॥হেলাল মাহমুদ॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানগঞ্জ ও চন্দনী ইউনিয়নে বন বিভাগের ৩শতাধিক মূল্যবান গাছ দিবালোকে কেটে নিয়েছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। কর্তনকৃত মেহগনি, শিশু, কড়ই ইত্যাদি বিভিন্ন প্রজাতির ৩শতাধিক গাছের আনুমানিক মূল্য ৭লক্ষ টাকা।
জানা গেছে, খানগঞ্জ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জেল আহম্মেদ ওরফে তোফা’র নেতৃত্বে গত ৩দিনে প্রায় ২কিলোমিটার এলাকার বন বিভাগের গাছগুলো কেটে নেয়া হয়। কাটার পর কিছু গাছ স্থানীয় বেলগাছী বাজারের শামীম প্রামানিকের স’মিলে নিয়ে স্তুপ করে রাখা হয়, আর কিছু গাছ অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৮শে জানুয়ারী রাজবাড়ী থানার পুলিশ গিয়ে ওই স’মিলে থাকা গাছগুলো জব্দ করে স’মিলের মালিকের জিম্মায় রেখে আসে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম আক্কাস বলেন, ঘটনাটি খুবই ন্যাক্কারজনক। এর হোতা তোফাজ্জেল আহম্মেদ ওরফে তোফা ৫বছর আগেও সে ঘাড়ে করে গামছা ফেরী করতো। আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশের পর একশ্রেণীর নেতাদের শেল্টারে দুর্বৃত্তপনা করে আজ সে কোটি টাকার মালিক।
খানগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আকমল হোসেন বলেন, তোফাজ্জেল হোসেন যে অন্যায় করছে আমরা তার ধিক্কায় জানাই। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার জন্য আমি ইউনিয়ন আওলীগের নেতাদের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছি।
খানগঞ্জ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি আকমল হোসেন বলেন, তোফা’র নেতৃত্বে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। কেটে ফেলা কিছু গাছ শামীম প্রামানিকের স’মিলে রাখা হয়। সেখানে পুলিশ ও বন বিভাগের লোকজন এসেছিল। তারা গাছগুলো জব্দ করে রেখে গেছে।
খানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাহার হোসেন তকদির বলেন, আমি আমার নিজস্ব কাজে কয়েকদিন বাইরে ছিলাম। এর মধ্যেই গাছগুলো কাটা হয়েছে। কে বা কারা গাছগুলো কেটেছে তা আমি বলতে পারবো না। তবে গাছগুলো বন বিভাগের, তথা সরকারী সম্পত্তি। দায়ীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
স’মিলের মালিক শামীম প্রামানিক বলেন, কিছু গাছ তার স’মিলে এনে রাখা হয়। পরে রাজবাড়ী থানার এস.আই এনসের আলী ও এস.আই সোমনাথ এসে গাছগুলো জব্দ করে তার জিম্মায় পাহারা দিয়ে রাখতে বলে যান। পরে বন বিভাগের লোকজন এসেছিল। তারাও গাছগুলো মার্কিং করে গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আ’লীগ নেতা তোফাজ্জেল হোসেন তোফা অভিযোগ বলেন, আমি আমার জায়গার সামনে থেকে মাত্র ১টি গাছ কেটেছি। দক্ষিণ চৌবাড়িয়া গ্রামের কাদের মন্ডল, কামাল হোসেন, আরজু, নজরুল, ফজলু, শহীদ, সোহান, শহীদুল এরা গাছ কেটেছে। এককভাবে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ঠিক নয়।
চন্দনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সিরাজুল আলম চৌধুরী বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পেরে আমি তাৎক্ষণিক বিষয়টি প্রশাসনকে জানাই। তারা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে শুনেছি। পরে বিষয়টি আমি আর খতিয়ে দেখিনি।