শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৭ অপরাহ্ন
Logo
সংবাদ শিরোনাম ::
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে আইসোলেশন মেয়াদ অর্ধেক করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ডেল্টা ও বিটার তুলনায় তিন গুণের বেশী পুনঃ সংক্রমন ঘটাতে পারে : গবেষণা প্রতিবেদন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে এক বন্দুকধারী গ্রেফতার শান্তি চুক্তির পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে কলম্বিয়া সফর জাতিসংঘ মহাসচিব সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানগণের সাক্ষাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রিয়ায় লকডাউন করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে নতুন করে ১০ হাজার ৩০২ জন করোনায় আক্রান্ত নভেম্বর মাসজুড়ে করাঞ্চলে কর মেলার সেবা পাবেন করদাতারা ঔপনিবেশিক আমলের ফৌজদারী কার্যবিধি যুগোপযোগী হচ্ছে

কসবামাজাইলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৩টি মামলা

  • আপডেট সময় বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৭

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের শান্তিখোলা ও দীঘলহাটে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বসত বাড়িতে লুটপাট-অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনায় দ্রুত বিচার এবং বিস্ফোরক আইনসহ ৩টি মামলা হয়েছে।
গতকাল ২৪শে জানুয়ারী কসবামাজাইল ইউনিয়নের গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী জজ আলী বিশ্বাসের ভাতিজা শান্তিখোলা গ্রামের আমোদ আলী বিশ্বাসের ছেলে জাকির হোসেন বিশ্বাস, দীঘলহাট গ্রামের মৃত প্রদ্যুৎ কুমার দত্তের ছেলে পল্লব কুমার দত্ত ও একই গ্রামের শামসুদ্দিন মন্ডলের ছেলে মুকুল মন্ডল বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন।
মামলাগুলোর মধ্যে ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুজ্জামানের পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে দুটি ও জজ আলী বিশ্বাসের লোকজনের বিরুদ্ধে ১টি মামলা করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পল্লব কুমার দত্তের মামলা সুত্রে জানাযায়, গত ২২শে জানুয়ারী বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পূর্ব বিরোধের জের ধরে অর্ধশতাধিক লোক দীঘলহাট গ্রামের পল্লব কুমার দত্তের বাড়ীতে প্রবেশ করে ২টি বসত ঘরে প্রবেশ করে নগদ ১লক্ষ টাকা, ল্যাপটপ, স্বর্ণের গহনা, কালার টেলিভিশন লুটপাট করাসহ ৩টি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে প্রায় ২০লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে জানা যায়। এরপর তারা ফেরার পথে পল্লব কুমার দত্তের চাচা মহাদেব দত্তের বাড়ীর ২টি টিনের ঘরের বেড়া কুপিয়ে ভাংচর করে।
এ ঘটনায় পল্লব কুমার দত্ত বাদী হয়ে পাংশা থানায় ৪০জনের নামে ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ৩(এ)/৬ তৎসহ ১৪৭/১৪৮/৪৪৭/৪৪৮/৩৮৫/৩৮০/৪২৭/৪৩৬/৫০৬(২) পেনাল কোর্ড ধারায় মামলা দায়ের করেন। পাংশা থানার মামলা নং-১৩। আসামীরা হলো ঃ দীঘলহাট গ্রামের সেকেন মন্ডল, আনোয়ার হোসেন, নুরুল্লাহ বিশ্বাস, কাশেম বিশ্বাস, আতিকুল, সাবু, তরুন মন্ডল, ভাদু মন্ডল, মকিম মন্ডল, আকমল মন্ডল, জাকির মন্ডল, মোজান, আজো, সাঈদ মন্ডল, ফারুক মন্ডল, উজির মন্ডল, রাজা মন্ডল, জয়ধর মন্ডল, কামরুল মন্ডল, শরিফুল মন্ডল, সিদ্দিক মন্ডল, মোক্তার মন্ডল, নাজিম মন্ডল, ছান্দু মন্ডল, আন্দু মন্ডল, ভালেক মন্ডল, কালাম মন্ডল, ছাকেন মন্ডল, নজরুল ইসলাম, আশরাফুল মন্ডল, আলাউদ্দিন মন্ডল, জলিল মন্ডল, উজ্জল, মাজেদুল, মনিরুল, আশাই মন্ডল, আইয়ুব মন্ডল, আনিস মন্ডল, রফিকুল ইসলাম ও বিল্লাল শেখ।
