথা যেন কেউ স্বপ্নেও না ভাবে। কোনভাবেই কাউকে পেশী শক্তি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। সবাই নিরাপদে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। উপজেলার বাইরের কেউ নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না। এমন হলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।