রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৪ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

রাজবাড়ী-২ ভোটের মাঠে সুবিধাজনক অবস্থানে আওয়ামীলীগ॥দৈন্যদশায় লাঙ্গল-ধানের শীষ॥অস্তিত্ব নেই আরো দুই প্রার্থীর!

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮

॥মোক্তার হোসেন॥ আগামী ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ (পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলা) আসনে প্রচার-প্রচারণায় নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম এগিয়ে রয়েছেন।
নেতাকর্মীরা লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে নৌকা বিজয়ের প্রত্যাশা নিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ, সভা-সভাবেশ, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণসহ নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ জিল্লল হাকিম, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি নাসিরুল হক সাবু, লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির আলহাজ্ব এডভোকেট এবিএম নুরুল ইসলাম, হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংগঠনের রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব নূর মোহাম্মদ মিয়া ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট সংগঠনের নাজমুল হাসান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোঃ জিল্লল হাকিম এর আগে ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান। ২০০১ বাদে ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। মুক্তিযুদ্ধকালীন গোয়ালন্দ মহকুমা কমান্ডার ছিলেন তিনি।
বিএনপির প্রার্থী নাসিরুল হক সাবু ২০০১ সালে ধানের শীষ নিয়ে এ আসনের এমপি নির্বাচিত হন। তিনি রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী আলহাজ্ব এবিএম নুরুল ইসলাম প্রাক্তণ এমএনএ ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী। তিনি ১৯৯৬ সালের পর প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও পরাজিত হন।
অপর দুই প্রার্থী আলহাজ্ব নূর মোহাম্মদ মিয়া ও নাজমুল হাসান তারা নির্বাচনে নতুন মুখ।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিম এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন, ব্রিজ-কার্লভাট, রাস্তাঘাট নির্মাণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এছাড়া পাংশা কলেজ, পাংশা জর্জ উচ্চ বিদ্যালয়, কালুখালী কলেজ, কালুখালীর রতনদিয়া রজনীকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়, বালিয়াকান্দি কলেজ ও বালিয়াকান্দি গার্লস হাইস্কুল সরকারীকরণসহ এলাকায় সার্বিক উন্নয়নে জনসাধারণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। এলাকার উন্নয়ন ও রাজনৈতিক বলিষ্ঠতার কারণে এলাকায় তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা সৃষ্টি হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের প্রচার-প্রচারণার গতি দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ধানের শীষ ও লাঙ্গলের প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়ছে।
সূত্রমতে, লাঙ্গলের প্রার্থী আলহাজ্ব এবিএম নুরুল ইসলাম বয়সে প্রবীণ। তিনি ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রায় ৬২হাজার ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন। ওই নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির উল্লেখযোগ্য কয়েকজন নেতা অন্যান্য দলে যোগ দেন। শুধুমাত্র নির্বাচনকালীন সময়ে এলাকায় এসে দল গোছাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। তাছাড়া জাতীয় পার্টির স্থানীয় পর্যায়ের অনেকেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ৯৬’র মত গতি ফিরে পাচ্ছেন না জাতীয় পার্টির প্রার্থী এবিএম নুরুল ইসলাম।
বিএনপির প্রার্থী নাসিরুল হক সাবু’র অবস্থাও নাজুক। প্রাথমিকভাবে এ আসনে নাসিরুল হক সাবু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর রশিদ ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব এডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক খান ৩জনকে দলীয় মনোনয়ন প্রদান করা হয়। তিনজনই মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। পরে চূড়ান্তভাবে বিএনপি থেকে নাসিরুল হক সাবুকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। বিএনপির অপর দুই প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেও বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে হারুন গ্রুপ ও সাবু গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ঐক্য প্রতিষ্ঠার হয়নি। বিএনপির নেতৃত্বে বিভক্তি ও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে বিএনপির প্রার্থী নাসিরুল হক সাবু প্রচার-প্রচারণায় গতি ফিরিয়ে আনতে পারছেন না। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ১লাখ ৩২হাজার ৭৯৯ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন নাসিরুল হক সাবু। এবারে সেই ভোট ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ হয়েছে তার।
এদিকে, মাঠে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির দৈন্যদশার সুফল ঘরে তুলতে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে নৌকা জয়যুক্ত করে রাজবাড়ী-২ আসনটি শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এ লক্ষে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিল্লুল হাকিম নিজে প্রতিদিন ৭/৮টি নির্বাচনী সভায় যোগদান করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের উন্নয়নবার্তা জনসাধারণের মাঝে তুলে ধরছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের পেশাজীবী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণসহ নৌকার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, রাজবাড়ী-২ আসনে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারী অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্ব›দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন জিল্লুল হাকিম। এর আগে ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নাসিরুল হক সাবুকে(ধানের শীষ) ৫৯ হাজার ১৬২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন জিল্লুল হাকিম। ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী (১৪ দলীয় মহাজোট সমর্থিত) জিল্লুল হাকিম ১ লাখ ৯১হাজার ৯৬১ ভোট পান।
অপরদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির নাসিরুল হক সাবু পান ১ লাখ ৩২ হাজার ৭৯৯ ভোট। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জিল্লুল হাকিম নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। এছাড়া এ আসনে ১৯৯১ সালে জামায়াতে ইসলামীর ডাঃ একেএম আসজাদ, ১৯৮৮ সালে জাসদের মোসলেম উদ্দিন মোমেন, ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির নাজির হোসেন নিলু চৌধুরী, ১৯৭৯ সালে জাসদের মোঃ আব্দুল মতিন মিয়া ও ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের খন্দকার নুরুল ইসলাম জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!