অপরদিকে জজ আলী বিশ্বাসের ভাতিজা জাকির হোসেন বিশ্বাসের দায়েরকৃত মামলা সুত্রে জানাযায়, গত ২২শে জানুয়ারী দুপুর ২টার দিকে ডেমনামারার আনোয়ার হোসেন কাশেম বিশ্বাস, সুজন বিশ্বাস, আতিকুল, নটাভাঙ্গার ইদ্রিস খান, ইমরুল, মনিরুল, মির্জান সরদার, সাকিব শেখ, নিয়াতম খান, সেলিম শেখ, দীঘলহাটের আশরাফুল মন্ডল, মনিরুল, সিদ্দিক মন্ডল, তরুন মন্ডল, জাকির মন্ডল, মাজেদুল, আশাই মন্ডল, বিল্লাল, মান্নান মন্ডল, রফিকুল ইসলাম শেখ, কসবামাজাইলের কালাম মন্ডল ও ভাতশালা গ্রামের কেসমত খানসহ অজ্ঞাত ২০/২৫জন দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও বন্দুক নিয়ে বোমা ও ককটেল ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে জজ আলী বিশ্বাসের বাড়ীতে প্রবেশ করে। এরপর তারা জজ আলীর নাম ধরে গালিগালাজ শুরু করলে তার ভাতিজা ইলিয়াস মুখ সংযত হয়ে কথা বলতে বললে তারা তাকে পায়ে ও কানে গুলি করে। এরপর সে মাটিতে লুটে পড়লে উল্লেখিতরা তাকে এলোপাতারীভাবে কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইদহ ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে উল্লেখিতদের আসামী করে পাংশা থানায় আইন শৃঙ্খলা বিঘœকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার)২০০২ (সংশোধনী/০৯) এর ৪/৫ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। পাংশা থানার মামলা নং-১৪।
এছাড়া মুকুল মন্ডলের মামলা সুত্রে জানাযায়, জজ আলী বিশ্বাসের দুই ছেলেসহ একদল লোক পূর্ব বিরোধের জেরে তার চাচাতো ভাই কাশেম মন্ডলের ছেলে আল আমিনকে গত ২২শে জানুয়ারী সকাল ১০টার দিকে পুকুর পাড়ে একা পেয়ে কুপিয়ে জখম করে।
এ ঘটনায় মুকুল মন্ডল বাদী হয়ে ১৪৭/১৪৮/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬ দঃ বিঃ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। পাংশা থানার মামলা নং-১৫। আসামীরা হলো ঃ দীঘলহাট গ্রামের শামসু মুন্সি, বাবুল মন্ডল, লাভলু মন্ডল, কুদ্দুস মন্ডল, শান্তিখোলা গ্রামের জজ আলী বিশ্বাসের ছেলে মতিয়ার বিশ্বাস ও বদিয়ার বিশ্বাস, লোকমান বিশ্বাস, তুহিন বিশ্বাস, জাকির বিশ্বাস, নজির বিশ্বাস, ফিরোজ, বড় খোলা গ্রামের দিপু, শান্তিখোলা গ্রামের মকলেছ, ইউনুস মোল্লা ও লাল্টু মোল্লা।
উল্লেখ্য, গত ২০শে জানুয়ারী নাদুরিয়া ঘাটে লটাভাঙ্গা ও শান্তিখোলা গ্রামের ছেলেদের মধ্যে গোলযোগ হয়। ওই ঘটনার জের ধরে গত ৩দিন ধরে বিভিন্ন সময়ে পরস্পর দু’গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষ, মারধর, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। গত ২১শে জানুয়ারী বিকেলে সংঘর্ষ বাঁধলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং রাতে পাংশা থানা পুলিশ কসবামাজাইল ইউপির ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার খায়রুল ইসলাম ও লটাভাঙ্গা গ্রামের বাবলু নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে। তবে রাতেই ইউপি মেম্বার খায়রুল ইসলামকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২২শে জানুয়ারী সকালে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জজ আলী বিশ্বাস ও বিজয়ী দলীয় চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামানের পক্ষের লোকজনের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে দীঘলহাটের কাশেম মন্ডলের ছেলে আলামীন এবং জয়নাল মেম্বারের পিতা তোয়াক্কেল আহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামানের সমর্থিত লোকজন ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে গত ইউপি নির্বাচনে পরাজিত বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জজ আলী বিশ্বাসের শান্তিখোলা গ্রামের বাড়িতে হামলা করে। এতে উভয় গ্র“পের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
error: আপনি নিউজ চুরি করছেন, চুরি করতে পারবেন না !!!!!!