॥হেলাল মাহমুদ॥ কানে হেডফোন লাগিয়ে মোবাইলে গান শোনার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে মর্মান্তিকভাবে ফিরোজ আহমেদ(২৭) নামের রডমিস্ত্রী নিহত হয়েছে। গতকাল ২০শে জানুয়ারী সকালে রাজবাড়ী শহরের ড্রাইস ফ্যাক্টরী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ফিরোজ রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের চরবেনীনগর গ্রামের দুলাল সরদারের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা পান্না জানান, সকাল ৮টার দিকে ফিরোজ রেল লাইনের উপরে দাঁড়িয়ে রোদ পোহাচ্ছিল। এ সময় সে কানে হেডফোন লাগিয়ে গানও শুনছিল। যার কারণে সে ট্রেন আসার শব্দ শুনতে পায়নি। ড্রাইস ফ্যাক্টরীর আজাদের দোকানের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটার পর ট্রেনের ইঞ্জিনের সাথে আটকে ফিরোজের দেহ প্রায় এক কিলোমিটার দূরের একটি রেল ব্রিজের উপরে গিয়ে পড়ে। এ সময় তার শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ দেহ খন্ড বিখন্ড হয়ে যায়।
এলাকাবাসী জানান, চার ভাইয়ের মধ্যে ফিরোজ ছিল মেজো। পেশায় তিনি ছিলেন রড মিস্ত্রী। তার উপার্জিত অর্থ দিয়েই ছোট এক ভাই ঢাকা কলেজে ও অন্য ভাই কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ^াবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। তার স্বপ্ন ছিলো ছোট ভাইদের তিনি বিসিএস ক্যাডার বানাবেন। এজন্য তিনি নিজে বিয়েও করেননি। কিন্তু ১১মাস আগে কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ^বিদ্যালয়ে পড়–য়া ছোট ভাই জহুরুল তার চাচাতো ভাই সালামের শ্যালিকাকে গোপনে বিয়ে করে। বিষয়টি ১৫দিন আগে জানাজানি হয়। ছোট ভাই বিয়ে করায় তার পড়াশোনা ক্ষতি হবে ভেবে তিনি চিন্তিত ছিলেন।
ফিরোজের মামী সুমি বেগম জানান, ছোট ভাই জহুরুলের বিয়ের বিষয়টি ১৫দিন আগে জানাজানি হলে সালামের স্ত্রী পপির সঙ্গে ফিরোজের ঝগড়া হয়। এসব বিষয় নিয়েই হয়তো ফিরোজ ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছেন।
রাজবাড়ী রেলওয়ে(জিআরপি) থানার আকবর হোসেন জানান, গোয়ালন্দ ঘাট থেকে আসা পোড়াদহগামী শাটল ট্রেনটি রাজবাড়ী রেল স্টেশন অতিক্রম করার পর ড্রাইস ফ্যাক্টরী এলাকায় পৌঁছালে এ ঘটনা ঘটে। মৃতের পরিবারের লোকজন মরদেহ ময়না তদন্ত ছাড়া নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ ময়না তদন্ত না করেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।